Advertisement
E-Paper

বিশ্বদীপ কোথায়, তল্লাশি সিকিমের জঙ্গলে

এখনও খোঁজ মিলল না সিকিমের ট্রেকিং পথে হারিয়ে যাওয়া যুবক বিশ্বদীপ আচার্যের। পশ্চিম সিকিমের জোংরি-গোয়েচা লা রুটে ট্রেকিং করতে গিয়ে বাখিমে গত শনিবার নিখোঁজ হয়ে যান কলকাতার কসবার বাসিন্দা, সিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২৪
বিশ্বদীপ আচার্য

বিশ্বদীপ আচার্য

এখনও খোঁজ মিলল না সিকিমের ট্রেকিং পথে হারিয়ে যাওয়া যুবক বিশ্বদীপ আচার্যের। পশ্চিম সিকিমের জোংরি-গোয়েচা লা রুটে ট্রেকিং করতে গিয়ে বাখিমে গত শনিবার নিখোঁজ হয়ে যান কলকাতার কসবার বাসিন্দা, সিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়া।

ঘটনার পরে পেরিয়ে গিয়েছে পাঁচ দিন। আর তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকার কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যানে বহু হিংস্র বন্যপ্রাণী রয়েছে। আর পানীয় জল প্রায় নেই। দুয়েকটি জায়গায় জলের উৎস থাকলেও, তা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই এলাকা সম্পর্কে সম্যক অভিজ্ঞতা না থাকলে নির্জলা কাটানোর আশঙ্কা রয়েছে।

হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসুরও বক্তব্য, “জঙ্গলে পথ হারালে পানীয় জল মেলা মুশকিল। এ ছাড়া পাহাড়ি ভালুক, নেকড়ে, চিতাবাঘের মতো জন্তুও রয়েছে। তাই বিষয়টি সত্যিই চিন্তার।” তিনি জানান, ওই এলাকায় পায়ে হেঁটে খোঁজা ছাড়া অন্য গতি নেই। জঙ্গলটি এতই ঘন যে আকাশ পথে উদ্ধার চালানোর কোনও উপায় নেই। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একাধিক অভিজ্ঞ গাইডের উদ্ধারকারী দল জঙ্গলের নানা দিকে পাঠিয়ে তল্লাশি চালাতে হবে। কারণ যত সময় পেরোচ্ছে, আশঙ্কা ততই বাড়ছে।

সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েছে ১৪ জনের একটি উদ্ধারকারী দল। বিশ্বদীপ বা তাঁর সঙ্গের জিনিসপত্রের কোনও চিহ্ন মেলেনি। শুক্রবারও ভোর থেকে শুরু হবে খোঁজ। পাঠানো হবে আরও কিছু অভিজ্ঞ গাইড। ইয়কসামের ট্রেকিং আয়োজক সংস্থা “রেড পান্ডা ট্রেকস অ্যান্ড ট্রাভেলস”-এর মাধ্যমে ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বদীপ। সংস্থাটির দাবি, আগে দু’বার ওই রুটে ট্রেকিং করা বিশ্বদীপ রাস্তা চেনেন বলে জানিয়েছিলেন সঙ্গী গাইডদের। আর তাতেই তিনি দলছুট হয়ে পড়েন।

বিশ্বদীপের দিদি দেবশ্রী আচার্য বৃহস্পতিবার কলকাতায় যুবকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করেন। ভাইকে খোঁজার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন জানান তিনি। দেবশ্রীদেবী বলেন, “এখমও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমাদের পরিবারের লোকজন, বন্ধুরা সিকিমে আছেন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।”

অরূপ বিশ্বাস বলেন, “সবটা শুনেছি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যাবতীয় সাহায্য করা হবে।” তিনি জানান, সরকারের তরফে আগেও আবেদন করা হয়েছে, যাঁরা ট্রেকিংয়ে যাবেন তাঁরা যেন বিধাননগরে যুবকল্যাণ বিভাগের মাউন্টেনিয়ারিং দফতরে নাম লিখিয়ে যান। সে ক্ষেত্রে, কোনও প্রয়োজনে সহজে ও দ্রুত সরকারি পদক্ষেপ করা যাবে। অরূপ বিশ্বাস আরও জানান, যুবকল্যাণ দফতরের পর্বতারোহণ শাখার কার্যকরী উপদেষ্টা তথা এভারেস্ট ও কাঞ্চনজঙ্ঘা আরোহী দীপঙ্কর ঘোষ উদ্ধার কাজ তত্ত্বাবধান করতে শুক্রবার সিকিমের ইয়কসাম যাচ্ছেন।

দীপঙ্কর ঘোষ এ দিন জানিয়েছেন, নিখোঁজ হওয়ার সময়ে সঙ্গে শুধু একটি ছোট ব্যাগ ছিল বিশ্বদীপের। ক্যামেরা, জলের বোতল ছাড়া প্রায় কিছুই ছিল না তাতে। ছিল না অত্যন্ত প্রয়োজনীয় স্লিপিং ব্যাগও। পাহাড়ে চড়ার দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা থেকে দীপঙ্করবাবু জানালেন, পাহাড়ি পথে যে কোনও সময় যে কোনও রকম বিপদ আসতে পারে। যে কোনও জায়গায় আটকে যেতে হতে পারে। তাই সঙ্গে স্লিপিং ব্যাগ রাখা অত্যন্ত জরুরি। স্লিপিং ব্যাগ সঙ্গে থাকলে ঠান্ডা বা অন্য খারাপ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে। জরুরি আগুন, দড়ি, শুকনো খাবার-সহ ‘সারভাইভাল কিট’ সঙ্গে রাখা। দীপঙ্করবাবুর বক্তব্য, “এখনকার অভিযাত্রী বা ট্রেকাররা অনেকেই পোর্টারের পিঠে বড় রুকস্যাক চাপিয়ে দিয়ে নিজে ছোট ব্যাগটুকু নিয়ে হাঁটেন। এটা ঠিক নয়।”

Biswadeep Acharya missing sikkim
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy