Advertisement
E-Paper

মুখ খুলে ব্রাত্য অনুপম, মন্তব্য ফেসবুকেও

রাজ্যের শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে ফের মুখ খুললেন বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরা। যা নিয়ে ফেসবুক থেকে দলের জেলাস্তর, সর্বত্র বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শুক্রবার ফেসবুকে অনুপমের একটি পোস্ট ঘিরে বিতর্ক চলছিলই। তাতে এলাকার ‘শ্রমিক মেলা’র সরকারি আমন্ত্রণপত্রে আমন্ত্রিতদের তালিকায় তাঁর নাম না থাকা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন অনুপম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৫ ১১:৫৫

রাজ্যের শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে ফের মুখ খুললেন বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরা। যা নিয়ে ফেসবুক থেকে দলের জেলাস্তর, সর্বত্র বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

শুক্রবার ফেসবুকে অনুপমের একটি পোস্ট ঘিরে বিতর্ক চলছিলই। তাতে এলাকার ‘শ্রমিক মেলা’র সরকারি আমন্ত্রণপত্রে আমন্ত্রিতদের তালিকায় তাঁর নাম না থাকা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন অনুপম।

শনিবার সাংসদ হিসেবে তাঁর কাজের পরিসর ছোট হয়ে আসার অভিযোগ তুলে অনুপম বলেন, “সাংসদ হয়ে এলাকার মানুষের জন্য অনেক কিছু করার ইচ্ছে ছিল। কোনও একটা কারণে সেই কাজগুলো স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে করে উঠতে পারছি না।” যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই ফেসবুকে অনেক রকম মন্তব্য করেছেন। তার মধ্যে একটি মন্তব্যে লেখা হয়েছে, “বেশি মুখ খুললে ডাক তো পাবেনই না!”

ঘটনা হল, একের পর এক নেতার প্রকাশ্যে মুখ খোলা নিয়ে এমনিতেই যথেষ্ট অস্বস্তিতে তৃণমূল। অনুপম নিজেই আগে দলে স্বাধীনতার অভাবের কথা তুলেছিলেন। কখনও যাদবপুর প্রসঙ্গে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তো কখনও শুভবুদ্ধি চেপে রাখা নিয়ে সাধন পান্ডে। সদ্য বনগাঁর মতুয়া বিধায়ক মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর বিজেপিতে যোগ দিয়ে শাসকদলের বিড়ম্বনা আরও বাড়িয়েছেন। তারই মধ্যে অনুপমের এই ফেসবুক পোস্ট।

কেন এত ক্ষুব্ধ হলেন অনুপম?

বীরভূম জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর আয়োজিত শ্রমিক মেলার আমন্ত্রণপত্রে দেখা যাচ্ছে, ‘সম্মানীয় অতিথি’ হিসেবে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। রাজ্য গ্রামোন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে নাম রয়েছে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। পরিষদীয় সচিব মনিরুল ইসলাম, বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত, এমনকী নানুরের বিধায়ক গদাধর হাজরার নামও রয়েছে। শুধু স্থানীয় সাংসদ অনুপমের নামই বাদ। অনুপমের মন্তব্য, “কী কারণে নাম বাদ গেল, বলতে পারব না।

আমি বিরক্ত। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছি।”

ফেসবুকে অনুপমের ক্ষোভ প্রকাশ অবশ্য নতুন নয়। কিছু দিন আগে বাড়ি থেকে ফুলের টব চুরি যাওয়ায় জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে পোস্ট করেছিলেন। পরে একটি পোস্টে তিনি মন্তব্য করেন, ‘পড়া এবং পড়ানোতেই আমার মনোনিবেশ করা ভাল।’ বছরের শুরুতেই আবার লেখেন, ‘নববর্ষ উদ্যাপন করছি... সাংসদ হওয়ার দমবন্ধকর অবস্থা উপেক্ষা করেই... একেবারেই আমার নিজের মতো করে।” সেই সময়েই প্রশ্ন ওঠে, এত তাড়াতাড়ি কেন ‘দমবন্ধ’ লাগছে তাঁর? সাংসদ তথা বিশ্বভারতীর সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপকের ব্যাখ্যা ছিল, “উন্নয়নের কাজ করতে গিয়ে বারবার মতের ফারাক হচ্ছে। কী করে উন্নয়নের কাজ করব?” তাঁর আক্ষেপ, “পোড় খাওয়া রাজনীতির নেতা নই। হয়তো আমিই রাজ্য রাজনীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না!”


সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন

জেলা তৃণমূলের সকলেই জানেন, এক সময়ে অনুব্রতর হাত ধরেই রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছিলেন অনুপম। যদিও সম্প্রতি দু’জনের দূরত্ব বেড়েছে বলে দলেরই একটি সূত্রের খবর। অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের অনুযোগ, অনুপম সাংসদ হওয়া ইস্তক আর দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। দিল্লি-কলকাতা করেই তাঁর সময় কেটে যায়। নিজের কেন্দ্রে সাতটি বিধানসভা এলাকার একটিতেও যাননি এখনও। আমন্ত্রণপত্রে অনুপমের নাম না থাকা প্রসঙ্গে অনুব্রত অবশ্য শুধু বলেন, “এ তো সরকারি অনুষ্ঠান। এতে আমার কী বলার থাকতে পারে?”

কী বলছে প্রশাসন?

বোলপুর সহ-শ্রম কমিশনার তুহিন শুভ্র মজুমদার বলেন, “অনুপমবাবুকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে কার্ডে ওঁর নাম রাখা যাবে কি না, তার অনুমতি নেওয়ার জন্য ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাই নাম রাখা হয়নি।” বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের কটাক্ষ, “সত্যি কথা বলে দলের নেতাদের বিরাগভাজন হয়েছেন বোলপুরের সাংসদ। সেই কারণেই যে সরকারি মেলায় আমন্ত্রণ জোটেনি, সে তো শিশুও বুঝবে।”

anupam hazra facebook tmc mp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy