Advertisement
E-Paper

যাবজ্জীবন দণ্ডিতকে ফি-মাসে কোর্টে তোলায় কোপে সুপার

শাস্তি হয়েছে নিম্ন আদালতে। উচ্চ আদালতে আপিলও করা হয়েছে। অথচ বন্দিকে নিয়ে নিম্ন আদালতে সমানে চলছে টানাহেঁচড়া। উপরন্তু জেলে কাজ করেও তিনি পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। মূলত এই দুই কারণে কলকাতা হাইকোর্টের কোপে পড়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার। মামলাটি খুনের। তাতে অন্য এক জনের সঙ্গে একটি যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে হাওড়া আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৪

শাস্তি হয়েছে নিম্ন আদালতে। উচ্চ আদালতে আপিলও করা হয়েছে। অথচ বন্দিকে নিয়ে নিম্ন আদালতে সমানে চলছে টানাহেঁচড়া। উপরন্তু জেলে কাজ করেও তিনি পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। মূলত এই দুই কারণে কলকাতা হাইকোর্টের কোপে পড়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার।

মামলাটি খুনের। তাতে অন্য এক জনের সঙ্গে একটি যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে হাওড়া আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয় দু’জনকেই। ওই যুবক এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। দণ্ডভোগ সত্ত্বেও তাঁর হয়রানি কমেনি। প্রতি মাসে তাঁকে হাওড়া আদালতেই হাজির করানো হচ্ছে। আপিল মামলার সুবাদে বিষয়টি নজরে এসেছে হাইকোর্টের। কেন দণ্ডিত আসামিকে বারবার নিম্ন আদালতে হাজির করানো হচ্ছে, প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে তার কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অসীম রায়। হাইকোর্টে হাজির হয়ে জেল সুপারকে এর কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। জেলের ভিতরে কাজ করেও ওই বন্দি টাকা পাচ্ছেন না বলে যে-অভিযোগ উঠেছে, তারও ব্যাখ্যা দিতে হবে জেল সুপারকে।

পুলিশ জানায়, জগাছা থানা এলাকার একটি খুনের ঘটনায় অরূপ রায় ও রাজীব দত্ত নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৭ সালে হাওড়া আদালত তাঁদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অরূপ ও রাজীব হাইকোর্টে আপিল করেন। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি না-থাকায় কয়েক দফা শুনানির পরে তাঁদের আইনজীবীরা আর সেই মামলা লড়েননি। ইতিমধ্যে মামলাটি শুনানির জন্য বিচারপতি অসীম রায়ের আদালতে আসে। কয়েক দিন আগে মামলাটি ওঠে। দুই বন্দির পক্ষে কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি দেখে অরূপ ও রাজীবকে তাঁর আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি রায়। বৃহস্পতিবার দুই যুবককে জেল থেকে হাইকোর্টে আনা হয়। বিচারপতি তখন আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল ও জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়ে ওই দুই বন্দির হয়ে মামলা লড়তে বলেন।

জেলে কাজ করে টাকা পান কি না, অরূপের কাছে তা জানতে চান বিচারপতি। অরূপ জানান, কাজ করলে তিনি প্রতিদিন ২২ টাকা পান। কিন্তু রাজীবের অভিযোগ, তিনি কাজ করেও টাকা পান না। ওই বন্দি জানান, নিম্ন আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পরে হাইকোর্টে আবেদন করে ২০০৯ সালে তিনি জামিন পান। জামিনের বিরোধিতা করে সরকার পক্ষ পাল্টা মামলা করে। সেই মামলায় ২০১০ সালে তাঁর জামিন খারিজ হয়ে যায়। তার পর থেকে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলেই রয়েছেন। কিন্তু মাসে এক বার তাঁকে হাওড়া আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে অন্য কোনও মামলা আছে কি না, জানতে চান বিচারপতি। রাজীবের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে অন্য কোনও মামলা নেই।

সব শুনে প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে আগামী ২৭ জানুয়ারি তাঁর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ওই বন্দিকে কেন প্রতি মাসে হাওড়া আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কেনই বা শ্রম দিয়েও প্রাপ্য না-পাওয়ার অভিযোগ উঠছে সব কিছুই ব্যাখ্যা করতে হবে জেল সুপারকে।

৪৭ কারারক্ষীর বদলি স্থগিত

তড়িঘড়ি কারারক্ষীদের বদলির সিদ্ধান্ত স্থগিতের নির্দেশ দিল রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)। সম্প্রতি ৪৭ জন কারারক্ষীকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কারা দফতরে নির্দিষ্ট সার্কেলের বাইরে বদলি করা যায় না। অভিযোগ, সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই ৪৭ জনকে ইচ্ছেমতো বদলি করা হয়েছিল। তাই স্যাটের দ্বারস্থ হন ১৭ জন কারারক্ষী। স্যাট বৃহস্পতিবার ওই সিদ্ধান্ত ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। কারারক্ষীদের আইনজীবী গৌতম পাঠক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কারারক্ষীদের তাঁদের সার্কেলের মধ্যে বদলি করাটাই নিয়ম। বেআইনি ভাবে জোন গড়ে তাঁদের বদলি করা হয়েছিল। প্রত্যাশিত ভাবেই তা আটকে দিয়েছে স্যাট।”

Presidency Jail Alipore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy