Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এখন শুধুই ঝলসানো লাল আকাশ

পামবুলার মতো ইডেন শহরেও এক অবস্থা। শয়ে শয়ে বাসিন্দা পুলিশের কথামতো আশ্রয় নিচ্ছেন সমুদ্রসৈকতের কাছে।

 নিউ সাউথ ওয়েলসের বেম্বোকায় লাল আকাশ পিছনে ফেলে এগোচ্ছে গাড়ি। রবিবার। ছবি: এএফপি

নিউ সাউথ ওয়েলসের বেম্বোকায় লাল আকাশ পিছনে ফেলে এগোচ্ছে গাড়ি। রবিবার। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
সিডনি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:৩০
Share: Save:

যেন ঝলসে যাওয়া লালচে আভা। দক্ষিণপূর্ব অস্ট্রেলিয়ার আকাশে এখন এমনই অদ্ভুত আলো। রবিবার থেকে দাবানলের জেরে নিউ সাউথ ওয়েলসের পামবুলায় ধোঁয়াটে-লাল অস্বাভাবিক ওই আকাশের ছবি ঘুরছে সামাজিক মাধ্যমে। রাস্তাঘাট সুনসান। দমবন্ধ চার পাশ। জেগে রয়েছে শুধু ওই অদ্ভুত লাল। বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ২৪।

পামবুলার মতো ইডেন শহরেও এক অবস্থা। শয়ে শয়ে বাসিন্দা পুলিশের কথামতো আশ্রয় নিচ্ছেন সমুদ্রসৈকতের কাছে। বাড়িঘর নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখনও ১৪৬ দাবানলের প্রকোপ রয়েছে নিউ সাউথ ওয়েলস জুড়ে। তার মধ্যে ৬৫টি এখনও নেভেনি। আজও দমকলের ২৭০০ জন কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়েছেন।

এর মধ্যে উঠে আসছে আগুন থেকে বেঁচে ফেরার নানা কাহিনি। বেক উইন্টার নামে এক মহিলা জানিয়েছেন, কী ভাবে তাঁর ঘোড়া, চার্মার দমবন্ধ করা ধোঁয়াজাল থেকে বাঁচিয়েছে তাঁকে। উপকূলবর্তী শহর মোরুয়ার একটি পাব-এ উইন্টারকে পৌঁছে দিয়েছিল চার্মার। সিডনির ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণের ওই শহরে ছেলে রিলে এবং এক সম্পর্কিত ভাইয়ের সঙ্গে ছিলেন উইন্টার। দাবানলের দাপটে ভাই আর রিলে গাড়ি চালিয়ে সৈকতের দিকে চলে যান। রয়ে যান উইন্টার। নববর্ষের আগে ওই শহর খালি করার লক্ষ্য নিয়েছিলেন উইন্টাররা। ভাইরা চলে যাওয়ার পরে চার্মারের পিঠে চেপে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বেরোন উইন্টার। এই সময়েই তিনি দেখেন, ধোঁয়া ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। কিছুটা গিয়ে পথ হারান উইন্টার, অসুস্থও লাগছিল তাঁর। তিনি জানিয়েছেন, এই সময়ে চার্মার তাঁকে সৈকতের দিকে ঠিকমতো নিয়ে যায়। উইন্টারের কথায়, ‘‘বুঝতেও পারিনি আমরা আগুনের দিকে এগোচ্ছি না, ঠিক পথে। কোনও খবরও পাচ্ছি না সেই সময়ে। চারদিকে শুধু ধোঁয়া। চার্মারের উপরে ভরসা ছিল। ও-ই বাঁচিয়েছে। ও আমার হিরো।’’ এলাকায় আগুনের দাপট কমার পরে ফিরে উইন্টার দেখেন, তাঁর বাড়িঘর অক্ষত থাকলেও ভেতরের জিনিস তছনছ। প্রকৃতির তাণ্ডবের মধ্যেও চুরিচামারি থেকে রেহাই নেই। মোরুয়ার একটি হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন উইন্টাররা।

দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ছবিও দেখা গিয়েছে ভিক্টোরিয়া প্রদেশে। দুর্দশায় পড়েছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য ভারতীয় দম্পতি কমলজিৎ কৌর এবং তাঁর স্বামী কানোয়ালজিৎ সিংহ তাঁদের রেস্তরাঁয় ঝোল-ভাতের ব্যবস্থা করেছেন। কমলজিৎ বলেছেন, ‘‘ঝোল-ভাত তৈরি করে ত্রাণ শিবিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। রেস্তরাঁয় কেউ এলেও দেওয়া হচ্ছে। প্রথমে এত আগুন ছিল না। ক্রমশ বেড়েছে। বাড়ি, মানুষ পশুপাখির ভয়ঙ্কর অবস্থা।’’ ভিক্টোরিয়া প্রদেশও বিধ্বস্ত। কমলজিৎদের মেলবোর্নের রেস্তরাঁয় এখন কর্মীসঙ্কট। তবু তাঁরা বিপদে সব ফেলে চলে যাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Australia Bush Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE