১৭ বছর পরে দেশে ফিরেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফোন করলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পরিবারের সদস্য এবং দলীয় নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পরেই বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক ফোন করেন ইউনূসকে।
১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে ব্রিটেনে বিএনপি-র এক আলোচনাসভায় তারেক জানিয়ে দেন যে, ২৫ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশে ফিরছেন। সেইমতো বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমান ধরেন তিনি। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে (স্থানীয় সময় অনুসারে) ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে তারেকের বিমান।
বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানাতে বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ঢল নেমেছিল। কিন্তু কেন হঠাৎ ইউনূসকে ফোন করলেন তারেক? দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, খালেদা-পুত্র ফোনে প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁর দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান।
গত ১৭ জুন লন্ডন সফরে গিয়ে তারেকের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ইউনূস। সূত্রের খবর, সেখানেই তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে নির্বাচন এবং জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট হবে বাংলাদেশে। বিএনপির তরফে ইতিমধ্যেই ২৭২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। চেয়ারপার্সন খালেদা ফেনী–০১, বগুড়া–০৭ এবং দিনাজপুর–০৩ আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক লড়বেন বগুড়া-৬ আসনে।
তবে প্রার্থিপদ ঘোষণা হলেও এখনও বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম নেই তারেকের। সূত্রের খবর, শনিবার নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম নথিভুক্ত করার দাবি জানাবেন। গত ১৭ বছর ধরে বিদেশে ছিলেন তারেক। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জমানায় তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার ব্রিটেনে চলে গিয়েছিলেন। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জমানায় ২১ অগস্ট গ্রেনেড হামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি-সহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ মামলা থেকে তারেককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে ফিরলেও গ্রেফতার হওয়ার কোনও ঝুঁকি নেই তাঁর।