Advertisement
০৬ মে ২০২৪

আরও তিন মাস চাইলেন টেরেসা

তিন বছর আগে ব্রিটেনে এক গণভোটের পরে ব্রেক্সিটের দিন ধার্য হয়েছিল এ বছরের ২৯ মার্চ।

তিন বছর আগে ব্রিটেনে এক গণভোটের পরে ব্রেক্সিটের দিন ধার্য হয়েছিল এ বছরের ২৯ মার্চ।

তিন বছর আগে ব্রিটেনে এক গণভোটের পরে ব্রেক্সিটের দিন ধার্য হয়েছিল এ বছরের ২৯ মার্চ।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০২:১৩
Share: Save:

সুশৃঙ্খল ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে এখনও বদ্ধপরিকর ব্রিটেন। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই যে, ন’দিনে সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যাবে না। এই কথা জানিয়ে বুধবার ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ককে একটি দু’পাতার চিঠি লিখলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। চিঠির শেষে জুড়ে দিলেন আর্জি— ‘‘আরও তিন মাস, অর্থাৎ ৩০ জুন পর্যন্ত ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হোক। ব্রিটেন কথা দিচ্ছে, ৩০ জুনের পরে ইইউ ছাড়তে আর এক দিনও দেরি করবে না।’’

তিন বছর আগে ব্রিটেনে এক গণভোটের পরে ব্রেক্সিটের দিন ধার্য হয়েছিল এ বছরের ২৯ মার্চ। কিন্তু দিন যত এগিয়েছে, বোঝা গিয়েছে, ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে সব দলের এমপিদের সহমত হওয়া এত সহজ নয়। তাই তাঁর ব্রেক্সিট চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের শিলমোহর পেয়ে গেলেও পার্লামেন্টের ঘরোয়া ভোটাভুটিতে বারবার হারতে হয়েছে টেরেসাকে।

সেই কথাই আজ ডোনাল্ড টাস্ককে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তারিখ উল্লেখ করে করে জানিয়েছেন, কী ভাবে বারবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তাঁর চুক্তি খারিজ হয়ে গিয়েছে। তবে একই সঙ্গে টেরেসা উল্লেখ করেছেন, চুক্তিহীন ব্রেক্সিটে সায় নেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের। এবং এই অবস্থায় ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়াই যে ঠিক হবে, সেটাও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে ঠিক হয়েছে। দেশের এমপিদের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে টেরেসা তাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন, আরও তিন মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক ব্রেক্সিট।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ব্রেক্সিট কী
• ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া

নামকরণ
• ‘ব্রিটেন (Britain)’ এবং ‘এগজ়িট (exit)’ এই দু’টি শব্দ মিলিয়ে তৈরি হয়েছিল ‘ব্রেক্সিট’ শব্দটি

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাকে বলে
• ২৮টি দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জোট
• একমাত্র সাইপ্রাস ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার দেশ
• বাকি সব দেশ ইউরোপে

ইইউ এবং ব্রেক্সিট
• ১৯৭৩ সালে এই জোটে যোগ দেয় ব্রিটেন। তখন ইইউ-এর নাম ছিল ‘ইউরোপীয় ইকনমিক কমিউনিটি’ বা ‘ইইসি’

গণভোট
• ২০১৬ সালের ২৩ জুন ইইউ ছাড়া নিয়ে গণভোট হয় ব্রিটেনে। ৫২ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিক ইইউ ছেড়ে বেরিয়ে আসার পক্ষে ভোট দেন। ঠিক হয়, এই বিচ্ছেদ হবে তিন বছর পরে, ২০১৯-এর ২৯ মার্চ।

ব্রেক্সিট চুক্তি
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র প্রস্তাবিত চুক্তিটি নিয়ে সহমত হননি ব্রিটিশ এমপি-রা। খসড়া চুক্তিতে যা বলা হয়েছে—
• ইইউ ছেড়ে যাওয়ার জন্য ব্রিটেনকে ৩৯ হাজার কোটি পাউন্ড দিতে হবে
• ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে হবে
• ২০২০-র ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ইইউ নাগরিকেরা এবং তাঁদের পরিবার ব্রিটেনে ব্রেক্সিট-পূর্ববর্তী সময়ের মতোই সহজে যাতায়াত করতে পারবেন
• অন্তর্বর্তী সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য আগের প্রক্রিয়া মেনেই চলবে
• উত্তর আয়ারল্যান্ড (ব্রিটেনের অংশ) আর রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড (স্বাধীন রাষ্ট্র)-র মধ্যে সীমান্ত এখন যেমন আছে, তেমনই উন্মুক্ত থাকবে। তবে ইইউ চায়, আস্তে আস্তে সীমান্ত আইন কড়া করা হোক। কারণ, আয়ারল্যান্ডের জন্য আলাদা আইন মানতে নারাজ ইইউ-এর অনেক রাষ্ট্রই

ব্রেক্সিট কি আদৌ হবে
• চুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে মতানৈক্য হওয়ায় ব্রেক্সিট পিছিয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে
• ইউরোপীয় আদালতের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, ব্রেক্সিট হবে কি না, হলে কবে হবে, তা ঠিক করবে ব্রিটেনই। ইইউ এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবে না
• চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথে কোনও ভাবেই হাঁটতে চান না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
• দ্বিতীয় দফার গণভোটেও সায় নেই তাঁর
• বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চিঠি লিখে
৩০ জুন পর্যন্ত ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন টেরেসা

আগামিকাল থেকে তিন দিনের জন্য ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ বৈঠক। সেখানে ইইউ-এর সব শীর্ষ কর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন টেরেসা। গতকালই ইইউ-এর অন্যতম প্রধান স্বর, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছিলেন, ‘‘আমি চাই পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি মেনে ২৯ মার্চই ইইউ ছেড়ে বেরিয়ে যাক ব্রিটেন। কিন্তু পুরো প্রক্রিয়াটা সুশৃঙ্খল ভাবে হওয়া দরকার। আমরা এখনই ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছি না। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে, প্রধানমন্ত্রী মে কী ভাবে বিষয়টি আমাদের সামনে উপস্থাপিত করবেন, তার উপর। তাঁর কথা শুনেই আমরা মত জানাব।’’

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে ঠিক হয়েছিল, আরও দু’মাস, ২২ মে পর্যন্ত ব্রেক্সিট পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হবে। কিন্তু ডোনাল্ড টাস্ককে লেখা টেরেসার চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, সময়সীমা তিন মাস, অর্থাৎ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Theresa May Brexit EU
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE