Advertisement
E-Paper

কাশ্মীরে নাক গলাব না, বার্তা আমেরিকার

ট্রাম্পের এই ভারত স্তুতিতে অশনি সংকেত দেখেছিল ইসলামাবাদ। জঙ্গিদের মদত দেওয়ার প্রশ্নে ট্রাম্পের সমালোচনার একটি সরকারি জবাব দিয়েছে পাক বিদেশ মন্ত্রক। সেখানেই টেনে আনা হয়েছে কাশ্মীর প্রসঙ্গ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০২
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।— ফাইল চিত্র।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।— ফাইল চিত্র।

সপ্তাহের শুরুতেই নয়া আফ-পাক নীতি ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেখানে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীকে প্রশ্রয় দেওয়া নিয়ে তিনি এক হাত নিয়েছেন ইসলামাবাদকে। প্রত্যুত্তরে পাকিস্তান কিন্তু চাইছে নয়া মার্কিন নীতির সঙ্গেই কাশ্মীর সমস্যাকে জুড়ে দেওয়ার। তবে মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, কাশ্মীর নিয়ে কোনও ভাবেই নাক গলাবে না আমেরিকা। তারা আগেও চাইত, এখনও চায়, ভারত-পাকিস্তান আলোচনার টেবিলে বসে এই সমস্যার সমাধান করুক। আফগানিস্তান নীতির সঙ্গে কাশ্মীরকে জোড়ার প্রশ্নই ওঠে না।

গত মঙ্গলবার আফগানিস্তান নিয়ে নতুন মার্কিন নীতির ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সেখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ভারত আর পাকিস্তানের নামও। এক দিকে, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে মদত দেওয়ার জন্য যেমন তিনি ইসলামাবাদকে সরাসরি সতর্ক করেছেন, সেই সঙ্গেই নতুন আফগানিস্তান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকারও প্রশংসা করা হয়েছে। টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘২০০১ সাল থেকে ভারত আফগানিস্তানকে প্রায় তিরিশ লক্ষ ডলার আর্থিক সাহায্য করেছে। আমরা তার প্রশংসা করি। ভবিষ্যতেও আফগানিস্তানে নয়া পরিকাঠামো গঠনের জন্য ভারতকে পাশে পাওয়া যাবে বলে আমরা মনে করি। কারণ ওই এলাকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভারতের ভূমিকা অপরিহার্য।’’ ট্রাম্পের স্পষ্ট বক্তব্য, আফগানিস্তান নীতিতে সদর্থক ভূমিকা নিক ভারত।

আরও পড়ুন: নাম-হীন জীবন থেকে মুক্তি চান আফগান মেয়েরা

ট্রাম্পের এই ভারত স্তুতিতে অশনি সংকেত দেখেছিল ইসলামাবাদ। জঙ্গিদের মদত দেওয়ার প্রশ্নে ট্রাম্পের সমালোচনার একটি সরকারি জবাব দিয়েছে পাক বিদেশ মন্ত্রক। সেখানেই টেনে আনা হয়েছে কাশ্মীর প্রসঙ্গ। ওই বিবৃতিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে কাশ্মীর নিয়ে অনিশ্চয়তার মেঘ না কাটলে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতাবস্থা আসা সম্ভব নয়। এর আগেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর সমস্যা তুলে ধরার চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। রাষ্ট্রপুঞ্জ যাতে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, বারবার সেই অনুরোধ করেছে তারা। হোয়াইট হাউসে বিদেশ দফতরের মুখপাত্রকে সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘‘কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে আমেরিকার ভূমিকাটা ঠিক কী হতে চলেছে?’’ উত্তরে ওই মুখপাত্র পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘আমেরিকার কাশ্মীর নীতি কোনও ভাবেই বদলায়নি। আগেও যা ছিল, এখনও তা-ই আছে। আমেরিকা এখনও চায়, ভারত-পাকিস্তান একসঙ্গে আলোচনায় বসে এই সমস্যার সমাধান করুক।’’

তবে আমেরিকা ইসলামাবাদকে এক হাত নিলেও চিন কিন্তু আরও এক বার এই প্রশ্নে ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করডিরে কয়েক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে চিন। চিনের বিদেশ মন্ত্রক এখন চাইছে, আফগান নীতিতে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিক আমেরিকা। গত কাল মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনকে ফোন করেছিলেন চিনের অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিক ইয়াং জিয়েচি। ফোনে ইয়াং বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তানে ইসলামাবাদের ভূমিকাকে আপনাদের অবশ্যই স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। সেই সঙ্গেই পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকেও সম্মান করা উচিত।’’ বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলেছিলেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইং-ও। তাঁর কথায়, ‘‘আফগানিস্তানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে পাকিস্তানের ভূমিকাকে যথেষ্ট মূল্য দেয় চিন।’’ ট্রাম্পের পাকিস্তান বিরোধী বিবৃতির প্রেক্ষিতে তাঁর মন্তব্য, ‘‘গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে পাকিস্তান যা করছে তা প্রশংসনীয়। এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে পাকিস্তানের অবদান ও ত্যাগ অনস্বীকার্য।’’

খুব সম্প্রতি চিন সফর সেরে এসেছেন পাক বিদেশসচিব তেহমিনা জানজুয়া। ট্রাম্পের পাকিস্তান-বিরোধী বক্তব্য নিয়ে বেজিং যাতে মুখ খোলে, চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-কে সেই অনুরোধ করেছিলেন তেহমিনা। তেহমিনার সফর নিয়ে হুয়ার বক্তব্য, ‘‘চিন আর পাকিস্তান সব সময়ের বন্ধু ও সঙ্গী। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা সব সময় একে অপরকে সমর্থন করে এসেছি, করবও।’’

Kashmir Amercia India Donald Trump Pakistan ডোনাল্ড ট্রাম্প
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy