জুলুমের অভিযোগ তো ছিলই, এ বারে বাংলাদেশের মৌলবাদী ইসলামি দল জামাতে ইসলামির সঙ্গে তৃণমূলের হাত মেলানোর অভিযোগ নিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে গেল বিজেপি। তাদের অভিযোগ মৌলবাদী গোষ্ঠী, চোরাচালানকারী ও সন্ত্রাসবাদী শক্তির সঙ্গে তৃণমূল আশ্রিত সমাজবিরোধীরা মিলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উপরে হামলা চালাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট তলবের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
লোকসভা নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কর্মীদের উপর তৃণমূলের আক্রমণকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যে পুরসভা ও বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক জমি দখলে কোনও রকম আপসে রাজি নয় বিজেপি। সে কারণে কেন্দ্রীয় সরকারকে সামিল করেই মমতার উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সপ্তাহ দেড়েক আগে সন্দেশখালিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় দল ঘুরে আসার পর আজ রাজনাথ সিংহকে রিপোর্ট দেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহের বাড়ি বা দলের সদর দফতরেও এই রিপোর্ট পেশ করা যেত। কিন্তু নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘরে গিয়ে রাজনাথের কাছে এই রিপোর্ট পেশ করে বিজেপি বুঝিয়ে দিল, মমতার উপর চাপ বাড়াতে মোদী সরকারকেও তারা ব্যবহার করতে চাইছে।
বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের জামাতে ইসলামির মতো জঙ্গি-পৃষ্ঠপোষক মৌলবাদী সংগঠনের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের যোগসাজস নতুন ঘটনা নয়। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, রাজশাহি বা বগুড়ায় পুলিশ ও সেনা বাহিনীর অভিযানের পরে জামাতের বহু কর্মী এ রাজ্যে পালিয়ে এসে তৃণমূল নেতাদের আশ্রয়ে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় লুকিয়ে থেকেছে। পঞ্চায়েত ও লোকসভার ভোটে তারা তৃণমূলের হয়ে গুন্ডামি ও সন্ত্রাস চালিয়েছে। বিজেপি নেতারা বলছেন, ইউপিএ জমানায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য থাকা সত্ত্বেও ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেস সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে বিএসএফ-কে কার্যত অকেজো করে রেখে বাংলাদেশ থেকে এই সব শক্তিকে পালিয়ে আসতে সাহায্য করা হয়েছে। বিজেপি বলছে, কট্টর পাকিস্তানপন্থী ও ভারত-বিদ্বেষী একটি মৌলবাদী দল জামাতে ইসলামি। আইএসআইয়ের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। তৃণমূলের মদতে গা ঢাকা দিয়ে থাকা সেই জামাতের কর্মীরা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাও ছড়াচ্ছে। এখন বিজেপির শক্তি বাড়ায় তৃণমূল এই মৌলবাদী শক্তিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে বিষয়টি নিছক দু’দলের সংঘর্ষ নয়, দেশের নিরাপত্তার জন্যও উদ্বেগজনক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া স্মারকলিপিতেও এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন বিজেপি নেতারা।
ভোট প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে অনুপ্রবেশের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। মমতার বিরুদ্ধে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির অভিযোগও করছিলেন। এখন মোদী ক্ষমতায় আসার পর সামনের ভোটগুলিকে মাথায় রেখে বিজেপি বিষয়টি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy