দু’টি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দু’রকম তথ্য দিয়েছেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। চার্জশিট পেশ করার আগে সেই জোড়া বয়ান নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন তদন্তকারীরা। তাই সুদীপ্তকে আবার জেরা করতে চলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। একটি সূত্রের খবর, চলতি মাসেই তদন্তকারী অফিসারেরা জেলে গিয়ে সারদা-প্রধানকে জেরা করবেন।
সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি সব চেয়ে লাভবান হয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট বিশেশ ভাবে তা জানাতে বলেছে তদন্তকারী সংস্থাকে। ২০১৪ সালের মে মাসে সুদীপ্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করেন ইডি-র তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে, সারদা-প্রধান সেই সময় তাঁর বয়ানে কিন্তু কোনও রাজনৈতিক নেতা কিংবা অন্য কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি।
যদিও তদন্ত যত এগিয়েছে, সিবিআইয়ের মতোই একের পর এক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম জানতে পেরেছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। কিন্তু প্রথম দফার জিজ্ঞাসাবাদে ইডি-র কাছে দেওয়া সুদীপ্তের বয়ানের সঙ্গে তার কোনও মিল নেই। যেমন, পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকে গত বছরের শেষে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। কিন্তু ইডি-র তদন্তকারীরা বলেছিলেন, মদনবাবু জিজ্ঞাসাবাদ করার মতো কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য তাঁদের কাছে নেই। ইডি-র তদন্তকারীদের এই দাবির মূলে ছিল সুদীপ্তের সেই বয়ান।
যদিও সারদা-প্রধানের পরিবারের লোকজন, সারদা-কর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে এবং কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদে মদনবাবুর নাম উঠে এসেছে। তদন্তকারীদের একাংশের মতে, গত বছরের গোড়ায় সুদীপ্ত ইডি-কে বয়ান দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি পরিবহণমন্ত্রী কেন, কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তিরই ভূমিকার কথা খোলসা করে বলেননি। অথচ পরে সিবিআইয়ের জেরার মুখে সুদীপ্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের উল্লেখ করেছিলেন। তার ভিত্তিতে বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ এমনকী গ্রেফতারও করা হয়েছে।
ইডি সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটি মন্দিরে সারদার অনুদানকে কেন্দ্র করে পরিবহণমন্ত্রীর ভূমিকার কথা সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে। সেই সূত্র ধরে ইডি ওই মন্দির-কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইতিমধ্যেই।
সিবিআই এবং ইডি, এই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে পাওয়া তথ্যে বেশ কিছুটা ফারাক দেখা দিয়েছে। তাই রাজনৈতিক নেতা থেকে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির ভূমিকা সম্পর্কে নির্দিষ্ট ভাবে সুদীপ্তের বক্তব্য জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। ইডি-র এক অফিসার জানান, চার্জশিট পেশের প্রস্তুতি চলছে। তবে তার আগে তথ্যের বিভিন্ন ফাঁক ভরাট করার জন্য নতুন করে সারদা-প্রধানের পূর্ণাঙ্গ বয়ান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাঁকে আবার জেরা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীদের আশা, গত মে মাসের পরে সুদীপ্ত অন্য একটি কেন্দ্রীয় সংস্থার সামনে মুখ খুলেছিলেন। ফলে এ বার সুদীপ্তের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলতেও পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy