Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মার্কিন সাংবাদিক লিজার প্রেমিক ফিদেল কাস্ত্রো!

রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মেকআপ মুছে পোশাক পাল্টে শুতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, হোটেলের ঘরের দরজায় টোকা।

লিজার সঙ্গে কাস্ত্রো।

লিজার সঙ্গে কাস্ত্রো।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৭
Share: Save:

ষাটের দশকের গোড়ার দিকে একটা ফেব্রুয়ারির রাত। হাভানার হোটেল রিভিয়েরার এক সুইটে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন লিজা হাওয়ার্ড। তরুণী মার্কিন সাংবাদিক। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মেকআপ মুছে পোশাক পাল্টে শুতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, হোটেলের ঘরের দরজায় টোকা। লিজা দেখলেন, যাঁর সাক্ষাৎকার নিতে সুদূর আমেরিকা থেকে তিনি হাভানা এসেছেন, সেই ভদ্রলোক তাঁর সামনে। ৩৭ বছরের ফিদেল কাস্ত্রো। কয়েক বছর আগেই বিপ্লব এনে ফিদেল তখন কিউবার শীর্ষ পদে। লিজা সটান বলে বসেছিলেন, ‘‘আপনি দেশের শাসক হতে পারেন, আমিও গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক। আপনার সাহস হয় কী করে আমায় এত ক্ষণ অপেক্ষা করানোর?’’

দু’জনের আলাপ পর্বের শুরুটা এমনই ছিল। সে রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে কথা হয়েছিল ফিদেল আর লিজার। মার্ক্সবাদ থেকে শুরু করে কিউবায় রাজনৈতিক বন্দিদের অবস্থা, সব নিয়েই। আমেরিকা যতই শত্রু হোক, সুন্দরী ছিপছিপে মার্কিন সাংবাদিকের প্রেমে পড়তে কিন্তু বেশি সময় লাগেনি ফিদেলের। আরও কয়েক বার কিউবা গিয়েছিলেন লিজা। স্বীকার করেছিলেন, তিনিও বিপ্লবী নেতার প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন। এক বিছানায় কাটিয়েছেন অনেক রাতও।

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংগ্রহশালা থেকে সম্প্রতি লিজার হাতে লেখা কিছু ডায়েরি ও নোট প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকেই সামনে এসেছে ফিদেলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা। তবে এই দু’জনের রসায়ন নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে আগেও কম চর্চা হয়নি।

কেরিয়ারের শুরুতে টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করতেন লিজা। পরে সংবাদ জগতে আসেন। কেনেডি ও জনসন সরকারের বার্তা ফিদেলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল লিজার উপর। আবার ফিদেলের বার্তাও হোয়াইট হাউসের কান পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন তিনি। পুরোটাই গোপনে। লিজা লিখেছেন, ‘‘শরীরী খেলায় উনি খুবই পটু ছিলেন। সেগুলো আমার জীবনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মূহূর্ত।’’ কখনও বা লিখেছেন, ‘‘উনি আমায় গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরেছিলেন এক দিন। কিন্তু একটা অদ্ভুত বিষণ্ণতা আমায় প্রায়ই গ্রাস করত। নেতা কাস্ত্রো আর মানুষ কাস্ত্রো সম্পূর্ণ আলাদা বলে মনে হত আমার।’’ লিজার কথায়, ‘‘আমার কাছে উনিই ছিলেন জর্জ বার্নার্ড শ-এর ‘স্পার্ক অব ডিভাইন ফায়ার’। গোটা দুনিয়া যে একনায়কের রূপ ওঁকে দিয়েছিল, উনি মোটেও তেমন ছিলেন না।’’ হাভানার হোটেলেই লিজার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন ফিদেল। একবার লিজাকে নিজের কোলে বসিয়ে বলেছিলেন, ‘‘তুমি আমার জন্য খুব বিপজ্জনক। তোমার মতো একটা মেয়েকে আমি খুব গভীর ভাবে ভালবাসতে পারি।’’

শেষ পর্যন্ত কিউবা সরকারের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন লেখার অভিযোগে চাকরি যায় লিজার। বেশি দিন বাঁচেনওনি। ১৯৬৫-তে অতিরিক্ত মাদক সেবনে মৃত্যু তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE