এশিয়ায় আধিপত্য করুক চিন। ইউরোপের দেশগুলি নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিক। বাকি পশ্চিম গোলার্ধ জুড়ে কর্তৃত্ব বজায় রাখবে আমেরিকা। আগামী দিনে বিশ্ব জুড়ে এ ভাবেই ক্ষমতার বিন্যাস চায় আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। সম্প্রতি প্রকাশিত সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনায় (এনএসএস) এমনই বার্তা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
আমেরিকায় কোনও নতুন সরকার ক্ষমতায় এলে অন্তত এক বার এনএসএস ঘোষণা করে। আগামী দিনে বিশ্ব জুড়ে ক্ষমতার বিন্যাস নিয়ে তারা কী ভাবছে, নতুন সরকারের সামরিক কৌশল কী হতে চলেছে— এ সবই ওই পরিকল্পনায় ব্যাখ্যা করা হয়। প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৭ সালে এনএসএস প্রকাশ করেছিল ট্রাম্প সরকার। ২০২২ সালে এনএসএস ঘোষণা করেছিল পরবর্তী জো বাইডেন প্রশাসন। গত সপ্তাহে ৩৩ পাতার সাম্প্রতিকতম এনএসএস-টি ঘোষণা করেছে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প সরকার।
একই সুর শোনা গিয়েছে আমেরিকান প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথের গলায়। ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালির রোনাল্ড রেগান জাতীয় গ্রন্থাগারে সামরিক বিভাগের একটি বার্ষিক সম্মেলনে হেগসেথ ট্রাম্প সরকারের বিশ্বনীতি ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, আগামী দিনে চিন সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় তারা দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করবে। কিন্তু বেজিংয়ের সঙ্গে কোনও রকম সংঘাতে যেতে চায় না আমেরিকা। দিনে দিনে চিনের প্রতিপত্তি যে বাড়ছে তা এক রকম মেনে নিয়েছে তারা। তাই আগামী দিনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিন ক্ষমতা কায়েম করলে আমেরিকার আপত্তি থাকবে না।
দ্বিতীয়ত, ইউরোপ নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিক।
তৃতীয়ত, পশ্চিম গোলার্ধে আধিপত্য জারি রাখবে আমেরিকা। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, কানাডা, গ্রিনল্যান্ড নিয়ে আরও আগ্রাসী নীতি নেবে তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত চার দশক ধরে চলে আসা আমেরিকার বিদেশ নীতির থেকে ট্রাম্পের এই নয়া নীতি অনেকটাই আলাদা।
আমেরিকার এই ঘোষণার পরে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিয়ো কোস্টা ইউরোপের দেশগুলিকে সাবধান করে বলেছেন, নেটোয় আমেরিকার পরিবর্ত শক্তি খুঁজে নেওয়ার সময় এসে গিয়েছে। প্যারিসে এক সভায় তিনি জানান, ইউরোপের সিদ্ধান্ত নেবে ইউরোপের দেশগুলিই। এ বিষয়ে বাইরের কোনও শক্তির নাক গলানো বন্ধ করতে নিজেদের মধ্যে বন্ধন আরও পোক্ত করতে হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)