গুয়াহাটির আদালতে সুজানা বিবি। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
তিন দিন আগে পুলিশ তাঁদের ধরেছিল। এমনকী, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও খোদ পুলিশ সুপার তখন বিবৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু খাগড়াগড় কাণ্ডে পলাতক অভিযুক্ত, বরপেটার শাহনুর আলমকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বুধবার পাকড়াও তার দুই সম্পর্কিত ভাইকে শনিবার ছেড়ে দিয়ে পুলিশ এখন দাবি করছে, তাঁদের আদৌ গ্রেফতারই করা হয়নি।
পুলিশ জানায়, ওই দু’জনের নাম, শাহনুর আলি ও আবদুর নুর। অসম পুলিশের এডিজি (স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ) পল্লব ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, “ওই দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। কিন্তু জেহাদি কার্যকলাপে জড়িত কিংবা জঙ্গি সংস্রবের কোনও প্রমাণ তাঁদের বিরুদ্ধে মেলেনি। তাই, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” তা হলে পুলিশের কোন বক্তব্যটা সঠিক, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
শাহনুরের হদিস পেতে এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা) পাঁচ লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষণা করেছে। শাহনুরের স্ত্রী সুজানা বিবিকে গুয়াহাটির সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ৭ নভেম্বর সুজানাকে গ্রেফতার করা হয়। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, জামাতুল মুদাহিদিন বাংলাদেশ অসমে মহিলা জঙ্গিদের একটি দল তৈরি করেছে এবং তার মাথা সুজানা।
১৮ নভেম্বর রাত আড়াইটে নাগাদ ধুবুরির ফকিরগঞ্জের নামাসেরশো গ্রামে শাহনুরকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিল পুলিশ। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ওই গ্রামে ১৩ নভেম্বর থেকে শাহনুর পালা করে তার দুই কাকার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ছিল বলে পুলিশ জানতে পারে। শাহনুরের এক কাকা, পেশায় কৃষক আবদুর হামিদ মিয়াঁরই দুই ছেলে আলি আর নুর। ১৯ নভেম্বর ধুবুরির পুলিশ সুপার মৃদুলানন্দ শর্মা বলেন, “শাহনুর একটুর জন্য জালে না পড়লেও তাকে নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া ও তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার অভিযোগে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তিনি এও জানান, ম্যারাথন জেরায় ধৃতদের কাছ থেকে অনেক নতুন তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তা হলে ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নিজেদের কাছে রাখার পর শনিবার ওই দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হল কেন?
ধুবুরির এসপি-র বক্তব্য, “শাহনুর ও আবদুরকে গ্রেফতার করেই গুয়াহাটিতে পাঠানো হয়েছিল। তার পর ওখানে কী হয়েছে, সেটা আমি বলতে পারব না।” এসপি আরও বলেন, “ওই দু’জন রাজসাক্ষী হতে রাজি হয়েছিল। ওরা আমাদের নজরদারিতে থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর কিছু জানা নেই।”
পুলিশের অন্দরেই এই সমন্বয়ের অভাব নিয়ে বিস্মিত বাহিনীর অনেক অফিসারও। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, হয় বাহিনীর বিভিন্ন পদস্থ অফিসারদের মধ্যে সমন্বয় নেই, নয়তো ওই দু’জনকে বিশেষ কোনও কারণে পুলিশ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy