Advertisement
২০ মে ২০২৪

সরকারি কর্মীকে বেধড়ক মারধর, অভিযুক্ত শাসক দল

সরকারি কর্মীর উপরে ফের হামলার অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিককে জোর করে একটি জমির মিউটেশন করানোর জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা কর্মী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৮
Share: Save:

সরকারি কর্মীর উপরে ফের হামলার অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে।

মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিককে জোর করে একটি জমির মিউটেশন করানোর জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা কর্মী। কিন্তু জয় মজুমদার নামে সেই আধিকারিক ওই চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি। এই ক্ষোভে বুধবার বিকেলে তাঁর দফতরেই হানা দিয়ে জয়বাবুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের স্থানীয় ওই নেতা আতিউর রহমান সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে। আতিউর তৃণমূলের ওই ব্লকের প্রাক্তন সম্পাদক। এলাকায় তাঁর যথেষ্ট দাপট রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। জখম জয়বাবুকে প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় প্রথমে বেদরাবাদ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে রাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে সিসিইউ-তে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথায় আঘাত রয়েছে।

২০০৭ ব্যাচের রেভিনিউ অফিসার জয়বাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে এ দিন ওই তৃণমূল নেতারা ব্লক ভূমি রাজস্ব অফিসার অসীম দাসকে ঘেরাও করেন। অসীমবাবু তাঁদের কিছুদিনের মধ্যেই ওই জমি নিয়ে মিউটেশনের জন্য শুনানির দিন ধার্য করেন। তার পরেও এ দিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ জয়বাবু যখন বিডিও অফিস থেকে ফিরছিলেন, তখন ওই তৃণমূল নেতারা দলবল নিয়ে এসে তাঁকে ঘিরে ধরে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সকলের সামনেই বেধড়ক মারধর শুরু করে। মাটিতে ফেলে তাঁকে মারা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুষ্কৃতীরা মারার সময় বলছিল, “দেখিস, যেন রক্ত না বেরোয়।” জয়বাবুকে মারধরের সময় অন্য অফিসারেরা তাঁকে বাঁচান।

বিএলআরও অসীমবাবু এ দিন সন্ধ্যায় বৈষ্ণবনগর থানায় অভিযোগ করেন। মালদহের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক সঞ্জীব চাকী বলেন, “মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে বৈষ্ণবনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” তবে এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কোনও আধিকারিককে মারধর করা হয়েছে বলে জানি না।” জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য বলেন, “ওই অফিসারকে মারধর করার ঘটনায় আমাদের দলের কেউ জড়িত নন।”

এর আগে ভোটের সময় মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট রক্ষার কর্মীদের উপরে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া, হাওড়া ও মালদহের কালিয়াচকেই হামলার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের কর্মীদের উপরে। গত বছর কলকাতার গার্ডেনরিচে হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র ভোটের সময় তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে পড়ে প্রাণ যায় পুলিশকর্মী তাপস চৌধুরীর। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হন তৃণমূল নেতা তথা বরো চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্না। সম্প্রতি বীরভূমের খয়রাশোলে তৃণমূল ও সিপিএমের বোমাবাজির মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে পরে মারা যান পুলিশকর্মী অমিত চক্রবর্তী। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শেখ আলিম এখনও অধরা। ফের এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর। তিনি বলেন, “ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল সরকারি আধিকারিকদের জোর করে চাপ দিয়ে নানা কাজ করিয়ে নিচ্ছে। যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁদেরই মারধর করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

state govt employee beaten
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE