বাংলাদেশে দ্রুত সাধারণ নির্বাচন চেয়ে সরব হয়েছে বিএনপির মতো দলগুলি। সে দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ়-জ়ামানও সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদের নির্বাচন হওয়া উচিত।’’ সব মিলিয়ে নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ বাড়ছিলই। এই পরিস্থিতিতে সে দেশে সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস।
সরকারি সফরে জাপানে গিয়েছেন ইউনূস। বুধবার সে দেশের রাজধানী টোকিয়োয় একটি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আসে তাঁর কাছে। তিনি জানান, বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে হতে পারে। অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে আগেই এই সময়ের কথা জানানো হয়েছিল। গত সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকের পর তাঁর প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানান, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচন হবে।
বুধবার ইউনূসের মুখে ফের এক বার শোনা গিয়েছে নির্বাচনী সংস্কারের কথা। তিনি বলেন, “যদি সংস্কারের কাজ ধীর গতিতে চলে এবং কম ফলদায়ক হয়, তা হলে আমাদের বেশি সময় লাগবে। তবে এই দীর্ঘ সময় অন্তহীন হবে, এমন নয়। এটাকে (সংস্কার) ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।”
ভোট নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের ‘ধৈর্য হারানোর’ বিষয়টিও উঠে এসেছে ইউনূসের বক্তব্যে। তিনি বলেন, “যখন নির্বাচন হবে এবং নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন আমরা তাদের দায়িত্ব ছেড়ে দেব।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “মানুষ তাঁদের (রাজনীতিক) বলতে চাইছে যে, নির্বাচন যখন হওয়ার, তখন হবে। কিন্তু রাজনীতিকেরা ক্ষমতার আসনে বসার জন্য বড্ড অধৈর্য হয়ে পড়ছেন।” ইউনূসের এই মন্তব্য বিএনপিকে নিশানা করে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।
বুধবারই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়ে ঢাকায় সমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তথা বিএনপির অন্যতম শীর্ষনেতা তারেক রহমান। তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। আবারও আমরা বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।” শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর প্রভাব এবং প্রসারে দেশের বৃহত্তম দল বিএনপি। ভোট নিয়ে বিএনপি-র ক্রমাগত চাপের মুখে ইউনূস রাজনীতিকদের ‘ধৈর্য হারানোর’ কথা বললেন বলে মনে করা হচ্ছে।