Advertisement
E-Paper

ধানের পোকা নিয়ন্ত্রণে দেশের সেরা চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্র

ধান খেতে পোকা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উৎকর্ষতায় দেশের সেরা হল চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্র। সম্প্রতি হায়দরাবাদে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ডিরেক্টরেট অব রাইস রিসার্চ’ নানা রাজ্যে সরকারি উদ্যোগে ধান চাষ নিয়ে এক পর্যালোচনা করে। সেই নিরিখে ধানের পোকা নিয়ন্ত্রণে উৎকর্ষতায় সেরা হয়েছে চুঁচুড়ার সংস্থাটি। এ রাজ্য ওই পুরস্কার এ বারই প্রথম পেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪৩
পোকা নিয়ন্ত্রণে আলোর ফাঁদ।—নিজস্ব চিত্র।

পোকা নিয়ন্ত্রণে আলোর ফাঁদ।—নিজস্ব চিত্র।

ধান খেতে পোকা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উৎকর্ষতায় দেশের সেরা হল চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্র। সম্প্রতি হায়দরাবাদে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ডিরেক্টরেট অব রাইস রিসার্চ’ নানা রাজ্যে সরকারি উদ্যোগে ধান চাষ নিয়ে এক পর্যালোচনা করে। সেই নিরিখে ধানের পোকা নিয়ন্ত্রণে উৎকর্ষতায় সেরা হয়েছে চুঁচুড়ার সংস্থাটি। এ রাজ্য ওই পুরস্কার এ বারই প্রথম পেল।

চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের সহকারি কীটতত্ত্ববিদ সীতেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের চাষিদের উন্নতি সাধনই আমাদের মূল লক্ষ্য। সেই কাজ স্বীকৃতি পেয়েছে এটা আনন্দদায়ক।’’

হুগলি, বর্ধমান-সহ এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয়। কিন্তু আবহাওয়া, রোগপোকার আক্রমণ ইত্যাদি নানা কারণে অনেক জায়গাতেই গুরুত্বপূর্ণ এই চাষ মার খায়। সেই কারণে সুসংহত উপায়ে রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। কৃষি-বিজ্ঞানীরা মনে করেন, অনেক ক্ষেত্রেই চাষিরা সঠিক কীটনাশক বাছতে পারেন না বা তা বেছে কিনলেও সঠিক মাত্রায় তা প্রয়োগ করতে পারেন না। ফলে, চাষে ক্ষতি সামলানো যায় না। তাই ধান চাষের উৎকর্ষতা বাড়াতে এবং খেতে রোগপোকার আক্রমণ সামলাতে সীতেশবাবু ছাড়াও চুঁচুড়ার কেন্দ্রটির কীটতত্ত্ববিদ সন্তোষকুমার রায়, চিরশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়রা বাঁকুড়া, হুগলি, নদিয়া, কোচবিহারের বিভিন্ন গ্রামে গত বছরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। তাঁরা জানান, দুই বা ততোধিক কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক মিশিয়ে খেতে ব্যবহার করার পরে দেখা হয়েছে, কোনওটির গুণাগুণ নষ্ট হয়েছে কি না। নতুন ধরনের কীটনাশকও ব্যবহার করা হয়েছে। মাজরা পোকা, শোষক পোকা, পাতামাছি, পাতামোড়া, গন্ধিপোকা এই সব শত্রুপোকার আক্রমণ কখন হচ্ছে, কী ভাবে তা ফসলের ক্ষতি করছে, সে সব দেখা হয়েছে। এমনকী, কীটশত্রুদের আক্রমণের মাত্রাও মেপে দেখা হয়েছে।

এ সবের পরেই ওই কেন্দ্রের কৃষি-বিজ্ঞানীরা চাষিদের কীটনাশক ব্যবহারে পরামর্শ দেন। তা ছাড়াও, আলোর ফাঁদ (পোকাদের আকর্ষিত করতে বিশেষ ভাবে তৈরি বাল্ব লাগানো ফাঁদ) এবং ফেরোমন ফাঁদ (মাজরা পোকা ধরতে রাসায়নিক রাখা ফাঁদ) ব্যবহার করে কী করে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ সামলানো যায়, সে পথও চাষিদের বাতলেছেন কীটতত্ত্ববিদেরা। এক কীটতত্ত্ববিদের দাবি, “কোচবিহারে বেশ কিছু জায়গায় দোয়ে পোকার আক্রমণে গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। আমরা প্রতিরোধের রাস্তা বাতলে দেওয়ায় চাষিরা উপকৃত হন।’’

সংশ্লিষ্ট চাষিরাও মেনে নিয়েছেন চুঁচুড়ার কেন্দ্রটির কীটতত্ত্ববিদদের পরামর্শে তাঁরা উপকৃত হয়েছেন। হুগলির ধানচাষি মানবেন্দ্র ঘোষের জমিতে ওই পরীক্ষা হয়েছিল। মানবেন্দ্রবাবুর কথায়, ‘‘চাষ করতে গিয়ে যে সমস্ত ভুল হচ্ছিল, বিজ্ঞানীরা তা হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন। উপকৃত হয়েছি।’’ একই কথা শোনালেন বৈদ্যবাটি চকের বাসিন্দা চন্দ্রশেখর ঘোষও। বৈদ্যবাটির মাটিপাড়ার চাষি কেদারনাথ ঘোষের মতে, অনেক চাষিরই ধারণা পোকা হলেই কীটনাশক ছড়াতে হবে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা দেখিয়ে দিয়েছেন, জমিতে বহু বন্ধুপোকাও থাকে। ফলে, নির্দিষ্ট পরিমাণ শত্রুপোকা না হলে ঘাবড়ানোর দরকার হয় না।

chinsurah paddy pest best in nation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy