রবিবারের ভূমিকম্প কারও প্রাণ না নিলেও রেহাই পেল না ইতালির ইতিহাস। গত অগস্টে পেরুজায় ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল আমাত্রিস শহরের অনেকটাই। প্রাণ যায় অন্তত ৩০০ জনের। তার পর থেকে ছোটখাটো ভূমিকম্প লেগেই রয়েছে এই দেশে। গত ২৬ অক্টোবর ফের একবার জোরদার ভূমিকম্প টের পেয়েছেন ইতালিবাসী। আর গতকালের ভূমিকম্প গুঁড়িয়ে দিয়েছে সান বেনেদেত্তো ব্যাসিলিকা-সহ নর্চিয়া শহরের বেশ কিছু প্রাচীন পুরাকীর্তি। গত কালের ভূমিকম্পে আহত হন কুড়ি জন।
রবিবারের নর্চিয়ায় কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬.৬। গত ৩৬ বছরে এটাই ইতালির সব চেয়ে বড় ভূমিকম্প বলে মনে করছেন আমেরিকার ভূতাত্ত্বিকরা। তবে ভূমিকম্পের উৎসস্থল মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে হওয়ার ফলে এ দিনের ভূমিকম্পে কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি। বুধবার ও রবিবারের ভূমিকম্পের পর অন্তত আট হাজার মানুষ নিজের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন কাছাকাছি হোটেলে। এই সংখ্যাটা আগামিকাল সকালের মধ্যে ১১ হাজার ছুঁয়ে ফেলবে বলে মনে করছে ইতালির নাগরিক নিরাপত্তা সংস্থা। অনেকেই আবার নিরাপত্তার খাতিরে গাড়ির মধ্যেই রাত কাটানো শুরু করেছেন।
গত কালের ভূমিকম্পে সান বেনেদেত্তো ব্যাসিলিকা এবং সেন্ট মেরি আর্জেন্তিয়া ক্যাথিড্রাল— এই দু’টি গির্জাই প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। চতুর্দশ শতাব্দীতে তৈরি হয় সান বেনেদেত্তো ব্যাসিলিকাটি। আর পঞ্চদশ শতাব্দীর নির্মাণ সেন্ট মেরি আর্জেন্তিয়া ক্যাথিড্রাল। এখন শুধু ধুলো মেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে তার ভাঙাচোরা কাঠামোখানা।
স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের ফুটেজে ধরা পড়েছে ভূমিকম্পের সময়ে গির্জার ভিতরের অবস্থা। দেখা গিয়েছে বাঁচার জন্য সে সময় দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দিয়েছেন সন্ন্যাসিনীরা। তাঁদের মধ্যেই বেশ কয়েক জন আবার মূল বারান্দায় ছুটে এসে প্রার্থনা করতে শুরু করেন। ইতিমধ্যেই ভূমিকম্পের জেরে ভেঙে পড়তে শুরু করেছিল বাড়িঘর। দমকলকর্মীরা কোনও ভাবে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। সংবাদ মাধ্যমে এক সন্ন্যাসিনী বলেন, ‘‘ঈশ্বরের বাড়িতে তিনিই আমাদের রক্ষা করবেন, এই বিশ্বাসেই ওই সময় সেখানে ছিলাম।’’