টনি ব্লেয়ার
এক যুগ পার করে ইরাকের যুদ্ধে ব্রিটেনের ভূমিকা নিয়ে ‘যাবতীয় দায়িত্ব’ মাথা পেতে নিলেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।
যুদ্ধের ১৩ বছর পর বুধবার প্রকাশিত চিলকট তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, ইরাক-যুদ্ধে জড়ানোর সিদ্ধান্ত ভুল ছিল ব্রিটেনের। যার মাসুল দিতে হচ্ছে আজও। ২০০৩-এর মার্চে আমেরিকার দোসর হয়ে ইরাকের যুদ্ধে সামিল হয়েছিল ব্রিটেন। কিন্তু যুদ্ধ ছাড়া কি আর বিকল্প ছিল না? কার্যত সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বছর সাতেক আগে চিলকট তদন্ত কমিটি তৈরি হয় রানির দেশে। বুধবার তার চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করে কমিটির চেয়ারম্যান জন
চিলকট জানান, ইরাককে সে বার শান্তিপূর্ণ ভাবেই নিরস্ত্র করা যেত। কিন্তু তা না করে, ত্রুটিপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই ইরাকে হামলার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।
বুধবার এই রিপোর্ট প্রকাশিত হতেই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন ব্লেয়ার। পরে তিনি এক সাংবাদিক বৈঠকে কাঁপা গলায় বলেন, এর জন্য তিনি কতটা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী, তা কেউ ভাবতেও পারবে না। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের প্রাণের কাছে রাজনৈতিক নীতি একেবারে তুচ্ছ।’’ কিন্তু তখন কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি?
সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ব্লেয়ার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কারণ আমার মনে হয়েছিল, আমি ঠিক।’’ আর এত প্রাণবলি? ব্লেয়ারের দাবি, ভবিষ্যৎটা ভাল হবে বলে ভেবেছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনের কাছে রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্রের বিপুল ভাঁড়ার রয়েছে বলে প্রচার চালিয়েই যুদ্ধের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। অথচ হামলা-পরবর্তী ইরাকে গিয়ে ব্রিটিশ পরিদর্শকরা সেই বিপুল অস্ত্রভাণ্ডারের হদিস পাননি বলেই এ দিন জানিয়েছে ১২ খণ্ডে প্রকাশিত চিলকট রিপোর্ট।
কিন্তু ব্লেয়ার বলছেন, যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেরির কোনও অবকাশ ছিল না। তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর কাছে সে সময় যা তথ্য এসেছিল, তার উপরে ভিত্তি করেই এগিয়ে যেতে হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ব্লেয়ার। তাঁর এখনও বিশ্বাস, ‘‘সাদ্দাম হুসেন না থাকায় দুনিয়াটা অনেকটাই নিরাপদ।’’
প্রাকযুদ্ধ, যুদ্ধ এবং যুদ্ধপরবর্তী সময়ে (২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত) ইরাক প্রসঙ্গে ব্রিটেনের বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত নিয়েই আলোচনা রয়েছে রিপোর্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy