কাবুলের তোপের মুখে ইমরান খানের সরকার।—ছবি রয়টার্স।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল নিয়ে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বিষয়টি একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অনেকেই। এ বার ভূস্বর্গের পরিস্থিতির সঙ্গে আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়াকে জড়ানোয় কাবুলের তোপের মুখে ইমরান খানের সরকার।
কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে আফগানিস্তানের শান্তিপ্রক্রিয়ার উপর— গত সপ্তাহে এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই মন্তব্য করেছিলেন আমেরিকায় নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদ খান। এতেই বেজায় চটেছে কাবুল। মজিদের এই মন্তব্যের নিন্দা করে রবিবার রাতে পাল্টা বিবৃতি দেন আমেরিকায় নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত রোয়া রহমানি। কাশ্মীর প্রসঙ্গে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েই তিনি একহাত নেন ইমরানকে। বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। ইচ্ছাকৃত ভাবে এখন এর সঙ্গে আফগানিস্তানকে জড়িয়ে অবিবেচক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করছে ইমরানের সরকার।’’ ইসলামাবাদ শান্তি ভণ্ডুল করতে চাইছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর দাবি, জঙ্গি দমনে কড়া পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ বলেই এখন কাবুলকে ঢাল করছে ইসলামাবাদ।
জঙ্গি আনাগোনা ঠেকাতে পাক-আফগান সীমান্তে বিপুল সেনা রয়েছে পাকিস্তানের। গত বছর অগস্টের এক ঘোষণা অনুযায়ী, আরও ৬০ হাজার সেনা পাঠানোর কথা সেখানে। কিন্তু কাশ্মীরের পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই সেনা প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন পাক দূত মজিদ। কাবুলকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার মতো করেই তিনি জানান, এত সেনা সরানো হলে তার প্রভাব পড়বে আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ার উপরেই।
গত ৫ অগস্ট ভারতে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই এ নিয়ে ভারতকে লাগাতার কোণঠাসা করার চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। জুলাইয়ে আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেখানে আফগানিস্তানের পুনর্গঠন এবং তালিবানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে পাকিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কূটনীতিকেরা বলছেন, সম্ভবত সেই প্রেক্ষিতেই আমেরিকা এবং আফগানিস্তানকে একই সঙ্গে চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছিলেন মজিদ। কিন্তু হল, হিতে বিপরীত!
জঙ্গি সমস্যা নিয়েও পাকিস্তানকে নিশানা করেছেন রোয়া। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আফগানিস্তান কখনওই পাকিস্তানের পক্ষে বিপজ্জনক নয়। তা সত্ত্বেও দেশের পশ্চিমে পাকিস্তান কেন এত বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে, তার ব্যাখ্যা নেই। উল্টে পাক আশ্রিত জঙ্গিরাই আফগানিস্তানে অশান্তি ছড়াচ্ছে।’’ পাক ভূখণ্ডে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে অবিলম্বে পদক্ষেপের আর্জিও জানান তিনি। বলেছেন, এ জন্য প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে রাজি কাবুলও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy