গাজ়ায় দখল নিতে আরও ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েল। শুক্রবার ভোরের আলো ফোটার আগে থেকেই গাজ়ায় হামলা চালাতে থাকে ইজ়রায়েলি সেনা। এ দিনের হামলায় সাত শিশু-সহ অন্তত ৪৪ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। সূত্রের খবর, এর মধ্যে গাজ়া সিটিতেই মৃতের সংখ্যা ৩০। আহতের সংখ্যা ২০। আহতের তালিকায় রয়েছে তিন মাসের শিশুও।
হামাসের মুখপাত্র মেহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, গাজ়া সিটির বেশ কিছু এলাকার পাশাপাশি, শহরের উপকণ্ঠে থাকা বাড়িছাড়া প্যালেস্টাইনিদের তাঁবু এবং আবাসিক ভবনগুলি লক্ষ্য করেই মূলত হামলা চালানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নাদাভ শোনানি গত কাল জানিয়েছিলেন, অভিযান শুরুর সময়ে কোনও রকম পূর্ব ঘোষণা করা হবে না। অন্য দিকে, সেনার আর এক মুখপাত্র এফি ডিফ্রিন দাবি করেছেন, ইজ়রায়েল ইতিমধ্যেই গাজ়ার ৪০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে।
পশ্চিম গাজ়া সিটির বাসিন্দা আহমেদ আবু উতফা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বহুতল ও আবাসিক ভবনে ইজ়রায়েল বোমা বর্ষণ শুরু করেছে। বাসিন্দারা প্রবল আতঙ্কিত। কেউ জানেন না কোথায় যাবেন। আহমেদ বলেন, “আমার সন্তানরা আতঙ্কে রয়েছে। আমিও তাই। কোনও নিরাপদ জায়গা নেই। আমরা এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছি।”
শুক্রবার গাজ়ায় বহুতল ভবন মুশতাহা টাওয়ার গুড়িয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক কিশোর জানিয়েছে, সে খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। তখনই পাশে থাকা মুশতাহা টাওয়ারে হামলা করা হয়। ভবনটি মুহূর্তের মধ্যে ধূলিসাৎ হয়ে যায়। এর ফলে বেশ কয়েক জন আহত হন। তাঁদের আল-শিফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের এক চিকিৎসকের জানিয়েছেন, আহতদের চাপে তাঁরা বিধ্বস্ত। বহুতলটিতে ধ্বংসের ফলে তার পাশে থাকা গৃহহীনদের তাঁবুগুলিও ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওসামা আল-মাখমারা নামে এক প্যালেস্টাইনি জানিয়েছেন, এ দিন সকাল থেকেই ইজ়রায়েলি সেনা লাঠি এবং ছুরি দিয়ে আক্রমণ করতে শুরু করে। আহতদের মধ্যে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও রয়েছে। এমনকি তিন মাসের এক শিশুও রয়েছে আহতের তালিকায়। তিনি আরও জানিয়েছেন, অবৈধ দাবি করে ২৫টিরও বেশি বাড়ি, কৃষি পরিকাঠামো এবং জলের কুয়ো ভেঙে দিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)