সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলার জন্য পুলিশ মারছে ধৃত ছিদ্দিক মোল্লাকে। ছবি: সামসুল হুদা।
বেঁওতায় জোড়া খুনের মামলায় আরাবুল-অনুগামী ছিদ্দিক মোল্লাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দিল না। মঙ্গলবার বারুইপুর আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে চুলের মুঠি ধরে চড়থাপ্পড় মেরে পুলিশ তাকে ভ্যানে তুলে দেয়।
এর আগেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করায় বারবার ধাক্কাধাক্কি, টানা-হ্যাঁচড়া করা হয়েছে সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত কুণাল ঘোষকে। ছিদ্দিক তাঁর মতো ‘হাইপ্রোফাইল’ বন্দি নয়। সরাসরি খুনের মামলায় অভিযুক্ত। কিন্তু তার ক্ষেত্রেও সেই কথা বলতে না দেওয়ার পুলিশি সংস্কৃতিরই পুনরাবৃত্তি হল।
পুলিশ সূত্রের দাবি খবর, গত ২৫ অক্টোবর ভাঙড়ের বেঁওতায় রমেশ ঘোষাল খুনের অন্যতম মূল অভিযুক্ত দিলীপ মণ্ডল ওরফে দিল্লেকে জেরা করেই ছিদ্দিকের কথা জানা গিয়েছে। দিল্লে জানিয়েছে, সে দিন রমেশ ঘোষাল ও বাপন মণ্ডল এই দু’জন খুন হওয়ার সময়েই ছিদ্দিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। এর পরই তার খোঁজ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু ছিদ্দিককে ধরতে গেলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা নান্নু হোসেন আপত্তি জানায় বলে পুলিশের দাবি। নান্নু অবশ্য তা অস্বীকার করে বলেন, “আমি পুলিশের কাজে কোনও বাধা দিইনি। আমি জানিনা যে ছিদ্দিক বেঁওতা কাণ্ডে জড়িত। একটি কাজে ভোজেরহাট পার্টি অফিসে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমরা দু’জন মোটরবাইকে চড়ে যাচ্ছিলাম।”
ভাঙড়ের বেঁওতাতে জোড়াখুনের ঘটনায় সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলায় পুলিশের হাতে বেধড়ক মার খেতে হল ধৃতকে। সোমবার সন্ধ্যায় ভাঙড়ের ভোজেরহাট বাজার এলাকা থেকে ছিদ্দিক মোল্লা নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে আদালতের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে। এ দিন ধৃতকে বারুইপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ছিদ্দিকও আরাবুল অনুগামী বলে জানা গিয়েছে। এ দিন পুলিশের ভ্যানে ওঠার সময় ছিদ্দিক বলেন, “আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি তৃণমূল নেতা নান্নু হোসেনের সঙ্গে একটি মোটর বাইকে যাচ্ছিলাম। পুলিশ আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ধরেছে। আমার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে।” এই কথা বলার পরই এক পুলিশ কর্মী তাকে সংবাদ মাধ্যমের সামনেই চুলের মুঠি ধরে কানের মধ্যে চড় থাপ্পর মেরে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়। সে আরও কথা বলতে চাইলে ভ্যানের মধ্যেই তাকে চুলের মুঠো ধরে মুখ চেপে ধরে সংবাদ মাধ্যম থেকে আড়াল করে দেয় পুলিশ। পুলিশ ভ্যানের মধ্যেও তাকে মারধর করা হয়।
আদালত চত্বরে ছিদ্দিক বলে, “আমাকে এই পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতে পুলিশ আরও মারবে। আর পুলিশ আমাকে মারলে আত্মহত্যা করব। দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে দেখা করতে চাই।” ভাঙড়-কাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy