Advertisement
E-Paper

সৌগতের দখল মন্তব্যে প্ররোচনা দেখছে বিরোধীরা

ইদানীং তাঁর পরিচিতি তৃণমূলের মধ্যে প্রায় ‘বিবেকে’র মতো! পোড়খাওয়া রাজনীতিক, প্রথম পেশায় অধ্যাপক। আরাবুল-কাণ্ড বা শিক্ষাঙ্গনে অরাজকতার ঘটনায় শাসক দলের মধ্যে তাঁর ব্যতিক্রমী কণ্ঠস্বর শুনেছেন রাজ্যবাসী। এমনকী, অন্য দল থেকে আসা নব্য তৃণমূলের হাতে দলের পুরনো সৈনিক, আদি তৃণমূলের কোণঠাসা হয়ে পড়ার বিরুদ্ধেও দলের ভিতরে মুখ খুলেছেন তিনি। লোকসভা ভোটের আগে সেই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ই এ বার হিংসা এবং বুথ দখলে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বিরোধীদের কাঠগড়ায়!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৪ ০৪:০৬

ইদানীং তাঁর পরিচিতি তৃণমূলের মধ্যে প্রায় ‘বিবেকে’র মতো! পোড়খাওয়া রাজনীতিক, প্রথম পেশায় অধ্যাপক। আরাবুল-কাণ্ড বা শিক্ষাঙ্গনে অরাজকতার ঘটনায় শাসক দলের মধ্যে তাঁর ব্যতিক্রমী কণ্ঠস্বর শুনেছেন রাজ্যবাসী। এমনকী, অন্য দল থেকে আসা নব্য তৃণমূলের হাতে দলের পুরনো সৈনিক, আদি তৃণমূলের কোণঠাসা হয়ে পড়ার বিরুদ্ধেও দলের ভিতরে মুখ খুলেছেন তিনি। লোকসভা ভোটের আগে সেই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ই এ বার হিংসা এবং বুথ দখলে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বিরোধীদের কাঠগড়ায়!

বিতর্ক বেধেছে দলের একটি কর্মিসভায় দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগতবাবুর কিছু মন্তব্যে। বরাহনগরে রবিবার ওই কর্মিসভায় বর্তমান সাংসদ অভিযোগ করেছেন, গত বার লোকসভা ভোটে বরাহনগর এলাকায় বুথ দখল করেছিল সিপিএম। পাঁচ বছর আগে রাজ্যের শাসক দল সিপিএম যা করেছিল, এখন তৃণমূল কেন সেই আচরণই অধুনা বিরোধী সিপিএমের দিকে ফিরিয়ে দেবে না এই প্রশ্ন তুলেছেন সৌগতবাবু। পাড়ায় পাড়ায় যে আধা-সামরিক বাহিনী থাকবে না, সেই কথাও সিপিএম কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য দলের কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন বর্ষীয়ান এই নেতা। যার প্রেক্ষিতে সিপিএমের অভিযোগ, প্রার্থী সৌগতবাবু আসলে বুথ দখল ও বিরোধীদের উপরে হামলার জন্যই দলের কর্মী-সমর্থকদের প্ররোচনা দিয়েছেন। দুই বিরোধী পক্ষ, সিপিএম এবং কংগ্রেস এই অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে।

কর্মিসভায় সৌগতবাবু বলেছিলেন, “এই বাজারেও যদি কেউ সিপিএমের হয়ে ফটফট করে, পাড়ায় তেড়ে তেড়ে স্লোগান দেয়, আমি তো হিংসায় বিশ্বাস করি না, কিন্তু তাকে কি ডেকে বলা যায় না, বাবা ৩৪ বছর ধরে অনেক করেছিস! এ বার কিন্তু এত বাড়াবাড়ি করিস না! পাড়ায় কিন্তু সিআরপি-বিএসএফ থাকবে না! এটা কি বলা যায় না? আমার মনে হয়, বলা উচিত।” সিপিএমের অত্যাচারের বিবরণ দিয়ে সৌগতবাবুর অভিযোগ, ২০০৯-এর লোকসভা ভোটের দিন বিকালের দিকে দমদম কেন্দ্রে একের পর এক বুথ দখলের খবর আসছিল। তিনি নির্বাচন অফিসার, পর্যবেক্ষক, জেলাশাসককে ফোন করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এই বিবরণ দিয়েই সৌগতবাবুর মন্তব্য, “ওরা যেটা আমাদের করেছিল, এ বার সেটা আমরা ফিরিয়ে দেব না?” তবে একই সঙ্গে তিনি বলে রেখেছেন, “আপনাদের উপরে ছেড়ে দিলাম সিদ্ধান্ত নেওয়ার যে, কী করা উচিত!” তৃণমূল প্রার্থীর এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরে কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকেই কমিশন সবক’টি নির্বাচনী প্রচারের ভিডিও রেকর্ডিং করছে। এবং নিয়মিত ভাবে সেই সব রেকর্ডিং খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সৌগতবাবুর সভার ভিডিও রেকর্ডিং হাতে পাওয়ার পরে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে মনে করলে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশিই, তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ নিয়েও জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্ত। সৌগতবাবু অবশ্য সোমবার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, “আমি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি বরাহনগরের বুকে সিপিএম দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস চালিয়েছে। স্মরণ করাতে চেয়েছি, কী ভাবে ২০০৯-এ ওখানে বুথ দখল হয়েছে। তার মানে এটা বলিনি, এ বার মেরে বুথ দখল করো!’

sougata roy tmc loksabha election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy