ইতিহাস এর আগেও গড়েছেন বারাক ওবামা। তাঁর প্রেসিডেন্ট পদের একেবারে শেষ লগ্নে পা রেখেছেন চিরশত্রু কিউবায়। বন্ধুত্বপূর্ণ নতুন অধ্যায় শুরু নিয়ে তখন কম চর্চা হয়নি। আর এর পরই তাঁর নতুন ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট— পদে থাকাকালীন এক বার ঘুরে আসতে চান হিরোশিমা। জি-সেভেন সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ২৭ তারিখ সেখানে পা রাখার কথা ওবামার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার বোমায় গুঁড়িয়ে যাওয়া জাপানের এই শহরে তাঁর আগে আসেননি কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টই।
ওবামার এই ঐতিহাসিক সফর ঘিরে দু’দেশের সম্পর্কে যেমন নতুন আশা তৈরি হয়েছে, তেমনি মাথাচাড়া দিচ্ছে বিতর্কও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পরমাণু বোমায় কী ভাবে গোটা শহর তছনছ হয়ে গিয়েছিল, এখনও সেখানকার অনেক বাসিন্দার স্মৃতিতেই তা টাটকা। পরমাণু অস্ত্র থেকে কোনও মতে প্রাণে বেঁচে ফেরা কিছু মানুষকে নিয়ে একটি সংগঠন রয়েছে জাপানে। বৃহস্পতিবার ওই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, ওবামা যখন আসবেন, এঁদের সব হারানো জীবনের গল্প যেন এক বার শোনেন তিনি। আর ক্ষমা চান তাঁর পূর্বসূরির প্রাণঘাতী সিদ্ধান্তের জন্যে।
১৯৪৫ সালে ৬ ও ৯ অগস্ট জোড়া পরমাণু বোমায় হিরোশিমা-নাগাসাকিতে মারা গিয়েছিলেন দু’লাখেরও বেশি মানুষ। তবে তার জন্য এত দিন পরে ওবামাকে ক্ষমা চাইতে বললেও হিসেব-নিকেশ যে এতটা সহজ হবে না, তা জানেন জাপানের এই বাসিন্দাদের প্রত্যেকেই। তবে পরমাণু অস্ত্র রোধে ওবামার প্রতিজ্ঞার কথা মাথায় রেখেই এখনও কোনও মতেই আশা ছাড়তে রাজি নন তাঁরা।
তবে ওয়াশিংটন অবশ্য এই প্রসঙ্গে আজ স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছে, ওবামার ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই উঠছে না। তা ছাড়া, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখা মানুষগুলোর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও খুব ক্ষীণ। তবে এই তিক্ততার মধ্যেই আজ জাপানের হাতে পুরনো দিনের এক ‘উপহার’ তুলে দিয়েছে আমেরিকা। দুই শহরে দুই পরমাণু বোমা ফেলার পর যে ভাবে মেঘের চাদরে ঢেকে গিয়েছিল চারি দিক, সেই ছবি তুলেছিলেন এক মার্কিন অফিসার। সত্তর বছর পর সেটাই জাপানের জাদুঘরের হাতে এ দিন তুলে দিল আমেরিকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy