দক্ষিণ গাজ়ার নাসের হাসপাতালে সোমবার দুপুরে পর পর দু’বার হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। মৃত্যু হয়েছে ছয় সাংবাদিক-সহ অন্তত ২১ জনের। মঙ্গলবার সেই হামলার জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে দেখা গেল ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে, এই প্রথম বার!
নেতানিয়াহু নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘নাসের হাসপাতালের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় ইজ়রায়েল গভীর ভাবে দুঃখিত। সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাধারণ মানুষের প্রাণের দাম ইজ়রায়েল জানে।’’ ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর তরফে ওই ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কারণ, নেতানিয়াহুর কথায়, ‘‘গাজ়ার যুদ্ধ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নয়, শুধু মাত্র হামাসের বিরুদ্ধে।’’ যদিও নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যকে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে ইজ়রায়েলের নয়া চাল বলেই দেখছে রাজনীতিক মহল।
হামাসের হাতে বন্দি ইজ়রায়েলিদের ঘরে ফিরিয়ে আনার আশ্বাসও শোনা গিয়েছে নেতানিয়াহুর মুখে। যদিও যুদ্ধের এত দিন কেটে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। এ বার নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে জ়েরুসালেমের পথে নেমেছেন ইজ়রায়েলিরাই। দাবি, গাজ়ায় যুদ্ধ বন্ধ হোক। ফিরিয়ে আনা হোক বন্দিদের। তেল আভিভে মঙ্গলবার দিনভর বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে। বিক্ষোভের সংগঠকেরা বেশির ভাগই গাজ়ায় বন্দিদের পরিজন। সে দেশের সংবাদমাধ্যম টাইম্স অফ ইজ়রায়েলের প্রতিবেদন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল থেকে তেল আভিভের আয়ালন হাইওয়ে অবরোধ করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। হস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম-এর ডাকে তেল আভিভের সাভিডোর সেন্ট্রাল স্টেশনে এক বিশাল সমাবেশেরও ডাক দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ভারতীয় সময় অনুযায়ী সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ নাসের হাসপাতালে বোমা হামলা চালায় ইজ়রায়েল। ওই ঘটনায় চার সাংবাদিক-সহ অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে হোসাম আল-মাসরি (রয়টার্সের চিত্র সাংবাদিক), মহম্মদ সালামা (আল জ়াজ়িরার চিত্র সাংবাদিক), মারিয়ম আবু দাকা (অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-সহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক) এবং মোয়াজ় আবু তাহা (এনবিসি নেটওয়ার্কের সাংবাদিক) রয়েছেন। প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১০ অগস্ট গাজ়া সিটির আল-শিফা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে আল জাজ়িরার পাঁচ সাংবাদিককে হত্যা করেছিল নেতানিয়াহুর সেনা। তার সপ্তাহখানেকের মাথায় ফের হামলায় নিন্দার ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে। কারণ, এই নিয়ে গত দু’বছরে সব মিলিয়ে গাজ়ায় প্রায় ২৪৫ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।