মুখ্যমন্ত্রীকে অভিবাদন দীপালি সাহার। সোমবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে। —নিজস্ব চিত্র
বুথে ঢুকে ভাঙচুর এবং ভোট-কর্মীদের মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক দীপালি সাহার জামিনের জন্য রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কী ভাবে সওয়াল করলেন, তা নিয়ে বিধানসভায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল সরকারকে। আইন ও বিচার দফতরের বাজেটে অংশ নিয়েই সোমবার এই প্রশ্নকে সরকারকে চেপে ধরলেন বিরোধী বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা। আইন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন, এ ব্যাপারে সরকারের কিছু করণীয় নেই। এই জবাবে অসন্তুষ্ট বিরোধীরা নীতিগত কারণে বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদবাবুর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
লোকসভা ভোটের দিন বুথে ঢুকে গোলমালের ঘটনায় অভিযুক্ত বাঁকুড়ার সোনামুখীর বিধায়ক দীপালিদেবীকে মাসদেড়েক খুঁজেই পায়নি পুলিশ! শেষ পর্যন্ত গত ২৩ জুন তিনি বিষ্ণুপুরের এসিজেএম আদালতে হাজিরা আত্মসমর্পণ করে সঙ্গে সঙ্গেই জামিন পান। তাঁর জামিনের জন্য আইনজীবী হিসাবে আদালতে সওয়াল করেছিলেন মন্ত্রী শ্যামবাবু। ওই ঘটনার জের টেনেই এ দিন বাজেট-বিতর্কের সময় কংগ্রেস বিধায়ক আখরুজ্জামান প্রশ্ন তোলেন, যাবতীয় রীতিনীতি বিসর্জন দিয়ে এক জন মন্ত্রী কী ভাবে এই কাজ করলেন? তাঁর বক্তব্য, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছেন সরকারি কর্মীরাই। এমন মামলায় সরকারের বিরুদ্ধে সরকারেরই এক মন্ত্রী সওয়াল করেন কী ভাবে? একই সুরে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র প্রশ্ন তোলেন, এমন একটি গুরুতর মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসাবে কেউ দাঁড়ালেনই না! অথচ শাসক দলের বিধায়কের পক্ষে কালো কোট পরে মন্ত্রী দাঁড়িয়ে পড়লেন! এই বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা জানতে চান বিরোধী দলনেতা।
শ্যামবাবু অবশ্য বাজেট-বিতর্কের সময় উপস্থিত ছিলেন না। জবাবি ভাষণে আইন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “আইনজীবী ভুল করলে সেটা বার কাউন্সিলের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। তারাই ঠিক করে অভিযুক্ত আইনজীবী দোষী কি না। তাঁর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকারও বার কাউন্সিলের। এ ব্যাপারে সরকার হস্তক্ষেপ করে না।” মন্ত্রীর এই জবাবের পরে বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, শ্যামবাবু সাধারণ আইনজীবী নন। তাঁর ব্যাপারে মন্ত্রিসভাকেই তো সিদ্ধান্ত নিতে হবে! বাজেটের পরে বিধানসভা চত্বরে সূর্যবাবুর বক্তব্য, “মন্ত্রীর জবাবে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা মনে করি, নীতিগত কারণেই ওই মন্ত্রীর (শ্যামবাবু) পদত্যাগ করা উচিত।”
হাইকোর্টের বিচারপতিদের নববর্ষে সরকারের তরফে উপহার ও কেক পাঠানো হয়েছে কি না, তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। প্রধান বিচারপতির চিকিৎসা বিদেশে করানোর জন্য কত খরচ হয়েছে, জানতে চান তা-ও। আইন প্রতিমন্ত্রী জবাব দেন, বিচারপতিদের প্রতি ‘সৌজন্য’ দেখানো নিয়ে এ ভাবে প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়। পরে সূর্যবাবু অবশ্য অধিবেশন কক্ষের বাইরে ফের বলেন, “বিচারপতিদের কোনও কিছুই পাঠানো যায় না! নৈতিকতা তা-ই বলে। ওঁদের ধারণা আলাদা হতে পারে। তবে সৌজন্যের নামে নৈতিকতাকে লঙ্ঘন করা উচিত নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy