Advertisement
E-Paper

শাসনে ঢুকলে বিপদ মজিদের, বার্তা মন্ত্রীর

যে শাসন এক সময়ে তাঁর দাপটে কেঁপে উঠত, সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টারকে সেই শাসনের বাড়িতে ফিরতে চেয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। মামলার শুনানি হতে পারে আজ, সোমবার। ঠিক তার ২৪ ঘণ্টা আগে, রবিবার শাসনের সভায় দাঁড়িয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে জানতে চাইলেন, “বহু মানুষের খুনে হাত রাঙানো যার, তার কোন পরিণতি চান আপনারা?” উত্তরে জনতা মজিদের ‘চরম শাস্তি’র দাবি তোলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪৮

যে শাসন এক সময়ে তাঁর দাপটে কেঁপে উঠত, সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টারকে সেই শাসনের বাড়িতে ফিরতে চেয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। মামলার শুনানি হতে পারে আজ, সোমবার। ঠিক তার ২৪ ঘণ্টা আগে, রবিবার শাসনের সভায় দাঁড়িয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে জানতে চাইলেন, “বহু মানুষের খুনে হাত রাঙানো যার, তার কোন পরিণতি চান আপনারা?” উত্তরে জনতা মজিদের ‘চরম শাস্তি’র দাবি তোলে। যা শুনে দৃশ্যতই সন্তুষ্ট জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে বলতে শোনা যায়, “সংবাদমাধ্যমে আমার কথার নানা অপব্যাখ্যা হয়। কাজেই আমি নতুন করে কিছু বলছি না। মানুষের দরবারেই বিচার হবে মজিদের।”

এর আগে একাধিক সভায় জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে বলতে শোনা গিয়েছে, মজিদ শাসনে ঢুকলে বাড়ির মেয়ে-বৌরা বঁটি-কাটারি নিয়ে তৈরি আছেন। তাঁরাই ‘বুঝে নেবেন।’ এ হেন শাসানি যে স্রেফ ফাঁকা বুলি নয়, তারও প্রমাণ মিলেছে। মাস কয়েক আগে মজিদ শাসনের বাড়িতে ফেরায় আক্রমণ হয়েছে তাঁর উপরে। বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে। রবিবার মজিদ-প্রসঙ্গে ফের উস্কানিমূলক কথা বলার অভিযোগ উঠেছে জ্যোতিপ্রিয়বাবুর বিরুদ্ধে। রাজ্যের মন্ত্রিসভার এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের পক্ষে এ ভাবে ‘জনতার দরবারে বিচার’ চাওয়াটা সঙ্গত কিনা, সে প্রশ্ন ফের উঠেছে। যদিও নিজের বক্তব্যে অনড় তৃণমূল জেলা সভাপতি পরে বলেন, “আমি কিছু ভুল বলিনি। বহু মানুষের খুনে জড়িত মজিদ। মানুষ ওর কৃতকর্মের ফল ওকে দেবেই।”

শাসনে এক সময়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মজিদ আলি ওরফে মজিদ মাস্টারের কর্তৃত্ব ছিল দেখার মতো। কিন্তু রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়ায় সেই রাজ্যপাট অস্তমিত। খুনের অভিযোগে ধরা পড়েন মজিদ। পরে জামিনে ছাড়া পেয়েও পুলিশ-প্রশাসনের নির্দেশে তাঁর শাসনে ঢোকা বারণ। তাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের কর্তাদের।

যদিও জেলা সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের ব্যাখ্যা, মজিদ দীর্ঘ দিন এলাকা ছাড়া থাকলেও তাঁর কিছু জনভিত্তি আছে শাসনে। যা এখনও বেগ দিতে পারে রাজ্যের বর্তমান শাসক দলকে। সে কথা বিলক্ষণ আঁচ করতে পারছেন বলেই মজিদের শাসনে ফেরা নিয়ে এত আপত্তি তৃণমূল নেতাদের।

মজিদ গত কয়েক বছর ধরে থাকেন বারাসতের কাজিপাড়ায়। কিন্তু দিনের পর দিন কেন বাড়ির বাইরে থাকতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন। আজ, সোমবার সেই আবেদনেরই শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিক তার আগেই যে কারণে সভা করে তৃণমূল নেতারা বুঝিয়ে দিলেন, আইন যে কথাই বলুক না কেন, মজিদকে এলাকায় ফেরানোর ব্যাপারে তাঁদের ঘোর আপত্তি আছে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “মজিদের পাশে দাঁড়িয়েছে আলিমুদ্দিন। এর থেকে প্রমাণ হয় দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে সিপিএম।”

কী বলছেন মজিদ নিজে? বর্ষীয়ান এই সিপিএম নেতার কথায়, “হাইকোর্ট যা রায় দেবে, তা মেনে নেব। তৃণমূল-সহ সব রাজনৈতিক দলের অধিকার আছে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার। শাসনের মানুষই এর বিচার করবেন।”

যা শুনে জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার কটাক্ষ, “মজিদকেও এখন তা হলে মানুষের বিচারের উপরে ভরসা রাখতে হচ্ছে!”

sashan majid master jyotipriyo mallick
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy