Advertisement
E-Paper

পেঁয়াজে আগুনের আঁচ, রাজ্যকে হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের

পেঁয়াজ-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না এনডিএ সরকারের! ২০০২ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে দেশজুড়ে আকাশছোঁয়া দাম বেড়েছিল পেঁয়াজের। কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল বিজেপিকে। খলনায়ক ছিল দেশে সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ উৎপাদক এলাকা মহারাষ্ট্রের নাসিকে অকালবর্ষণ। এ বারও সেই বিপর্যয় তাড়া করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৪ ০২:৫৩

পেঁয়াজ-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না এনডিএ সরকারের!

২০০২ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে দেশজুড়ে আকাশছোঁয়া দাম বেড়েছিল পেঁয়াজের। কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল বিজেপিকে। খলনায়ক ছিল দেশে সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ উৎপাদক এলাকা মহারাষ্ট্রের নাসিকে অকালবর্ষণ। এ বারও সেই বিপর্যয় তাড়া করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে। তাই পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আগে সমস্ত রাজ্যকে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে আগাম সতর্কতা নেওয়ার অনুরোধ জানাল কেন্দ্র।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে লেখা কেন্দ্রীয় কৃষিসচিব আশিস বহুগুণার ওই চিঠি নবান্নে পৌঁছেছে ১৩ জুন। তাতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজ্য সরকার যেন পদক্ষেপ করে। তার মধ্যে বিদেশে পেঁয়াজ রফতানির উপরে নিয়ন্ত্রণ চালু করার পরামর্শ আছে। আছে সঞ্চয় বাড়ানোর সুপারিশও। ওই চিঠি পাওয়ার সাত দিন পরে, শুক্রবার রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী অরূপ রায় নিজের

ও উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসেন। এর মধ্যেই অবশ্য গত ক’দিনে রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের খুচরো দাম পাঁচ থেকে ছ’টাকা বেড়ে গিয়েছে। ক্রেতারা জানাচ্ছেন, গত মঙ্গলবার যেখানে ১৮ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ মিলেছে, সেখানে এ দিন দোকানিরা একই পরিমাণ পেঁয়াজের দাম হেঁকেছেন ২৪-২৬ টাকা।

কলকাতার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পোস্তার অন্যতম বড় পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শিবু মালাকারও পেঁয়াজের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “কলকাতার অনেক বাজারেই নাসিকের পেঁয়াজ ঢোকা কমে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার আমার গুদামে ছয় লরি নাসিকের পেঁয়াজ ঢুকেছিল। শুক্রবার তা কমে তিনে দাঁড়িয়েছে।” এর প্রভাব পড়েছে পেঁয়াজের দামে। শিবুবাবু জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার যেখানে কেজি-পিছু ১৮ টাকা পাইকারি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই পেঁয়াজের দামই তিন টাকা বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে গত দু’দিনে খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দামের তফাত হয়ে গিয়েছে পাঁচ থেকে ছ’টাকা।

কেন্দ্রের অধীন ‘ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া’ (নাফেড)-র সঙ্গে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের কৃষি দফতর। মূলত কৃষকদের নিয়ে তৈরি জাতীয় স্তরের ওই সমবায় পেঁয়াজ-সহ নানা কৃষিপণ্যের ফলন ও ব্যবসা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি দেখভাল করে। এ দিন নবান্নে কৃষিমন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “আমাদের অফিসারেরা শীঘ্রই দিল্লিতে নাফেডের অফিসে যাবেন। ওদের হস্তক্ষেপে আপাতত আমাদের মোট চাহিদার ১০ শতাংশ পেঁয়াজ যাতে পাওয়া যায়, তার চেষ্টা চলছে। আগামী সোমবার মুখ্যমন্ত্রী টাস্ক ফোর্সের বৈঠক ডেকেছেন। সেখানেই বিস্তারিত আলোচনা হবে।”

অনেক চেষ্টা করেও এ রাজ্যে পেঁয়াজের চাষ বাড়ানো যায়নি। যে পরিমাণ পেঁয়াজ লাগে, তার ৭৫% আসে নাসিক থেকে। মাঝেমধ্যে কর্নাটকের বল্লারি বা বেঙ্গালুরু থেকে পেঁয়াজ আনা হয়। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। কৃষি বিপণন দফতরের হিসেবে, রাজ্যে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে আট লক্ষ টন। তার মধ্যে টেনেটুনে তিন লক্ষ টনের মতো চাষ হয় এ রাজ্যে। ফলে নাসিক থেকে পেঁয়াজ সরবরাহ কমে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই তার খেসারত দিতে হবে সাধারণ মানুষকে। নবান্নের এক কর্তা বলেন, “এ রাজ্যের অনেক ব্যবসায়ী নাসিক থেকে পেঁয়াজ এনে বাংলাদেশে রফতানি করেন। কেন্দ্রের পরামর্শ মেনে ওই সরবরাহে রাশ টানার কথা চলছে।” পরিস্থিতি সামাল দিতে এনডিএ সরকার ইতিমধ্যেই পেঁয়াজে রফতানি কর বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কৃষি বিপণন কর্তা।

onion west bengal price
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy