Advertisement
E-Paper

USA: আরবেরি হত্যায় যাবজ্জীবন সাজা তিন শ্বেতাঙ্গের

২০২০ সালে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক আহমদ আরবেরিকে গুলি করে খুনের ঘটনায় জর্জিয়ার এক আদালত গত কাল সাজা ঘোষণার পরে ফের এই স্লোগান মুখরিত বিশ্ব জুড়ে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৬
আহমদ আরবেরি।

আহমদ আরবেরি।

ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার! ২০২০ সালে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক আহমদ আরবেরিকে গুলি করে খুনের ঘটনায় জর্জিয়ার এক আদালত গত কাল সাজা ঘোষণার পরে ফের এই স্লোগান মুখরিত বিশ্ব জুড়ে। শ্বেতাঙ্গ পিতা-পুত্র গ্রেগরি ম্যাকমাইকেল (৬৬) ও ট্রাভিসকে (৩৫) গত কাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জেলে থাকাকালীন দু’জন প্যারোল পাবে না বলেও জানিয়েছে আদালত। আর এক দোষী ম্যাকমাইকেলদের প্রতিবেশী উইলিয়াম ব্রায়ানকে (৫২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও ৩০ বছর সাজা পেরোনোর পরে প্যারোল পাওয়ার সুযোগ থাকছে তার।

বিচারক টিমোথি ওয়ামসলে জানিয়েছেন, খুনের পরেও পিতা-পুত্রের কোনও অনুশোচনা ছিল না। সাজা ঘোষণার আগে আরবেরির পরিজন আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন, ওই তিন জনকে যেন দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হয়। এই রায়ে ন্যায়বিচার পেলেন বলেই মনে করছেন তাঁরা। আরবেরির মা আদলতকক্ষে বসেই বলেন, ‘‘এই রায়ে আমার ছেলে ফিরবে না, কিন্তু আমাদের জীবনের এক যন্ত্রণাময় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল।’’ অন্য দিকে সামাজিক অধিকার আন্দোলনকর্মীরাও জানিয়েছেন, আজকের রায় বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে এক গুরুত্বপূর্ণ জয়।

২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বছর পঁচিশের আরবেরি জগিং করতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময়ে গ্রেগরি, ট্রাভিস এবং ব্রায়ান মিলে জর্জিয়ার ব্রুনসউইকের বাসিন্দা আরবেরিকে খুন করে। গ্রেগরি দাবি করেছিল, এলাকায় চুরির ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। সিসি ক্যামেরায় চোরের যে চেহারা দেখা গিয়েছিল, তার সঙ্গে মিল রয়েছে আরবেরির। তাই তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আরবেরি বাধা দেওয়ায় আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়।

তবে আরবেরির খুনের ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। ভিডিয়োয় দেখা যায়, ফুটপাত ধরে জগিং করছিলেন আরবেরি। সেই সময়েই একটি গাড়িতে গ্রেগরি ও ট্রাভিস এবং অন্য গাড়িতে ব্রায়ান তাঁকে অনুসরণ করে, কটুক্তিও করতে থাকে। এর পরে তাদের সঙ্গে আরবেরির বচসা শুরু হয়। হঠাৎই গ্রেগরি বন্দুক বার করে গুলি চালিয়ে দেয়। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। ৭ মে গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে। দীর্ঘ শুনানির পরে রায় দেন বিচারক। আহমদের বাবা বলেছিলেন, ‘‘আমার ছেলেকে মারার একটাই কারণ— সে কৃষ্ণাঙ্গ!’’

আজ সাজা ঘোষণার আগে যখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন আরবেরির পরিবার, সেই সময়ে বিচারক বলেন, ‘‘আমরা সকলেই নিজেদের কাজের জন্য দেশের কাছে দায়বদ্ধ... প্রত্যেককেই আইন মেনে চলতে হবে। ’’ এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছেন দোষীদের আইনজীবী।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের মে মাসে মিনিয়াপোলিসের রাস্তায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিনের হাঁটুর চাপে নিহত হন কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড। সেই সময়েই কৃষ্ণাঙ্গের অধিকার আন্দোলন তীব্র রূপ নেয়। যা আমেরিকার গণ্ডি পেরিয়ে গোটা বিশ্বে আলোড়ণ ফেলেছিল। তবে ফ্লয়েডকে খুনের কয়েক মাস আগে আরবেরির হত্যাই যেন বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছিল। তাই শুধু ফ্লয়েড মামলায় শভিনের দোষী সাব্যস্ত হওয়াই নয়, আরবেরি হত্যার অপরাধীদের সাজাও যেন সেই বার্তা দেয়, ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’!

usa Black lives matter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy