Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের বিরুদ্ধে বদলার অভিযোগ বিজেপি-র

পথ অবরোধ করে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর গাড়ি আটকে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি-র বিরুদ্ধে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি-র দফতর ও কর্মীদের উপরে হামলার পাল্টা অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মন্ত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছিল বিজেপি। তেমনই তৃণমূলও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জখম বিজেপি কর্মী নিমাই সরকার। ছবি: শৌভিক দে।

জখম বিজেপি কর্মী নিমাই সরকার। ছবি: শৌভিক দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৭
Share: Save:

পথ অবরোধ করে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর গাড়ি আটকে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি-র বিরুদ্ধে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি-র দফতর ও কর্মীদের উপরে হামলার পাল্টা অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মন্ত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছিল বিজেপি। তেমনই তৃণমূলও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিজেপি-র দাবি, বৃহস্পতিবার শ্যামনগরের বাসুদেবপুরে তাদের কর্মীদের অবরোধে মন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবুর গাড়ি আটকে পড়েছিল ঠিকই, কিন্তু মন্ত্রীকে আক্রমণ করা হয়নি। বরং, মন্ত্রীকে আক্রমণের ‘মিথ্যা’ অভিযোগ তুলে ‘হিংসাশ্রয়ী বদলা’ নিচ্ছে রাজ্যের শাসক দলই। বিজেপি-র সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য শুক্রবার বিধানসভায় শপথ গ্রহণের পর আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বাড়ি যান। শমীকবাবু বলেন, “আমাদের কর্মীরা মন্ত্রীকে আক্রমণ করেননি। বিজেপি হামলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আর মানুষ সত্যটা জানেন।” শমীকবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “তৃণমূলই আমাদের কর্মীদের আক্রমণ করেছে।” বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়কের অভিযোগ, ব্যারাকপুরে বিজেপি-র দলীয় দফতর পুড়িয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বাগুইআটি ও রাজারহাট-গোপালপুর অঞ্চলে বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে হামলাও করেছে তারা। তাতে বিজেপি-র চার কর্মী জখম এবং অনেকে ঘরছাড়া হয়েছেন। শমীকবাবুর ব্যাখ্যা, “তৃণমূল রাজনৈতিক দল নয়। আতঙ্কগ্রস্ত এবং হতাশায় ভোগা একটা গোষ্ঠী। জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে বুঝেই তারা হিংসার আশ্রয় নিচ্ছে।” বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “বিজেপি-র উত্থান তৃণমূল গুন্ডাবাহিনী দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ওদের এই চেষ্টা সফল হবে না।”

বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ বাগুইআটির রঘুনাথপুরে দলীয় কার্যালয়ে তাঁদের কর্মীদের উপরে বন্দুক, ছুরি ও লোহার রড নিয়ে চড়াও হন জনা পঁচিশ স্থানীয় তৃণমূল কর্মী। কার্যালয়ে ভাঙচুরও করেন তাঁরা। ওই ঘটনায় গৌতম দাস, অরুণ ভদ্র এবং নিমাই সরকার নামে তিন দলীয় কর্মী জখম হয়েছেন বলে বিজেপি-র দাবি। দলীয় নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, রঘুনাথপুরের পরে জগৎপুরের কার্যালয়েও ভাঙচুর চালা। বাগুইআটি থানায় অভিযোগ করেছে বিজেপি।

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা আইএনটিটিউসি-র সহ সভাপতি বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। বিজেপি-র কার্যালয়ে ভাঙচুর হয়েছে তাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে। ওরাই আমাদের কর্মীদের মারধর করেছে। আমরা বিজেপি-র কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছি।” বিধাননগর কমিশনারেটের এসিপি অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্দিষ্ট নামে অভিযোগ হয়নি। তাই এই ঘটনায় যুক্তদের চিহ্নিতর চেষ্টা চলছে।”

দলীয় কার্যালয় এবং কর্মীদের উপরে তৃণমূলের হামলার প্রতিবাদে এ দিন বিধাননগর কমিশনারেটে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি দেয় বিজেপি। দলের রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারি সেখানে ছিলেন।

বৃহস্পতিবার রাতে ব্যারাকপুর-বারাসাত রোডের পাশে দেবপুকুরে বিজেপি-র একটি কার্যালয়ে আগুন লাগে। টিটাগড় থানার টহলদারি গাড়ি সে সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ কর্মীরাই দমকলে খবর দেন। দমকল পৌঁছনোর আগেই কার্যালয়টি পুড়ে যায়। ওই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ টিটাগড় থানায় করেছে বিজেপি। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ দিন উত্তরপাড়াতেও বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের হাতাহাতি হয়েছে। অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ, বোনাস বাড়ানো-সহ কিছু দাবিতে চার দিন আন্দোলন করছিলেন উত্তরপাড়া পুরসভার ঠিকাদারের অধীনে থাকা সাফাই-কর্মীরা। সেখানে কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। দু’পক্ষই পুলিশের কাছে মারধরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc bjp purnendu basu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE