Advertisement
E-Paper

সুইসাইড নোট লিখতে দিয়ে বিতর্কের মুখে স্কুল

মানসিক অশাস্তি বা অবসাদে ভুগে বাচ্চারা আত্মঘাতী হয়েছে, এমন ঘটনা বহু বার ঘটছে। এই ধরনের ঘটনা যাতে এড়ানো যায়, তার জন্য বার বার অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে বাচ্চাদের প্রতি নিজদের ব্যবহারের প্রতি নজর রাখতে বলা হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৭ ০৩:৩৭
‘সুইসাইড নোটের’ ওই হোমওয়ার্ক লিখতে দিল ব্রিটেনের একটি স্কুল। ছবি: সংগৃহীত।

‘সুইসাইড নোটের’ ওই হোমওয়ার্ক লিখতে দিল ব্রিটেনের একটি স্কুল। ছবি: সংগৃহীত।

মরার আগে শেষ বারের মতো প্রিয়জনদের কী বলবে? পড়ুয়াদের এই হোমওয়ার্কই করে আনতে বলেছিল। আর ‘সুইসাইড নোটের’ ওই হোমওয়ার্ক প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছে ব্রিটেনের একটি স্কুল। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

লন্ডনের কিডব্রুকের টমাস ট্যালিস স্কুলের ঘটনা। সিলেবাসের অংশ হিসেবে শেক্সপিয়ারের ম্যাকবেথ পড়ানো হচ্ছিল কিশোর-কিশোরীদের। সূত্রের খবর, সে দিন নাটকে লেডি ম্যাকবেথের আত্মহত্যার অংশটাই পড়ানো হয়েছিল ক্লাসে। অভিযোগ, তার পরেই ৬০ জন পড়ুয়ার ক্লাসকে পরের দিনের হোমওয়ার্কে সুইসাইড নোট লিখে আনতে বলেন শিক্ষিকা। বুঝিয়ে বলেন, কী কারণে আত্মহত্যা, চলে যাওয়ার আগে কাছের মানুষদের জন্য শেষ কথা কী হবে, তা-ও স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে ওই চিঠিতে। ওই হোমওয়ার্ক বাড়ি পৌঁছতেই বিচলিত হয়ে পড়েন অভিভাবকেরা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষমাপ্রার্থী স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও স্কুলের তরফে জানানো হয়।

এক অভিভাবক জানাচ্ছেন, তাঁর মেয়ে ওই ক্লাসেরই ছাত্রী। এবং ওই সুইসাইড নোট লিখতে বলায় প্রচণ্ড ভাবে মানসিক চাপে রয়েছে সে। তাঁর কথায়, ‘‘আত্মহত্যার কারণেই তিন বন্ধুকে হারিয়েছে আমার মেয়ে। আত্মহত্যা বিষয়টিই ওই কাছে ভীষণ ভয়ের। সেখানে এমন কিছু লিখতে বলায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে মেয়ে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মেয়ে না হয় বাড়ি এসে বলেছে, আমি বিশ্বাসী এমন অনেক বাচ্চা রয়েছে যারা বিষয়টি নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলেনি। নিজের মনেই গুমরে মরছে।’’ স্কুলের এই পদক্ষেপকে দুর্ভাগ্যজনকও বলেছেন তিনি। তবে তিনি একা নয়। বিষয়টি সামনে আসতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বহু অভিভাবকই। অভিযোগ, দু’টি ক্লাসে ইতিমধ্যেই ওই হোমওয়ার্ক করানো হয়ে গিয়েছে। তৃতীয় বারেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

আরও পড়ুন: তেল লুঠে ঢল, ট্যাঙ্কার ফেটে ছাই ১৫১ জন

মানসিক অশাস্তি বা অবসাদে ভুগে বাচ্চারা আত্মঘাতী হয়েছে, এমন ঘটনা বহু বার ঘটছে। এই ধরনের ঘটনা যাতে এড়ানো যায়, তার জন্য বার বার অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে বাচ্চাদের প্রতি নিজদের ব্যবহারের প্রতি নজর রাখতে বলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কী ভেবে পড়ুয়াদের হোমওয়ার্কে ওই সুইসাইড নোট লিখে আনতে বলা হলো, তা নিয়েই ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।

স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা ক্যারোলিন রবার্টস জানান, তিনি প্রথমে বিষয়টি জানতেন না। এক অভিভাবক তাঁকে ফোন করে অভিযোগ জানানোর পরে বিষয়টি তাঁর নজরে আসে। তিনি বলেন, ‘‘এক জন অভিভাবক ফোন করে আমাকে জানান, ম্যাকবেথ পড়ানোর সময় বাচ্চাদের হোমওয়ার্কে ‘সুইসাইড নোট’ লিখে আনতে বলা হয়েছে।’’ তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, এই ঘটনায় অভিভাবকদের বিচলিত হয়ে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক। এর পরেই ওই অভিভাবককে স্কুলে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন ওই প্রধানশিক্ষিকা।

ক্যারোলিন বলেন, ‘‘এই বিষয়ে বৈঠকও হয়। সেখানে উপস্থিত থাকতে বলা হয় অভিভাবকদের। হোমওয়ার্কে সুইসাইড নোট লিখতে দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের কাছে স্কুলের তরফে ক্ষমা চেয়েছি। তাঁরা বিষয়টি বুঝেছেন।’’ তিনি আরও জানান, যে শিক্ষিকা ওই হোমওয়ার্ক দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্কুলে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা নিয়েও অভিভাবকদের আশ্বাস দিয়েছেন ক্যারোলিন।

Suicide Note Home Work Students সুইসাইড নোট হোমওয়ার্ক School Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy