ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজে সহায়তা করতে দিন মহিলা উদ্ধারকর্মীদের। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের কাছে এমনই আবেদন জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন বা হু)। আফগানিস্তানে তালিবরা ক্ষমতায় আসার পর অন্য মেয়েদের মতোই সে দেশের মহিলা উদ্ধারকর্মীদের প্রকাশ্যে বেরোনোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছে হু।
আফগানিস্তানে হু-র সহকারী প্রতিনিধি মুক্তা শর্মা সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-কে বলেন, “এই মুহূর্তে মহিলা উদ্ধারকারীদের প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, আপনারা মহিলা উদ্ধারকর্মীদের পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই যাতায়াত করার এবং অসহায় মহিলাদের সাহায্য করার অনুমতি দিন।”
গত ১ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে মৃতের সংখ্যা ২,২০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আহত সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি। কয়েক দিন আগেই মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্স’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তালিবান সরকারের ফতোয়ার কারণে ইট-কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে কাতরালেও কোনও মহিলাকে উদ্ধার করছেন না পুরুষেরা।
তালিবানের নিয়ম অনুযায়ী, একই পরিবারের সদস্য না-হলে কোনও মহিলা এবং পুরুষের মধ্যে শারীরিক সংযোগ ঘটতে পারে না। তাঁরা একে অপরকে স্পর্শ করতেই পারেন না। নারী এবং পুরুষের শারীরিক সংস্পর্শ একমাত্র স্বীকৃতি পারিবারিক যোগের ক্ষেত্রেই। তালিবান সরকার জানিয়ে দিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতেও এই নিয়মের ব্যতিক্রম করা যাবে না। ফলে ভূমিকম্পে দীর্ণ আফগানিস্তানে চাইলেও মহিলাদের উদ্ধার করতে পারছে না পুরুষদের উদ্ধারকারী দল। মহিলাদের ফেলে রেখে কেবল জখম পুরুষদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। ঘটনাচক্রে, এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরেই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের সাহায্য করতে মহিলা উদ্ধারকারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আর্জি জানাল হু। আফগানিস্তানের গোঁড়া এবং মৌলবাদী তালিবান সরকার এই অনুরোধ রাখে কি না, তা-ই এখন দেখার।