পঞ্চাশ, ষাট বা সত্তর হাজার নয়, ইজ়রায়েলি সেনার একতরফা হামলা এবং ইজ়রায়েল সরকারের তরফে ইচ্ছাকৃত ভাবে গাজ়ায় ত্রাণ পৌঁছতে না দেওয়ায় গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত গাজ়ায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬ লক্ষ ৮০ হাজার জনের! এবং তার মধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ শিশু! গত কয়েক মাসে ত্রাণের লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ইজ়রায়েল যত জনকে মেরেছে, তাতে এই সংখ্যা সাত লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে বলে অনুমান। অস্ট্রেলিয়ার ‘এরিনা ম্যাগাজ়িন’-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে এমনটাই দাবি করেছেন রিচার্ড হিল এবং গিডিয়ন পলিয়া নামের দুই গবেষক। এর আগে গত বছর হার্ভার্ডের একটি গবেষণা এবং ল্যানসেট পত্রিকার গবেষণাতেও গাজ়ায় নিহতের সংখ্যা দু’লক্ষের কাছাকাছি বলে দাবি করা হয়েছিল। এ বারে নতুন গবেষণায় নিহতের সংখ্যা দেখে ইজ়রায়েলের উপরে নিষেধাজ্ঞা এবং সে দেশের সরকারি ও সেনাকর্তাদের গ্রেফতারির দাবিতে সুর চড়াতে শুরু করেছে বিশ্বের নানা দেশ।
দু’বছর আগে, ৭ অক্টোবরে ইজ়রায়েলের মাটিতে হামাসের হামলার পরে গাজ়ায় হামাস নিধন ও অপহৃতদের মুক্তির জন্য শুরু হওয়া ইজ়রায়েলি হানায় প্রথম থেকেই সাধারণ মানুষের, বিশেষত শিশু ও মহিলাদের মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল আন্তর্জাতিক মহলে। বিশেষত যে ভাবে সমাজমাধ্যমে গাজ়ার ধ্বংসস্তূপের ছবি এবং ত্রাণের অভাবে খেতে না পাওয়া শিশুদের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা নিয়ে নানা সংশয় তৈরি হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের অনেকের দাবি, গাজ়ায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা বেশ কয়েক লাখ।
গত কয়েক দশকে বিভিন্ন যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মৃত্যুর অনুপাত সংক্রান্ত গবেষণার সূত্র ধরে যুদ্ধের মোট বলির হিসাব তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন রিচার্ড ও গিডিয়ন। ওই দুই গবেষক জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পরে প্রথম ন’মাসে গাজ়ায় সহিংস মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট-এ গত জানুয়ারিতে প্রকাশ হয়েছে, সেটিকে প্রাথমিক ভিত্তি করে হিসাব এগিয়েছেন তাঁরা।
অস্ট্রেলিয়ার পত্রিকাটির গবেষণার রিপোর্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রাক্তন চিফ অব স্টাফ হার্জ়ি হালেভি সম্প্রতি নিজেই জানিয়েছেন, গাজ়ায় আইডিএফ-এর হামলায় মৃত ও জখমের সংখ্যা দু’লক্ষের বেশি। যুদ্ধের প্রথম ১৭ মাস আইডিএফ-এর নেতৃত্ব দিয়ে গত মার্চে অবসর নিয়েছেন তিনি। সংবাদ সংস্থা
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)