Advertisement
E-Paper

ভুয়ো বিল পাঠিয়েছে এজেন্সিই, দাবি দেবব্রতর

কারচুপির দায় ট্র্যাভেল এজেন্সির ওপরেই চাপাচ্ছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের জেরার জবাবে তিনি জানিয়েছেন, ট্র্যাভেল এজেন্টরাই কম দামে টিকিট কেটে বেশি দামের বিল পাঠিয়েছিল। সেই ঝুটো বিলই জমা পড়ে রাজ্যসভার সচিবালয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০৩:৩৬

কারচুপির দায় ট্র্যাভেল এজেন্সির ওপরেই চাপাচ্ছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের জেরার জবাবে তিনি জানিয়েছেন, ট্র্যাভেল এজেন্টরাই কম দামে টিকিট কেটে বেশি দামের বিল পাঠিয়েছিল। সেই ঝুটো বিলই জমা পড়ে রাজ্যসভার সচিবালয়ে।

ভুয়ো বিমান বিল কেলেঙ্কারি নিয়ে আজ সিবিআই প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে দেবব্রতবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সিবিআই সূত্রে খবর, তৃণমূল সাংসদের তরফে রাজ্যসভায় যে সব ভুয়ো বিল জমা পড়েছে, সে সম্পর্কে তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। দেবব্রতবাবু জানান, তিনি বা তাঁর ঘনিষ্ঠ কারওরই ভুয়ো বিলের বিষয়ে জানা নেই। ট্র্যাভেল এজেন্সিই এই কারচুপি করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে দেবব্রতবাবু আনন্দবাজারকে বলেন, “ট্র্যাভেল এজেন্সি থেকে ই-মেল করে টিকিট ও বিল পাঠানো হয়েছিল। আমার ই-মেলে সেই তথ্য এখনও রয়েছে। ট্র্যাভেল এজেন্সির পাঠানো টিকিট ও বিলই আমি রাজ্যসভার সচিবালয়ে জমা দিয়েছিলাম। ট্র্যাভেল এজেন্ট কম দামের টিকিট কেটে বেশি অঙ্কের বিল পাঠিয়ে থাকলে, তা আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয়।”

ভুয়ো বিমান বিল কেলেঙ্কারিতে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় দেবব্রতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ অফারে দু’হাজার টাকায় টিকিট কেটে ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার ভুয়ো বিল জমা দিয়েছিলেন। সেই টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই গিয়েছে। চার বার বিমানযাত্রার ভুয়ো বিল জমা পড়েছিল রাজ্যসভার সচিবালয়ে। দেবব্রতবাবু জানান, এর মধ্যে তিন বার তাঁর স্ত্রী বিমানে যাত্রা করেছেন। এক বার তিনি নিজে। রাজ্যসভার সচিবালয় থেকে আগেই সেই সব ভুয়ো বিল আটক করেছিল সিবিআই। এর পর দেবব্রতর বাড়ি থেকেও তাঁর বিমান যাত্রা সংক্রান্ত নথিপত্র আটক করা হয়। আজ সেই সব নিয়েই তদন্তকারী অফিসাররা দেবব্রতবাবুর সঙ্গে আলোচনা করেন।

তৃণমূলের দেবব্রতবাবু ছাড়াও বসপা-র ব্রজেশ পাঠক ও মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের লালমিং লিয়ানার বিরুদ্ধে সিবিআই ভুয়ো বিমান বিলের প্রতারণা ও দুর্নীতির মামলা দায়ের করেছে। সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, অভিযুক্ত সাংসদদের মধ্যে দেবব্রতবাবুকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হল। খুব শীঘ্রই অন্য দুই সাংসদকেও ডেকে পাঠানো হবে। সিবিআই জানিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে জমা পড়া বিমান টিকিট ও বিলে আসলে কেউই যাত্রা করেনি। টিকিট কেটেও পরে তা বাতিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু দেবব্রতবাবু জানান, যে চারটি বিমান টিকিটের বেশি দাম দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ, সেগুলো তিনি বা তাঁর স্ত্রী সত্যিই যাত্রা করেছিলেন।

সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, প্রবীণ সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন, সে সম্পর্কে তাঁরা অবহিত। তিনি যা বলছেন, তা গুরুত্ব দিয়েই শোনা হবে। দেবব্রতবাবু আজ নিজেও জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সিবিআই অফিসাররা কোনও দুর্ব্যবহার করেননি। আজ দুপুরে তাঁকে সিবিআইয়ের সদর দফতরে ডেকে পাঠানো হয়। প্রথমে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার ডিআইজি অরুণ বোথরা। তার পর ডেপুটি পুলিশ সুপার রাজ সিংহ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। শান্ত ভাবে দেবব্রতবাবু তাঁদের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেন।

তৃণমূল সাংসদের তরফে যে চারটি বিমান যাত্রার ভুয়ো বিল রাজ্যসভার সচিবালয়ে জমা পড়েছিল, তা ২০১১ থেকে ২০১২ সালের। দেবব্রতবাবু জানান, প্রতি বারই তিনি একটি নির্দিষ্ট ট্র্যাভেলএজেন্সি থেকেই বিমানের টিকিট কেটেছিলেন। সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসাররা বলছেন, ওই ট্র্যাভেল এজেন্সিতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সেখানকার কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দেবব্রতর বক্তব্য, ট্র্যাভেল এজেন্সিটি কখন কোন সময় বিশেষ অফারে বিমান সংস্থার থেকে টিকিট কাটছে, তা কারও পক্ষেই জানা সম্ভব নয়।

debabrata bandyopadhyay cbi tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy