আগামী নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে কনজ়ারভেটিভ পার্টি ফের ব্রিটেনের মসনদ দখল করবে বলে আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে ২০ বছর আগেকার যৌন হেনস্থার অভিযোগ তাঁর গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও গত কালই ওই যৌন হেনস্থার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন বরিস। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যে কোনও মূল্যে ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকরের প্রতিশ্রুতিও দিয়ে রেখেছেন তিনি। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ডাক দিয়েছে দ্য স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি। অনাস্থা ভোটে সরকারের পতন
হলে দেশে অকাল ভোটের সম্ভাবনাও দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নির্বাচন হলে বরিসের জয়ের পথে সবচেয়ে বড় কাঁটা হয়ে উঠতে পারে
বিশ বছরের পুরনো সেই যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও অন্যতম অভিযোগকারিণী সাংবাদিক শার্লট এডওয়ার্ডস স্পষ্ট জানিয়েছেন, এক নৈশভোজে তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছিলেন লন্ডনের তৎকালীন মেয়র বরিস। শার্লটের দাবি, নৈশভোজ শেষে বরিসের অন্য পাশে বসা অন্য এক মহিলাও জানান, তিনিও বরিসের লালসার শিকার হয়েছেন। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতর সমস্ত অভিযোগই মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে অভিযোগ থেকে সরছেন না শার্লট। তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যদি ঘটনাটি মনে করতে না পারেন, তা হলে বুঝতে হবে, আমার স্মৃতিশক্তি ওঁর থেকে অনেক ভাল।’’
একই সঙ্গে উদ্যোগপতি জেনিফার আরকুরির সঙ্গে বরিস জনসনের যৌন সম্পর্ক নিয়েও ব্রিটেনে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে মন্তব্যে নারাজ বরিসের অফিস। তবে প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘মেয়র হিসেবে যা করেছি, তা নিয়ে আমি গর্বিত।’’ এমনকি পদের অপব্যবহার করে আরকুরির সংস্থাকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি। যদিও বিষয়টি বর্তমানে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুধু যৌনকেচ্ছাই নয়, দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতি বিশ্বাসভঙ্গেরও অভিযোগও উঠেছিল বরিসের বিরুদ্ধে। যদিও গত বছরই বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁদের। আর তার পরেই ক্যারি সাইমন্ডসের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি। ম্যাঞ্চেস্টারে দলের বার্ষিক সম্মেলনেও বরিসের সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যারি। তবে প্রধানমন্ত্রীর যৌনকেচ্ছা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাতে নারাজ কনজ়ারভেটিভ পার্টির সদস্যেরা। তাঁদের মতে, ব্রেক্সিট নিয়ে বরিসের দায়বদ্ধতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একই মত, তাঁর জীবনীকার অ্যান্ড্রু গিমসনেরও। নিম্ন মানসিকতার মানুষেরাই অহেতুক বরিসের ভাবমূর্তিতে কালি ছেটাতে যৌনকেচ্ছার প্রচার করছেন বলে মনে করেন গিমসন।