সিউড়ির অদূরে পড়েই রয়েছে সেই জমি। —নিজস্ব চিত্র
আগে জমি দিয়েও মেডিক্যাল কলেজ পায়নি জেলার সদর। পরিবর্তে জেলার একমাত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য রামপুরহাটকেই বেছে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, জমি হস্তান্তর না হলেও সিউড়ির অদূরে নগরীর কাছে মেডিক্যাল কলেজের জন্য চিহ্নিত ওই জমির ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে না পারলেও ওই জমিতে আগামী দিনে উন্নয়নমূলক প্রকল্প গড়ে তোলার আশ্বাসই দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমে মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণে সবার প্রথম উদ্যোগী হন সাংসদ শতাব্দী রায়। ২০১২ সালের প্রথম দিকে শতাব্দী সিউড়িতে মেডিক্যাল কলেজ গড়ার প্রস্তাব দিতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে কাছে জমির জন্য তদ্বির করেন। সিউড়ির অদূরে নগরীর কাছে একটি ১৮ একর খাসজমি প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করে জেলা ভূমি দফতর। দফতরের তৎকালীন ডিএলআরও শ্যামাশিস রায়ের দাবি, চিহ্নিত জমির প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, মেডিক্যাল কলেজ গড়ার ‘ফান্ডিং’ কে করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাজ্য ভূমি দফতর। ২০১২ সালের শেষের দিকে শেষমেশ ভেস্তেই যায় ওই পরিকল্পনা। এরই মাঝে ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক মুখে রামপুরহাটে দলীয় প্রচারে এসে রামপুরহাটেই মেডিক্যাল কলেজ গড়া হবে বলে ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
সাংসদ শতাব্দী রায়ের বক্তব্য, রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজ গড়া হবে। তাই সিউড়িতে মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলার ব্যপারে আর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়িও জানিয়ে দিয়েছেন, নগরীর ওই জমিতে এখন আর কোনও হাসপাতাল গড়ার পরিকল্পনা দফতরের নেই। সিউড়ির ছবিটা যখন এমন, তখন মুখে হাসি ফুটেছে রামপুরহাটের। যেখানে মেডিক্যাল কলেজ গড়ার বিষয়টি অনেক দূরই এগিয়ে গিয়েছে। সেখানে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য ভবন ও কেন্দ্রের প্রতিনিধিদল একাধিকবার পরিদর্শনে এসেছে। তাঁরা কলেজ গড়ে তোলার জন্য রামপুরহাট সদর হাসপাতাল এবং চকমণ্ডলায় রামপুরহাট ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে খুশিও হয়েছেন। আর তার পরেই রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলেই দাবি রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ ব্রজেশ্বর মজুমদারের। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, দু’জনেরই বক্তব্য, ‘‘রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজ গড়ে ওঠাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে টাকা পেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’
তা হলে নগরীর জমির কী হবে?
জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীর জানাচ্ছেন, নগরীতে যে মেডিক্যাল কলেজ হবে না, এখন তা স্পষ্ট। তবে, ওই ১৮ একর জমি সরকারের। প্রশাসনও সেই জমি কাজে লাগাতেও চায়। সুতরাং ভবিষ্যতে ভাল কোনও কাজের প্রস্তাব আসলে ওই জমি জেলা প্রশাসন দিতেই পারে। অন্য দিকে, জেলার সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর দাবি, নগরীর জমিতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কী ভাবে ওই জমি কাজে লাগানো যায়, তা চিন্তা ভাবনা করে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy