Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Corona virus

Corona: সাপের বিষে করোনা মুক্তি! ব্রাজিলের বিষধরে আস্থা রাখছেন গবেষকরা

প্রশ্ন উঠতে পারে, তা যদি হয়, তবে কি করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য ওষুধ বা টিকা নিয়ে গবেষণা ছেড়ে এর পর সাপের সন্ধানে সবাই ব্রাজিলে ছুটবে?

ব্রাজিলের ওই সাপের নাম জারারাকুস্‌সু পিট ভাইপার।

ব্রাজিলের ওই সাপের নাম জারারাকুস্‌সু পিট ভাইপার। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৪০
Share: Save:

বিষধরেই কি শেষ পর্যন্ত বিষ মুক্তির উপায় মিলতে চলেছে? সাপের বিষে যে জটিল রোগের চিকিৎসা সম্ভব, তা ইতিমধ্যে পরীক্ষিত এবং প্রমাণিত। তবে সাম্প্রতিক গবেষণালব্ধ একটি তথ্যে দাবি করা হয়েছে, এ বিষ করোনা সংক্রমণেও রাশ টানতে পারে।

ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন গবেষক এ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, সাপের বিষে থাকা বিশেষ একটি উপাদান প্রাণীকোষে করোনার সংক্রমণ থামাতে পেরেছে। গবেষকরা অবশ্য এই পরীক্ষা করেছিলেন ব্রাজিলের এক বিশেষ প্রজাতির সাপের বিষ নিয়ে। বাঁদরের কোষে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল বিষের ওই উপাদান। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই প্রয়োগে প্রাণীকোষে করোনা ভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা অনেকটাই কমেছে।

সাধারণত প্রাণীকোষে প্রবেশের পর নিজের সংখ্যাবৃদ্ধি করেই সংক্রমণ ছড়ায় করোনা ভাইরাস। সংখ্যাবৃদ্ধির সেই হার ৭৫ শতাংশ কমিয়ে এনেছে সাপের বিষে থাকা ওই উপাদান।

ব্রাজিলের ওই সাপের নাম জারারাকুস্‌সু পিট ভাইপার। প্রকৃতিগত ভাবে মারাত্মক বিষধর। তারই বিষের একটি অণু-উপাদান করোনা ভাইরাসের গুরুত্বপূর্ণ এক স্পাইক প্রোটিনকে অকেজো করতে পারছে বলে দাবি সাও পাওলোর গবেষকদের।

প্রশ্ন উঠতে পারে, যদি তা-ই হয়, তবে কি করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য ওষুধ বা টিকা নিয়ে যাবতীয় গবেষণা ছেড়ে এর পর সবাই জারারাকুস্‌সুর সন্ধানে ব্রাজিলে ছুটবেন? সাও পাওলো-র গবেষক রাফাল গুইডো অবশ্য প্রশ্ন ওঠার আগেই জবাব দিয়ে রেখেছেন। ‘মলিকিউলস’ নামে একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় গবেষণাটির কথা লিখেছিলেন রাফাল। তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রশ্নটা আমাদের মাথাতেও এসেছিল। জারারাকুস্‌সুর বিষে করোনামুক্তি হতে পারে জানার পরই যে এক শ্রেণির মানুষ ‘দুনিয়া বাঁচানোর তাগিদে’ এই সাপের সন্ধান শুরু করবেন, তা অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি অত সহজও নয়।’’ রাফালের সহ-লেখক বিজ্ঞানী জুসেপি পুওর্তোর কথায়, ‘‘মনে রাখতে হবে, সাপের বিষে কিন্তু করোনার নিরাময় হবে না।’’

গবেষণালব্ধ তথ্যটি থেকে যা জানা যাচ্ছে, তা হল করোনাকে থামাতে পেরেছে জারারকুস্‌সুর বিষে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিডের একটি শৃঙ্খল। এই শৃঙ্খল করোনা ভাইরাসে থাকা এক ধরনের এনজাইমের সঙ্গে নিজেকে জুড়ে দেয়। ওই এনজাইমের নাম পিএল প্রো। প্রাণীকোষের ভিতর করোনা ভাইরাসকে সংখ্যায় বাড়তে সাহায্য করে এই এনজাইমই। অ্যামিনো অ্যাসিডের শৃঙ্খল একে অকেজো করতে পারে বলে দাবি।

বিষয়টি নিয়ে অবশ্য এখনও অনেক গবেষণাই বাকি। জারারাকুস্‌সুর বিষের ওই বিশেষ অণু উপাদান কতটা পরিমাণে কী ভাবে দেওয়া হতে পারে, কতটা প্রয়োগ করলে শরীরের ক্ষতি হবে না— এই সব প্রশ্নের উত্তর এখনও জানা যায়নি। এর পাশপাশি বিজ্ঞানীরা আরও একটি বিষয়ও জানার চেষ্টা করছেন। তা হল, করোনা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর তাকে ঠেকানোর ক্ষমতা যেমন আছে তেমনই প্রাণীকোষে করোনার প্রবেশও কি আটকাতে পারবে ওই উপাদান? গবেষকরা জানিয়েছেন, জবাব পেলে তবেই পরীক্ষামূলক ভাবে মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে উপাদানটি।

প্রসঙ্গত, জারারাকুস্সু ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম বড় সাপ। সেই মহাদেশের অতলান্তিক উপকূলের অরণ্যের বাসিন্দা এই সাপ দৈর্ঘ্যে কম করে ৬ ফুট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona virus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE