রাজ্য রাজনীতিতে যে টক্কর বিজেপি-তৃণমূলে চলছে, তা বহাল শারদ-বিপণি নিয়েও।
লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ১৭ শতাংশ ভোট, দু’জন সাংসদ এবং বিধানসভা উপনির্বাচনে এক বিধায়ক প্রাপ্তির পর উজ্জীবিত গেরুয়া শিবির। তারই প্রতিফলন ঘটছে পুজো মণ্ডপে স্টলের সংখ্যাবৃদ্ধিতে। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ জানাচ্ছেন, গত বছর গোটা রাজ্যে পুজো মণ্ডপে তাঁদের স্টলের সংখ্যা ছিল ১৮০০। এ বছর তা হয়েছে ৩৭০০। তার মধ্যে কলকাতায় হচ্ছে ৪৮০টি স্টল।
তৃণমূলের দাবি, মণ্ডপে স্টল দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে তারাই। পুজো মণ্ডপে বিপণির সংখ্যা এত বেশি, যে গুনে শেষ করা যাচ্ছে না। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় জানান, স্টলে রাখার জন্য পঞ্চমীর দিনও মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই এবং দলীয় মুখপত্র নিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা। মুকুলবাবু বলেন, “গত বারের তুলনায় এ বার পুজো মণ্ডপে স্টলের সংখ্যা অনেক বেশি। বেশির ভাগই হচ্ছে নানা পুজো কমিটির উদ্যোগে।”
মণ্ডপে বিজেপি-র দলীয় সাহিত্য বিপণি আগেও হয়েছে। কিন্তু তখন এ রাজ্যে তাদের অবস্থা ছিল প্রান্তিক। বিধানসভা ছিল বিজেপি-শূন্য। সংগঠনও ছিল দুর্বল। ফলে সংখ্যার বিচারে বিজেপি-র শারদ-বিপণি ছিল নগণ্য। কিন্তু এখন দলীয় সূত্রের খবর, পুজো মণ্ডপে স্টলের সংখ্যা বাড়ায় বেশ কিছু বই নতুন করে ছাপতে হয়েছে বিজেপি-কে। তার মধ্যে রয়েছে তথাগত রায়ের লেখা ‘বিজেপি কী ও কেন’, মতাদর্শ সংক্রান্ত বই ‘পঞ্চনিষ্ঠা’ এবং দলের সংবিধান। সব স্টল বইয়ের নয়। জলসত্র, তথ্যানুসন্ধান কেন্দ্র এবং চিকিৎসাকেন্দ্রও থাকবে নানা মণ্ডপে।
সিপিএম রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। তাদের মণ্ডপে দলীয় সাহিত্য বিপণি চালানোর অভিজ্ঞতা ৬২ বছরের। সিপিএম নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, এ বছর পুজোয় তাঁদের স্টল প্রায় ২৫০০। মণ্ডপে সিপিএমের বইয়ের স্টলের দায়িত্বে থাকে প্রকাশনা সংস্থা ন্যাশনাল বুক এজেন্সি। সেই সংস্থার তরফে অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী জানান, তাঁদের স্টলের সংখ্যা রাজ্যে শাসক পরিবর্তনের পরে কিছু কমেছিল ঠিকই। কিন্তু তার পরে তিন বছরে আর নতুন করে তা কমেনি। অনিরুদ্ধবাবুর কথায়, “বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর এবং হুগলির সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় সিপিএম কর্মীরা ঘরছাড়া থাকায় স্টল দেওয়ার লোক মেলেনি। আবার হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় স্টল বেড়েছে। সব মিলিয়ে স্টলের সংখ্যায় তিন বছরে বিরাট কোনও হেরফের হয়নি।”
রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা রাখতে হিমশিম খাওয়া কংগ্রেস স্টলের ব্যাপারে উদাসীন। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে মণ্ডপে স্টল দেওয়ার রেওয়াজ নেই। কিন্তু স্থানীয় ভাবে কংগ্রেস কর্মীরা যে সব পুজোয় যুক্ত থাকেন, সেগুলিতে স্টলে রাখার জন্য দলীয় মুখপত্র চেয়ে পাঠান তাঁরা। কংগ্রেস দফতর থেকে তা পাঠানো হয়। সেখানে অন্য বইও থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy