Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
London

Employment: ‘আমি ফার্স্ট ক্লাস, চাকরি দেবেন?’

তবে পরিস্থিতির মোড় ঘোরাতে হায়দারের পাশে ‘দেবদূতের’ মতো এসে দাঁড়ান জনৈক ইম্যানুয়েল।

টিউব স্টেশনে সেই প্ল্যাকার্ড নিয়ে হায়দর মালিক। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

টিউব স্টেশনে সেই প্ল্যাকার্ড নিয়ে হায়দর মালিক। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১৮
Share: Save:

হাতে ব্যাঙ্কিং ও ফিনান্সের ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রি। বয়স ২৪। অপেক্ষা ছিল একটা চাকরির। তবে চাকরির বাজার কঠিন করে তুলেছে অতিমারির প্রকোপ। সব রকম চেষ্টা শেষে এক রকম মরিয়া হয়েই গত ২ নভেম্বর লন্ডনের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র ক্যানারি হোয়ার্ফের টিউব স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে পড়েন মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র, পাক বংশোদ্ভূত হায়দর মালিক। সঙ্গে রাখেন একটি প্ল্যাকার্ড। তাতে সাঁটা তাঁর বায়ো-ডেটার কিউআর কোড। অভিনব পন্থা অবলম্বনে সুফলও মিলেছে হাতেনাতে। ১৪ দিনের মাথায় অচেনা কোনও পথিকের সহযোগিতায় শেষমেশ ‘ট্রেজ়ারি অ্যানালিস্টের’ পদে যোগ দিয়েছেন তিনি।

‘প্রথম শ্রেণির ডিগ্রি আছে আমার’— বোর্ডে এই বার্তা নিয়েই টিউব স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন হায়দার। প্রথম প্রথম পথচলতি মানুষের সঙ্গে কথা বলতে সঙ্কোচ হলেও পরে তা এক প্রকার জেদ করেই কাটিয়ে ওঠেন হায়দার। নিজে থেকেই এগিয়ে গিয়ে কথা বলতে শুরু করেন ব্যস্ত স্টেশনের বাইরে দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষজনের সঙ্গে। হায়দার দেখেন, এতে অনেক বেশি সাড়া মিলছে। কেউ কেউ নিজেদের ভিজ়িটিং কার্ড আর ফোন নম্বরও এগিয়ে দেন হায়দারের দিকে।

তবে পরিস্থিতির মোড় ঘোরাতে হায়দারের পাশে ‘দেবদূতের’ মতো এসে দাঁড়ান জনৈক ইম্যানুয়েল। লিঙ্কড-ইনে হায়দরের ছবি পোস্ট করে তিনি আবেদন জানিয়েছিলেন, কারও হাতে চাকরি থাকলে তিনি যেন সত্বর হায়দরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সমাজমাধ্যমে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয় ইম্যানুয়েলের সেই পোস্ট।

সে দিন সকাল ৭টার মধ্যেই স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। যখন ফোনটা বেজে ওঠে তখন ঘড়িতে বাজে সাড়ে ৯টা। ফোনটি এসেছিল একটি সংস্থা থেকে। ও প্রান্ত থেকে ভেসে আসা কণ্ঠস্বর বলেন— ট্রেজ়ারি অ্যানালিস্টের চাকরি আছে, তবে ইন্টারভিউয়ের জন্য পৌঁছতে হবে এক ঘণ্টার মধ্যে। সঙ্গে গাড়ি ছিলই। সময় নষ্ট না করে দ্রুত রওনা হয়ে যান হায়দার।

পরের টানা তিন দিনও একাধিক চাকরির প্রস্তাব নিয়ে ফোন বেজেছে তাঁর। তবে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে ওই সংস্থাতেই ইন্টারভিউয়ের দ্বিতীয় ধাপ পেরিয়ে যান হায়দার। চাকরির চিঠি হাতে চলে আসে দিনের দিনই!

চাকরি পেয়েই সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি হায়দার। বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন ‘অচেনা’ ইমানুয়েলকে। হায়দার জানান, কিশোর বয়সে পাকিস্তান থেকে লন্ডনে এসেছিলেন তাঁর বাবা। ট্যাক্সি চালাতেন। তবে এখন অবসর নিয়েছেন। বাবার থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে অভিনব ভাবে জীবনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে সাফল্য যে এ ভাবে কড়া নাড়বে ভাবতে পারেননি তিনি। উচ্ছ্বসিত হায়দার সমাজমাধ্যমে নিজের দু’টো ছবি পোস্ট করেছেন, সঙ্গে লিখেছেন, ‘‘১৪ দিনে অনেক কিছু বদলে যায়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

London pakistan Employment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE