Advertisement
E-Paper

মাজদিয়া কলেজের ভোট বাতিল করল হাইকোর্ট

সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয় (মাজদিয়া কলেজ)-এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টকে জানালেন নদিয়ার জেলাশাসক। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে সেখানে নতুন করে ছাত্রভোটের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিচারপতির আরও নির্দেশ, এ বার মনোনয়ন জমা দিতে হবে ওসি-র সামনে এবং ভোটের দিন সকাল থেকেই ডিএম ও এসপি-কে ওই কলেজে হাজির থাকতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০০:৩৫

সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয় (মাজদিয়া কলেজ)-এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টকে জানালেন নদিয়ার জেলাশাসক। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে সেখানে নতুন করে ছাত্রভোটের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিচারপতির আরও নির্দেশ, এ বার মনোনয়ন জমা দিতে হবে ওসি-র সামনে এবং ভোটের দিন সকাল থেকেই ডিএম ও এসপি-কে ওই কলেজে হাজির থাকতে হবে।

ওই কলেজে ২০১১-য় ছাত্র সংসদ দখল করেছিল এসএফআই। ’১২ এবং ’১৩-য় ভোট হয়নি। গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন। পুলিশ থাকা সত্ত্বেও টিএমসিপি-এসএফআই সংঘর্ষ বাধে। লাঠি-রড নিয়ে মারামারি হয়। ছবি তুলতে গিয়ে প্রহৃত হন সংবাদমাধ্যমের আলোকচিত্রীরা। অভিযোগ, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। শেষ পর্যন্ত কোনও আসনেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি এসএফআই। ছাত্র সংসদের ৫৪টি আসনের মধ্যে ৫২টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান টিএমসিপি প্রার্থীরা। দু’টি আসনে কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি। ২৮ জানুয়ারি ছাত্র সংসদের ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০ তারিখেই টিএমসিপি প্রার্থীদের জয়ী বলে ঘোষণা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

মাজদিয়া কলেজের ছাত্র মোস্তাক হোসেন-সহ আরও কয়েক জন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে বলেন, ওই কলেজের ছাত্র সংসদ গড়ার জন্য কার্যত কোনও নির্বাচনই হয়নি। কারণ শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের অনুগামীরা ছাড়া আর কেউ মনোনয়নপত্রই জমা দিতে পারেননি।

ওই ছাত্রের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আদালতে একটি ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে জানান, বিডিও ছাত্রদের কাছে হাতজোড় করছেন, তবুও তাঁকে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে সাহায্য করা হচ্ছে না। বিকাশবাবু আদালতে মন্তব্য করেন, এ ভাবেই রাজ্য জুড়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হচ্ছে। অধিকাংশ কলেজেই একতরফা শাসক দলের ছাত্র সংগঠন সব আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করছে। ঠিক যেমন হয়েছে মাজদিয়া কলেজে।

শুনানি চলাকালীন সরকার পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে কি না, আগে তা তদন্ত করে দেখা হোক। যদি দেখা যায়, হয়নি, তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য মেনে নেন বিচারপতি। তিনি নদিয়ার জেলাশাসককে নির্দেশ দেন, ওই নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে কি না, তা ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করে জানাতে হবে। বুধবার জেলাশাসক সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেন।

জেলাশাসক তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, মাজদিয়া কলেজে সেই পরিস্থিতি ছিল না। কলেজে অনেক বহিরাগতও ভিড় করেছিল। পুলিশ কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গেলে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারত।

এই রিপোর্ট শুনে বিচারপতি অশোক দাস অধিকারী জানান, কলেজের অধ্যক্ষকে নতুন নির্বাচনের দিন স্থির করতে হবে। সংশ্লিষ্ট থানার ওসি-র সামনে প্রার্থীরা তাঁদের মনোনয়ন জমা দেবেন। নির্বাচনের দিন নিরাপত্তার উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। গণতান্ত্রিক ভাবে ছাত্র সংসদের নির্বাচন যাতে হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে। নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে ওই কলেজে হাজির থাকতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি।

কোর্টের সিদ্ধান্ত শুনে মাজদিয়ায় সিপিএম লোকাল কমিটির কার্যালয়ের সামনে এসএফআই সমর্থকেরা আবির মেখে বাজি ফাটান। এসএফআই-এর জেলা সভাপতি কৌশিক দত্ত বলেন, “এই রায় আসলে গণতন্ত্রেরই জয়।”

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, “যদি ভোট হয়ও, তা হলেও টিএমসিপি জিতবে, আমি নিশ্চিত।”

অধ্যক্ষ সরোজেন্দ্রনাথ করের প্রতিক্রিয়া, “আমি এখনও আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি।” নদিয়ার জেলাশাসক পি বি সালিমও রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাননি বলে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি।

majdia college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy