Advertisement
E-Paper

শালিমার, ডানলপ খোলা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ব্যর্থ

আরও এক বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হল বুধবার। কিন্তু হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ ও হাওড়ার শালিমার পেন্টস কারখানা খোলা নিয়ে কোনও ফয়সালা হল না। দু’টি বৈঠকেই রাজ্য সরকার ও ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা কারখানা খোলার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু মালিক-প্রতিনিধিরা কোনও ক্ষেত্রেই স্পষ্ট আশ্বাস দেননি। ফলে কারখানা কবে খুলবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০২:৫৩

আরও এক বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হল বুধবার। কিন্তু হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ ও হাওড়ার শালিমার পেন্টস কারখানা খোলা নিয়ে কোনও ফয়সালা হল না। দু’টি বৈঠকেই রাজ্য সরকার ও ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা কারখানা খোলার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু মালিক-প্রতিনিধিরা কোনও ক্ষেত্রেই স্পষ্ট আশ্বাস দেননি। ফলে কারখানা কবে খুলবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেল।

তবে শ্রম দফতর সূত্রে খবর, বৈঠকে ডানলপ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বকেয়া মেটাতে তাঁরা প্রতি মাসে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করবেন। জবাবে সরকারপক্ষ তাঁদের মাসে অন্তত ১ কোটি টাকা করে দিতে বলে। তা হলে এক বছরে যাবতীয় বকেয়া মিটে যাবে। শালিমার কর্তৃপক্ষ আবার এ দিন জানিয়ে দেন, ১০-১২ মাসের আগে তাঁরা কারখানা খুলতে পারবেন না। কারণ, সে জন্য অন্তত ৬০ কোটি টাকা লাগবে, যা তাঁদের নেই। শ্রমমন্ত্রী জানতে চান, যে-শ্রমিকেরা কাজ হারিয়েছেন তাঁদের কী ব্যবস্থা হবে? মালিকপক্ষ জানান, তাঁদের ১৫ দিনের পাওনাগণ্ডা মেটানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে অন্য কারখানায় বদলির শর্তও।

ভারতের অন্যতম প্রাচীন টায়ার তৈরির কারখানা ডানলপ ২০১২ সালে শেষ বারের মতো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার পর দফায় দফায় সরকার-কর্তৃপক্ষ বৈঠক হলেও কারখানার দরজা খোলেনি। এ দিনের বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দিয়ে মালিকপক্ষ চারটি প্রস্তাব দিয়েছে সরকারের কাছে। প্রথমত, স্থানীয় বাজার দরে কারখানার কিছু জমি সরকারকে হস্তান্তর করতে পারে তারা। দ্বিতীয়ত, জমি বিক্রির অনুমতি দিক সরকার। তৃতীয়ত, শ্রমিক-সমবায়কে কিছু জমি হস্তান্তর করতে পারে সংস্থা। সমবায় তা বিক্রি করে বকেয়া মেটাতে পারে। চতুর্থত, জমি বন্ধক রেখে ডানলপকে ঋণ দিক রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। সংস্থা জানিয়েছে, এ নিয়ে ৫ অগস্ট ফের বৈঠক হবে।

বৈঠক প্রসঙ্গে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “ডানলপ কর্তৃপক্ষ কারখানা খুলতে আগ্রহী। এ নিয়ে তাঁদের চিন্তা-ভাবনা কী, অর্থ কী ভাবে আসবে, সে সব নিয়েই আলোচনা হয়েছে।” ডানলপ কর্তৃপক্ষের কাছে এ দিন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের দাবি: এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার শ্রমিক অবসর নিলেও বকেয়া পাননি। ৩৬ জন মারা গিয়েছেন। তাঁরাও বকেয়া পাননি। দ্রুত যাবতীয় বকেয়া মেটাতে হবে। শ্রমিকদের মোট বকেয়া ১০.৬৫ কোটি টাকা। কর্তৃপক্ষ ঠিক কি করতে চাইছেন, তা নিয়ে শ্রমিকরা অবশ্য সংশয়ে। রামেশ্বর সিংহ ৩৪ বছর কাজ করেছেন হোস পাইপ বিভাগে। তিনি বলেন, “আমার সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা পাওনা। সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। আগে কর্তৃপক্ষ বকেয়া মিটিয়ে দিন।” তাঁর অভিযোগ, “সব যন্ত্রই তো চুরি হয়ে গেল। কী ভাবে কারখানা খুলবে!”

শালিমার নিয়ে ফের ত্রিপক্ষ বৈঠক হবে ৬ অগস্ট। এ ক্ষেত্রে মালিকপক্ষের বক্তব্য শুনে সরকারের তরফে তিনটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল: এক, হাওড়া কারখানা খুললে সব শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হবে, এই মর্মে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করতে হবে মালিকপক্ষকে। তবেই শ্রমিকরা বদলি নিয়ে ভিন্ রাজ্যের কারখানায় যাবেন। সেখানে তাঁদের নিখরচায় থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। দুই, মালিককে বলতে হবে ঠিক কত দিনে কারখানা খুলবে। তিন, যাঁরা চান, তাঁদের স্বেচ্ছাবসর দিতে হবে। এই সব শর্তে শ্রমিক সংগঠনও রাজি। কিন্তু মালিকপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি। শ্রমমন্ত্রী ও কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের দাবি, “কারখানা খুলতে রাজ্য সব রকম প্রয়াস চালাচ্ছে। আশা করি মালিকপক্ষ সহযোগিতা করবে।”

শালিমার কর্তৃপক্ষ প্রেস বিবৃতিতে জানান, “রাজ্যের প্রতি সংস্থা দায়বদ্ধ। বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলি রূপায়ণে সচেষ্ট হবে তারা।” তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি মাসুদ আলম খান বলেন, “সরকার যে-তিনটি শর্ত দিয়েছে, মালিকপক্ষ তা মানলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু চুক্তি করেই কর্তৃপক্ষকে কারখানা খোলার দিনক্ষণ জানাতে হবে। ”

dunlop sahaganj plant shalimar paints trilateral meeting
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy