Advertisement
২১ মে ২০২৪

ভয় ঠেলে ভোট, সচেতন করতে নতুন পর্যবেক্ষক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে এক দল পুলিশ-পর্যবেক্ষক আসছেন রাজ্যে। আর ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে নির্বাচন কমিশনের নতুন দাওয়াই ‘অ্যাওয়ারনেস আবজার্ভার’ বা সচেতনতা-পর্যবেক্ষক। লোকসভার ভোটে এ বারেই প্রথম সচেতনতা-পর্যবেক্ষক নিয়োগ করছে কমিশন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০৪:০৬
Share: Save:

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে এক দল পুলিশ-পর্যবেক্ষক আসছেন রাজ্যে। আর ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে নির্বাচন কমিশনের নতুন দাওয়াই ‘অ্যাওয়ারনেস আবজার্ভার’ বা সচেতনতা-পর্যবেক্ষক। লোকসভার ভোটে এ বারেই প্রথম সচেতনতা-পর্যবেক্ষক নিয়োগ করছে কমিশন।

আইনশৃঙ্খলার সঙ্গেও অবশ্য এই নতুন পর্যবেক্ষকদের সম্পর্ক থাকছে। ভোট দেওয়া উচিত জেনেও স্রেফ ভয়ভীতি থেকে অনেকে বুথমুখো হন না। সেই সব ভোটারকে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার জন্য বুথ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতেই কমিশন এই ধরনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার কমিশন সূত্রে জানানো হয়, ভোটারেরা যাতে ত্রাসমুক্ত হয়ে ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচনের দু’তিন দিন আগে তাঁদের এসএমএস করা হবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতর থেকে।

কমিশনের খবর, বাংলায় বহু বারই ভোটের আগে নানা ভাবে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। ভোটের সময় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও অনুরূপ অভিযোগ ওঠে। এর সুরাহা করতে কমিশনে দরবার করেছে বিভিন্ন পক্ষ। পুরো বিষয়টিকেই কমিশন যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত কেন্দ্র বা এলাকায় বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলছে কমিশন। সেই কাজটা মূলত করবেন পুলিশ-পর্যবেক্ষকেরা। আর সচেতনতা-পর্যবেক্ষকদের কাজ হবে ভোটারদের মনের ভয় তাড়িয়ে বুথে পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

ভোটারদের বুথমুখী করে তুলতে কয়েক বছর ধরেই সচেতনতা অভিযান শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। গত বছর রাজস্থান, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মিজোরামে বিধানসভার নির্বাচনে ভোটারদের বুথে পাঠাতে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছিল। তাতে সাফল্যও মিলেছে। এ বার সারা দেশের সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের উৎসাহ দেওয়ার অন্যান্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কমিশনের নতুন সংযোজন এই সচেতনতা-পর্যবেক্ষক। ওই সব রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় ৫০% ভোটারকে বুথমুখী করাই কমিশনের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। পশ্চিমবঙ্গে গড় ভোটদান বরাবরই বেশি। কিন্তু এ রাজ্যেও বহু ক্ষেত্রে ভয় দেখিয়ে অনেক ভোটারকে বুথে যেতে দেওয়া হয় না। সেই জন্যই ভোটের দু’তিন দিন আগে মোবাইল-বার্তায় ভোটারদের অভয় দেওয়ার ব্যবস্থা করছে কমিশন।

এই নিয়ে এ বারের নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত চার ধরনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। সাধারণ ও হিসেব পর্যবেক্ষকেরা তো ছিলেনই। থাকবেনও। গত নির্বাচনে তাঁদের সঙ্গেই পুলিশ-পর্যবেক্ষকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পুলিশ-পর্যবেক্ষকেরা এ বারেও থাকছেন। উপরন্তু যুক্ত হচ্ছেন সচেতনতা-পর্যবেক্ষকেরা। পশ্চিমবঙ্গে আপাতত কলকাতার উত্তর ও দক্ষিণ, দার্জিলিং এবং রায়গঞ্জ কেন্দ্রের জন্য এই ধরনের পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে কমিশন। কলকাতার দু’টি আসনের জন্য সচেতনতা-পর্যবেক্ষক হয়ে আসছেন মনীষা বর্মা। দার্জিলিং ও রায়গঞ্জের জন্য আসছেন অলোক মিশ্র।

এ বারেই প্রথম লোকসভা নির্বাচনে না-ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে। তালিকার কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ না-হলে ভোটারেরা অনেক সময় বুথে যান না। না-ভোট দেওয়ার সুযোগের কথা প্রচার করে এই ধরনের ভোটারদেরও বুথমুখো করতে চাইছে কমিশন। তাদের আশা, সচেতনতা-পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত এ ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।

ভোটার তালিকায় নাম আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি তালিকায় নাম তোলার আবেদনপত্র গ্রহণের জন্য এক দিনের বিশেষ শিবির করছে কমিশন। ৯ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওই শিবির হবে। যাঁরা তালিকায় নাম পাবেন না, তাঁরা ওখানেই আবেদনপত্র তুলে তা জমা দিতে পারবেন। পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বুথ স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারেরা ওই দিন বুথে উপস্থিত থাকবেন। নানা কারণে যাঁরা ওই বিশেষ অভিযানে ভোটার তালিকায় নাম তোলাতে পারবেন না, তাঁরা চাইলে সংশ্লিষ্ট লোকসভা কেন্দ্রের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

awareness observer loksabha election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE