Advertisement
১৬ জুন ২০২৪

মাকে খুঁজতে ফেসবুকে আবেদন মেয়ের

রেস্তোরাঁর বাথরুমের এক কোণে লাল সোয়েটারে মোড়া ছোট্ট শরীরটা পড়েছিল। তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় তিন দশক। ছোট্ট শরীরটা আর ছোট নেই। ২৭ বছরের তরুণী। তিন সন্তানের মা। নাম, ক্যাথরিন ডেপ্রিল। কিন্তু তাঁর নিজের মা কোথায়? সেই জন্মদাত্রী মাকে আজও খুঁজে বেড়াচ্ছেন ডেপ্রিল।

সংবাদ সংস্থা
পেনসিলভেনিয়া শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০২:৩৫
Share: Save:

রেস্তোরাঁর বাথরুমের এক কোণে লাল সোয়েটারে মোড়া ছোট্ট শরীরটা পড়েছিল। তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় তিন দশক।

ছোট্ট শরীরটা আর ছোট নেই। ২৭ বছরের তরুণী। তিন সন্তানের মা। নাম, ক্যাথরিন ডেপ্রিল। কিন্তু তাঁর নিজের মা কোথায়? সেই জন্মদাত্রী মাকে আজও খুঁজে বেড়াচ্ছেন ডেপ্রিল। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এ মাসের গোড়ায় ফেসবুকে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন ডেপ্রিল। তাঁর হাতে ধরা একটা পোস্টার। যাতে লেখা: ‘আমার জন্মদাত্রী মাকে খুঁজছি। ১৯৮৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পেনসিলভেনিয়ার অ্যালেনটাউনের বার্গার কিং রেস্তোরাঁর বাথরুমে জন্মের কয়েক ঘণ্টা পরেই আমায় তিনি রেখে চলে যান। তাঁকে খুঁজে বার করতে প্লিজ পোস্টটা শেয়ার করো সবাই।’

ছবি পোস্টের এক সপ্তাহের মধ্যেই ফেসবুকে সাড়ে ২৮ হাজার বার শেয়ার হয়েছে সেটি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সাড়া দিলেও সাড়া মেলেনি ডেপ্রিলের জন্মদাত্রী মায়ের।

এখন পেনসিলভেনিয়ার সাউথ হোয়াইটহল টাউনশিপে থাকেন বছর ২৭-এর তরুণী। হারিয়ে যাওয়া মাকে কত কথা যে বলার আছে তাঁর। ডেপ্রিল বলেন, “আমায় পৃথিবীর আলো দেখানোর জন্য মাকে ধন্যবাদ দিতে চাই আমি। তিনি আমায় নষ্ট তো করেননি।” মাকে বলতে চাই, দেখো কত বড় হয়ে গেছি! বলেন ডেপ্রিল। আর যে প্রশ্নটা তাঁকে সব সময় তাড়া করে বেড়ায়, সেটাও জানাতে চান মাকে। “মা কেন এটা করেছিলেন? কেন মায়ের মনে হল না আমায় কোনও হাসপাতালে রেখে আসা উচিত? কতটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে মা যাচ্ছিলেন তিনি সে সময়?” এমন সব কিছুই জন্মদাত্রীর কাছে জানতে চাইবেন ডেপ্রিল।

জন্মদাত্রী মা যে তাঁকে ফেলে চলে গিয়েছিলেন, সেটা ১২ বছর বয়সে জানতে পারেন ডেপ্রিল। স্কুলে নিজের পরিবার নিয়ে লিখতে বলা হয়েছিল। ডেপ্রিল বাড়ি ফিরে পালকপিতা কার্ল হলিসের কাছে জানতে চান কে তাঁর আসল বাবা-মা? তাঁর সামনে একটা স্ক্র্যাপবুক তুলে ধরেন কার্ল। যাতে ১৯৮৬ সালের একটা খবরের কাগজের টুকরো আটকানো। তাতেই লেখা ছিল, কী ভাবে বার্গার কিং রেস্তোরাঁর লোকজন বাচ্চার কান্না শুনে বাথরুমের মেঝে থেকে ডেপ্রিলকে উদ্ধার করেন।

সেই খবর পড়ে স্তব্ধ হয়ে যান ডেপ্রিল। বললেন, “তখন সত্যিই ভাবতে পারছিলাম না কী ভাবে কোনও মা তাঁর শিশুকে ফেলে রেখে ওই ভাবে চলে যেতে পারে!” বড় হয়ে মায়ের জন্য করুণা হয় মেয়ের। তিনি বোঝেন, মায়ের হয়তো সত্যিই কোনও অসুবিধা ছিল। আর তাঁর খোঁজে তাঁকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন পালিকা মা ব্রেন্ডা। ফেসবুকে প্রচার চালানোর বুদ্ধিটা ব্রেন্ডাই তাঁকে দিয়েছেন। পুরনো মায়ের সঙ্গে যদি আরও ভাইবোনের খোঁজ পান ডেপ্রিল?

জন্মদাত্রী মাকে কেমন দেখতে? কোনও ভাই-বোন থাকে যদি, তাঁরা কি আমার মতো দেখতে? ডেপ্রিলের তা জানতে ইচ্ছে করে। কিন্তু অনেকেই হতাশ করে বলছেন, শাস্তি পাওয়ার ভয়ে তাঁর আসল মা হয়তো সামনে আসবেন না। সে সবে কান দিতে নারাজ ডেপ্রিল। কবে সাড়া দেবে মা? অপেক্ষায় মেয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pennsylvania facebook katherine depril
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE