Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নিলামেই বরাত, অবশেষে সিদ্ধান্ত বন্দরে

শেষ পর্যন্ত দরপত্র চেয়ে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসকারী সংস্থা নির্বাচন করার সিদ্ধান্তই নিতে হল কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অছি পরিষদকে। জাহাজ মন্ত্রকের কড়া নির্দেশের পরে শুক্রবার অছি পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, এই ব্যবস্থায় পণ্য খালাসের খরচ যেমন কমবে, আয়ও বাড়বে বন্দরের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৪
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত দরপত্র চেয়ে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসকারী সংস্থা নির্বাচন করার সিদ্ধান্তই নিতে হল কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অছি পরিষদকে। জাহাজ মন্ত্রকের কড়া নির্দেশের পরে শুক্রবার অছি পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, এই ব্যবস্থায় পণ্য খালাসের খরচ যেমন কমবে, আয়ও বাড়বে বন্দরের।

হলদিয়া ও কলকাতা বন্দরে পণ্য খালাস নিয়ে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ জমা পড়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। দরপত্র ছাড়াই কয়েকটি সংস্থা একচেটিয়া ভাবে পণ্য খালাসের বরাত নিয়ে চলেছিল বছরের পর বছর। তাদের দাপটে দরপত্রে বরাত পাওয়া পণ্য খালাসকারী সংস্থা এবিজি বছর দুই আগে হলদিয়া থেকে ব্যবসা গুটোতে বাধ্য হয় বলে অভিযোগ। এর পর থেকেই কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসের বরাতে স্বচ্ছতা আনার দাবি জোরালো হয়। ২০১৩ সালের জুন মাসে পণ্য খালাসকারী সংস্থাগুলির থেকে টন প্রতি ২৫ টাকা রয়্যালটি নেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। সে বিষয়ে মন্ত্রকের অনুমোদনও নেওয়া হয়। অভিযোগ, পণ্য খালাসকারী সংস্থাগুলির চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত রয়্যালটি নেওয়া থেকে পিছিয়ে আসে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার পরে ফের হলদিয়া ও কলকাতা বন্দরে পণ্য খালাস নিয়ে নড়েচড়ে বসে জাহাজ মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এ নিয়ে ১১টি প্রশ্নের জবাবদিহি চাওয়া হয় বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে। তিন দিন হলদিয়ায় থেকে সিবিআইয়ের একটি দল বন্দরের কাজকর্ম নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট দেয়। এর পরেই পোর্ট ট্রাস্টকে পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে নিলাম-ব্যবস্থা গ্রহণ করার স্পষ্ট নির্দেশ দেন জাহাজমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। তার পর এ দিন অছি পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার থেকে দরপত্র চেয়েই পণ্য খালাসকারী সংস্থা নির্বাচন করা হবে।

তবে এ দিনের বৈঠকে অছি পরিষদের বেশ কয়েক জন সদস্য এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকী, যে জাহাজ মন্ত্রকের নির্দেশে এই প্রস্তাব কার্যকর হতে চলেছে, তাদের প্রতিনিধি সি বি সিংহ পর্যন্ত এই প্রস্তাবকে ‘অবাস্তব’ বলে নাকচ করার দাবি জানান। কিন্তু বন্দরের চেয়ারম্যান রাজপাল সিংহ কাহালোঁ সদস্যদের জানান, প্রস্তাবটি খোদ জাহাজ মন্ত্রকের। সুতরাং তারা যা চায়, সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া উচিত। তবে বিরোধীদের যুক্তিগুলিও মন্ত্রককে জানানো হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। বৈঠকের পরে চেয়ারম্যান বলেন, “অছি পরিষদ পণ্য খালাসে দরপত্র চাওয়ার সিদ্ধান্তই নিয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই দরপত্র চাওয়া হবে।”

কী রয়েছে নতুন প্রস্তাবে? বন্দর সূত্রের খবর, এখন থেকে পণ্য খালাসের জন্য টন প্রতি ১১৯.৪৮ টাকা দর বেঁধে দিয়েছে অছি পরিষদ। যার অর্থ, বন্দর ব্যবহারকারীরা আমদানি-রফতানির জন্য খালাসকারীদের প্রতি টনে সর্বোচ্চ ১১৯.৪৮ টাকাই দেবে। এখন এই বাবদ অন্তত ১৭৫-১৮০ টাকা দিতে হয়। ফলে প্রতি টনে পণ্য ওঠানো-নামানোর খরচ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কমবে। কেবল তা-ই নয়, বন্দর ঠিক করে দিয়েছে প্রতি টন পণ্য খালাসে বন্দরকে অন্তত ১৩ টাকা রয়্যালটি দিতে বাধ্য থাকবে বরাত পাওয়া সংস্থা। বন্দর কর্তারা জানান, দরপত্রে যারা সব চেয়ে বেশি রয়্যালটি দিতে সম্মত হবে, সেই সংস্থাকেই বরাত দেওয়া হবে। তবে এমন নয় যে একটি সংস্থাই পণ্য খালাসের যাবতীয় বরাত পাবে। যে সব সংস্থা দরপত্রে ওঠা সর্বোচ্চ রয়্যালটি দিতে চাইবে, বন্দর কতৃর্পক্ষ তাদের সবাইকেই পণ্য খালাসের ছাড়পত্র দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkata port haldia port aucktion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE