Advertisement
E-Paper

হাওড়ায় নেমেও প্ল্যাটফর্মে বন্দি, ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

ক্যাবওয়ের মাঝখানে কাঠের চৌকিতে লাল কার্পেট বিছোতে ব্যস্ত কয়েক জন। আর এক দল লোক ফুট তিরিশেক চওড়া বাঁশের ফ্রেমের উপরে নীল-সাদা কাপড় সাঁটছেন। অন্য পাশে সাদা পোশাকের বাজনদারেরা ব্যস্ত মনোযোগী মহড়ায়। হাওড়া স্টেশনের ভিতরে ক্যাবওয়ের দু’পাশে ৮ ও ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে তখন নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে চূড়ান্ত তৎপর রেলের পদস্থ কর্তা থেকে রেল পুলিশ, রাজ্য পুলিশ, হাওড়া সিটি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০২:৫৮
ভাবী রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পিছনে শিল্প ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বুধবার হাওড়া স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র

ভাবী রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পিছনে শিল্প ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বুধবার হাওড়া স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র

ক্যাবওয়ের মাঝখানে কাঠের চৌকিতে লাল কার্পেট বিছোতে ব্যস্ত কয়েক জন। আর এক দল লোক ফুট তিরিশেক চওড়া বাঁশের ফ্রেমের উপরে নীল-সাদা কাপড় সাঁটছেন। অন্য পাশে সাদা পোশাকের বাজনদারেরা ব্যস্ত মনোযোগী মহড়ায়। হাওড়া স্টেশনের ভিতরে ক্যাবওয়ের দু’পাশে ৮ ও ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে তখন নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে চূড়ান্ত তৎপর রেলের পদস্থ কর্তা থেকে রেল পুলিশ, রাজ্য পুলিশ, হাওড়া সিটি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী।

বুধবার তখন সকাল আটটা।

নয়াদিল্লি-হাওড়া রাজধানী এক্সপ্রেসে সপরিবার, সবান্ধব আসার কথা রাজ্যের ভাবী রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর। স্টেশনে তাঁকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সেই ভোর ছ’টা থেকে।

কিন্তু যাঁর জন্য এত আয়োজন, তিনি কোথায়?

রাজধানী এক্সপ্রেস হাওড়ায় পৌঁছনোর নির্ধারিত সময় বেলা ১০টা। ঘড়ির কাঁটা পেরিয়ে যায়, ট্রেন আর আসে না। অবশেষে খবর এল, গয়ার কাছে রেললাইনে বিস্ফোরণের জন্য রাজধানীর পৌঁছতে দেরি হবে।

কত দেরি? কেউ জানে না।

শেষ পর্যন্ত ট্রেন ঢুকল প্রায় বিকেল সওয়া ৪টেয়। নতুন রাজ্যপালকে পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানালেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। হাজির মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রও। স্টেশনেই রাজ্যপালকে গার্ড অব অনার দেওয়া হল। তার জন্য সকাল থেকেই স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের জওয়ানরা।

এ সব যখন চলছে, তখন ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে রাজ্যপালের ট্রেনের অন্য যাত্রীদের। একে তো দীর্ঘক্ষণ ট্রেন লেট, তার পর স্টেশনে নেমেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি। রাজধানী স্টেশনে ঢোকার প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগে থেকেই ৮ ও ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অন্য ট্রেন ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ক্যাবওয়েতে গাড়ি পার্কিংয়েও ছিল নিষেধাজ্ঞা।

রাজ্যপাল নামার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় স্বাগত-অনুষ্ঠান। চারপাশে তখন থিকথিকে নিরাপত্তাবাহিনী। সাজো সাজো রব। তার মধ্যে পড়ে গিয়ে আটকে যান সদ্য রাজধানী থেকে নামা অন্য যাত্রীরা। প্ল্যাটফর্মে ঠায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই কেটে যায় বেশ খানিকটা সময়। স্টেশনের বাইরে বেরোতে বেশ বেগ পেতে হয় তাঁদের।

রাজ্যপাল স্টেশন ছাড়ার পরেই ক্ষোভ উগরে দেন অনেক যাত্রী। ফরিদাবাদ থেকে সস্ত্রীক কলকাতায় ফেরা বস্ত্র ব্যবসায়ী নন্দলাল অগ্রবাল বলেন, “টানা পাঁচ ঘণ্টা ট্রেন দাঁড়িয়ে রইল মোগলসরাইয়ে। তখন রেলের পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। তার ওপর স্টেশনে এসে এই ঝঞ্ঝাট।” এলগিন রোডের বাসিন্দা রাখীপূর্ণিমা দাশগুপ্তের অভিযোগ, ট্রেন বহুক্ষণ আটকে থাকা সত্ত্বেও যাত্রীদের কোনও পরিষেবা দেওয়ার কথা মাথায় আসেনি রেল কর্তৃপক্ষের। খাবার যা দেওয়া হয়েছে, তা-ও যৎসামান্য। চরম অসন্তুষ্ট হয়ে তিনি বলেছেন, এর পরে আর কখনও রাজধানীতেই চড়বেন না।

সৈয়দ ইরফান নামে আর এক যাত্রীর সখেদ মন্তব্য, “স্টেশনে পৌঁছে আধ ঘণ্টা আটকে থাকার পরে জানলাম, রাজ্যপাল এসেছেন আমাদের ট্রেনে। আমাদের তো সময়ের কোনও দাম নেই!”

welcome of new governor westbengal keshrinath tripathi howrah station
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy