দলের মধ্যে প্রবল বিতর্ক সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত লোকসভা ভোটে ভিন্ রাজ্য থেকে প্রার্থী উড়িয়ে আনতে চাইছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম! দলের মধ্যে বড় অংশের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্ব ব্যারাকপুর আসনের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা কানপুরের নেত্রী সুভাষিণী আলির নাম আলিমুদ্দিনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গেই বনগাঁ আসনে ঠিক হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী দেবেশ দাসের নাম। দমদমের সম্ভাব্য প্রার্থী রাজ্যের আর এক প্রাক্তন মন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত।
ব্যারাকপুরের মতো আসনে সুভাষিণীকে প্রার্থী করার পরিকল্পনা এখনও মেনে নিতে রাজি নয় রাজ্য এবং জেলা সিপিএমের একটা বড় অংশ। এমনকী, কেন্দ্রীয় স্তরে দলের বিভিন্ন গণ সংগঠনের নেতারাও প্রয়াত লক্ষ্মী সহগলের কন্যার নামে আপত্তি তুলতে শুরু করেছেন। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সব সদস্য ওই নামে সম্মত হননি। তবে জেলা সম্পাদক গৌতম দেবের ইচ্ছাই আপাতত জেলা নেতৃত্বের সিলমোহর পেয়েছে। কিন্তু একেবারে ভিন্ রাজ্য থেকে প্রার্থী নিয়ে আসার ব্যাপারে জেলা এবং লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় দলের মধ্যেই এ দিন রাত থেকে যে ভাবে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাতে কাল, বুধবার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এই তালিকা সিলমোহর পাবে কি না, সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিয়ে। দলের একাংশ মনে করছে, ব্যারাকপুরের প্রার্থীর নাম নিয়ে প্রবল বিতর্কের জেরে শেষে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আবার না প্রাক্তন সাংসদ তড়িৎ তোপদারকেই বাছতে হয়!
সিপিএম সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর আসনে কোনও প্রার্থীর নাম নিয়ে দলে ঐকমত্য হচ্ছিল না। তাই সমস্যা মেটাতেই বাইরে থেকে প্রার্থী আনার চেষ্টা চলছে। প্রকাশ ও বৃন্দা কারাটের ঘনিষ্ঠ সুভাষিণীর পক্ষে যুক্তি হল, একে তিনি মহিলা মুখ। তায় ব্যারাকপুরের মতো হিন্দিভাষী অধ্যুষিত অঞ্চলে উপযুক্ত প্রার্থী হতে পারেন। কিন্তু দলেরই রাজ্য কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, “ওই সমস্ত যোগ্যতাসম্পন্ন অন্য প্রার্থী জেলাতেই আছেন। এই ভাবে বাইরে থেকে প্রার্থী নিয়ে এলে এলাকার মানুষের কাছে তাঁকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সমস্যা হবে। আর এটা নজির হয়ে গেলে ভবিষ্যতে আরও অনেকেই অন্য রাজ্যে গিয়ে প্রার্থী হতে চাইবেন।” তবে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের পাল্টা যুক্তি, “পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।”
বনগাঁর জন্য প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল প্রাক্তন স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী কান্তি বিশ্বাসের নাম। কিন্তু তাঁর বয়স বেশি হয়ে যাচ্ছে দেখে পরে আবার দেবেশবাবুর নাম ঠিক হয়েছে। যিনি আদতে কলকাতা জেলার নেতা। গৌতমবাবুর নেতৃত্বে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সাংগঠনিক ভাবে যথেষ্ট সক্রিয়। তা সত্ত্বেও ভোটের সময়ে কেন তাদের বাইরে থেকে প্রার্থী নিয়ে আসতে হচ্ছে, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের সর্ব স্তরেই। জেলার বাকি দুই আসন বসিরহাটে সিপিআইয়ের নুরুল হুদা এবং বারাসতে ফরওয়ার্ড ব্লকের মোর্তাজা হোসেনের নাম আগেই ঠিক হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy