Advertisement
E-Paper

পর্বতকে টলানো সহজ, লাল ফৌজকে না, দিল্লিকে হুমকি বেজিঙের

এর আগেও ১৯৬২-র কথা টেনে এনে দিল্লিকে নিশানা করেছিল বেজিং। যার জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, ১৯৬২-র ভারত আর ২০১৭-র ভারত এক নয়। বেজিং পাল্টা বলে, এই ৫৫ বছরে তারাও পাল্টে গিয়েছে। ফলে এখনও ভারতকে শিক্ষা দিতে সক্ষম তারা। আজ সেই কথাকেই আরও চড়া সুরে তুলে ধরেছে বেজিং।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩২
ফের ভারতকে হুমকি চিনের। ছবি: এএফপি।

ফের ভারতকে হুমকি চিনের। ছবি: এএফপি।

সিকিম সীমান্তে টানাপড়েনের মধ্যে ভারতকে দ্বিতীয় বারের জন্য (১৯৬২-র পরে) শিক্ষা দেওয়ার হুমকি দিল চিন। যুদ্ধের হুঙ্কারের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরেও বাড়ানো হল চাপ। চিনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, ডোকলাম উপত্যকা থেকে ভারত সেনা না সরালে চলতি সপ্তাহে বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের বেজিং সফরের সময়েও সীমান্তে অস্থিরতা নিয়ে কোনও রকম আলোচনায় বসবে না তারা।

চিনের সরকারি খবরের কাগজ ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ প্রকাশিত উত্তর-সম্পাদকীয় নিবন্ধে আজ দিল্লিকে শুধু হুমকিই দেওয়া হয়নি, কার্যত বিদ্রুপ করে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত ভুলে যায় সব কিছু। ওদের দ্বিতীয় বার শিক্ষা দেওয়ার সময় এসেছে।’’ চিনা সরকারের এক জন প্রাক্তন কূটনীতিককে উদ্ধৃত করে নিবন্ধে লেখা হয়েছে, ‘‘ডোকলাম থেকে ভারত সেনা সরাক, না হলে সীমান্ত পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠবে, তখন ভারতীয় সেনাদের বন্দি করা হতে পারে, হত্যাও করা হতে পারে।’’ এর আগেও ১৯৬২-র কথা টেনে এনে দিল্লিকে নিশানা করেছিল বেজিং। যার জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, ১৯৬২-র ভারত আর ২০১৭-র ভারত এক নয়। বেজিং পাল্টা বলে, এই ৫৫ বছরে তারাও পাল্টে গিয়েছে। ফলে এখনও ভারতকে শিক্ষা দিতে সক্ষম তারা। আজ সেই কথাকেই আরও চড়া সুরে তুলে ধরেছে বেজিং।

চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফেও আজ যুদ্ধের হাওয়া তোলা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতিতে নিজেদের শক্তির কথা তুলে ধরতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র উ কিয়ানের মন্তব্য, ‘‘পর্বতকে টলানো সহজ, কিন্তু পিপলস লিবারেশন আর্মিকে নাড়ানো কঠিন।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, চিন যে কোনও মূল্যে তার নিরাপত্তার স্বার্থকে রক্ষা করবে। দিল্লি যদি ‘অবাস্তব বিভ্রান্তির’ মধ্যে থাকে, তা হলে তার ‘চরম ফল’ পেতে হবে তাদের। যে এলাকায় ভারতীয় সেনা চিনাফৌজের মুখোমুখি রয়েছে, তাকে নিজেদের বলে দাবি করে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, ‘‘আমরা ভারতকে কড়া ভাবে বলেছি, ভুল শুধরে নিয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ করতে।’’ প্রতিরক্ষার পাশাপাশি চিনের বিদেশ মন্ত্রকও কূটনৈতিক স্তরে চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে ২৭ ও ২৮ জুলাই ব্রিকসের দেশগুলির সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে যাচ্ছেন জয়শঙ্কর ও ডোভাল।

আরও পড়ুন:কাবুলে গাড়ি-বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ৩৫

সেখানে চিনের স্টেট কাউন্সিলার ইয়াং জিইচির সঙ্গে ডোভালের আলাদা ভাবে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভারত সেনা না সরালে ডোভালের সঙ্গে অন্য বিষয়ে কথা হতে পারে। কিন্তু সিকিম সীমান্তের টানাপড়েন নিয়ে কোনও আলোচনাই করবে না চিন। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতের সেনা চিনের এলাকায় বসে রয়েছে। আমাদের অনুরোধ, দিল্লি সেনা সরিয়ে নিক। অর্থপূর্ণ আলোচনার এটাই পূর্বশর্ত।’’ ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে যদিও এই বক্তব্য নিয়ে আজ কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

চিনের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাতের পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের তৎপরতা নিয়েও সতর্ক নয়াদিল্লি। ভারতে পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিত এ মাসের ৩১ তারিখ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। এর আগে দিল্লিতে চিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। চিন ও পাকিস্তান পর্দার আড়ালে কী খেলা খেলতে চাইছে, তা এখন ভাবাচ্ছে দিল্লিকে। কারণ গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, ‘‘ডোকলাম নিয়ে ভারতের অবস্থান হল, এটা চিন ও ভুটানের মধ্যে বিতর্কিত এলাকা। দিল্লি এখানে এসেছে ভুটানের পাশে দাঁড়াতে।’’ তার পরেই চিনা সরকারি সংবাদপত্রে মন্তব্য, ‘‘ভুটানের জন্য চিনের এলাকায় ঢুকে যাওয়ার যে যুক্তি দিল্লি হাজির করেছে, সেই যুক্তিতেই পাকিস্তানের আমন্ত্রণে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে তৃতীয় কোনও দেশ ঢুকে যেতেই পারে।’’ ভারত যে চিকেন নেক-এর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত, সে প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, চিকেন নেক না জিরাফ নেক তাতে চিনের কী যায় আসে? ভারতকে ‘বিশৃঙ্খল প্রতিবেশী’ আখ্যা দিয়ে চিনের সরকারি সংবাদপত্র লিখেছে, ‘‘দিল্লিকে সেই ভাষাতেই জবাব দিতে হবে, যা তারা ঠিক ভাবে বুঝতে পারে।’’

China Doklam People's Liberation Army ডোকলাম চিন পিপলস লিবারেশন আর্মি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy