আনন্দবাজার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে লেখক তসলিমা নাসরিন ফেসবুক পেজে তাঁর কিছু ভাবনা পোস্ট করেছেন। এখানে সেটি হুবহু তুলে ধরা হল।
হঠাৎ চোখে পড়ল আনন্দবাজারের একটি খবর। ৭ মার্চে ছাপা হওয়া খবর। পরদিন ৮ মার্চ। নারীদিবস। তা খবরটার শিরোনাম কী? শিরোনাম ‘মহিলাদের গোপনাঙ্গের দুর্গন্ধের ৮ টি কারণ’। নারীদিবসে নারীদের জন্য পুরুষের প্রতিষ্ঠান থেকে চমৎকার এক উপহার বটে!
সেই আদিকাল থেকে পত্রিকায়-ম্যাগাজিনে পড়ে আসছি, রেডিও টিভিতে শুনে আসছি মহিলাদের গোপনাঙ্গে নাকি বিষম দুর্গন্ধ। এই দুর্গন্ধ দূর করতে পুরো মানবজাতি আদা জল খেয়ে লেগেছে। কত রকমারি কারণ যে বের করা হচ্ছে দুর্গন্ধের! কত রকমারি সমাধানও বের করা হচ্ছে! যোনীর ন্যাচারাল গন্ধকে ‘দুর্গন্ধ’ নামে ডাকা হয়। এই গন্ধ বিদেয় করতে কত যে ক্ষতিকর কেমিক্যাল বাজারে আনা হয়েছে!
কেউ শুনেছে পুরুষাঙ্গের দুর্গন্ধের কথা? আমি তো এ যাবৎ যত পুরুষাঙ্গ দেখেছি, সবগুলো থেকে দুর্গন্ধ বেরিয়েছে। দুর্গন্ধে আমার বমি আসে আসে অবস্থা হয়েছে। পুরুষাঙ্গের দুর্গন্ধ নিয়ে কেন মিডিয়াতে লেখালেখি, বলাবলি হয় না? কেন গবেষণা হয় না কী কী কারণে পুরুষের গোপনাঙ্গে দুর্গন্ধ হয়, কী করে ওদের বিচ্ছিরি দুর্গন্ধ দূর করা যায়, এ সব নিয়ে!
নারীকেই চিহ্নিত করা হয় ডাইনি বলে, অপয়া বলে, নরকের দ্বার বলে, নোংরা আর দুর্গন্ধের আধার বলে। যেন নারীরা লজ্জায় সংকুচিত হয়, ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে, যেন আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, যেন নিজেকে ঘৃণা করতে শেখে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy