Advertisement
E-Paper

ঐক্য আদায়ে যুদ্ধের হুমকি চিনফিংয়ের

নিছক বার্তা নয়, স্পষ্ট হুঁশিয়ারি। কিন্তু কাদের? খোলসা করেননি চিনফিং। তবে কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, এই হুঁশিয়ারি আদতে তাইওয়ানকে ঘিরেই।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪০

নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়েই যুদ্ধের হুমকি দিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। দেশের পার্লামেন্ট, ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন মঞ্চে দাঁড়িয়ে আজ সাফ জানালেন, চিনকে বিশ্বের সর্বোচ্চ আসনে দেখতে চান তিনি। চিন মানে, ‘এক চিন’। আর বাইরে থেকে যারা সেই ঐক্য ভাঙতে চাইবে, তাদের বললেন— ‘‘চিনের সেনা তৈরি। এ বার তারাও তৈরি থাকুক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জন্য।’’

নিছক বার্তা নয়, স্পষ্ট হুঁশিয়ারি। কিন্তু কাদের? খোলসা করেননি চিনফিং। তবে কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, এই হুঁশিয়ারি আদতে তাইওয়ানকে ঘিরেই। স্বশাসিত এই প্রদেশটি বহু দিন ধরেই চিন থেকে আলাদা হতে চাইছে। বেজিংয়ের সন্দেহ, গোপনে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে সেখানকার ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি। এর মধ্যে আবার, আগুনে ঘি ঢেলেছে আমেরিকা। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর চড়া শুল্ক বসানোয় এমনিতেই তাদের উপর খাপ্পা বেজিং। তার পর গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন একটি আইনে সই করেছেন, যার বলে উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তারা দিব্যি তাইওয়ানে গিয়ে বৈঠক করে আসতে পারেন। চিন চটতে পারে ভেবেই, এর আগে কিন্তু প্রকাশ্যে বৈঠক করেনি
তাইপেই-ওয়াশিংটন।

তাই চিনফিংয়ের জ্বালাময়ী বক্তৃতার নিশানায় আমেরিকাও রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনীতিকদের একাংশ আলাদা করে দেখিয়ে দিতে চাইছেন চিনফিংয়ের আস্তিন থেকে বেরিয়ে আসা উগ্র জাতীয়তাবাদী তাসকেও। অধিবেশনের শেষ দিনে চিনফিং যা বললেন, তার একটা বড় অংশ জুড়ে রইল তাঁর চিনকে এক এবং অবিচ্ছেদ্য রাখার স্বপ্ন। চিনফিংয়ের দাবি, ‘‘দেশের সম্পূর্ণ ঐক্য আসলে চিনা নাগরিকদেরই সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা। আর এটা ধরে রাখতে শুধু আমাদের বাহিনী নয়, দেশের প্রতিটি মানুষও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জন্য তৈরি। বাইরে থেকে এসে কেউ এক ইঞ্চি জমিও আমাদের থেকে আলাদা করতে পারবে না।’’

এ দিন আবার চিনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্যচিয়াং-ও সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে মরিয়া তাঁর দেশ। চিনা বাজারে স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা বাড়াতে তিনি সহযোগিতা চেয়েছেন বাকি বিশ্বেরও।

বাণিজ্য আর আর্থিক উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে আজ চিনফিংও কিঞ্চিৎ আশ্বাসও দিয়েছেন প্রতিবেশীদের। তাঁর দাবি— দেশে-বিদেশে তাঁদের যে সব উন্নয়ন যজ্ঞ চলছে, তার ঝড় কাউকে পোহাতে হবে না। অহেতুক ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। দ্বিতীয় বারের জন্য প্রেসি়ডেন্ট নির্বাচিত চিনফিংকে অভিনন্দন জানাতে আজ ফোন করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বেজিং জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার আশ্বাস দিয়েছেন চিনফিং।

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে বিস্তর সমস্যা রয়েছে চিনের। আবার দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের ‘দাদাগিরি’ নিয়েও ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়ার মতো দেশের অভিযোগ কম নয়। ‘আজীবনের প্রেসিডেন্ট’ চিনফিং অবশ্য আজ এদের কাউকে নিয়েই কোনও মন্তব্য করেননি।

পার্লামেন্টের বার্ষিক অধিবেশনের আজ ছিল শেষ দিন। ১৮ দিনের এই ‘ঐতিহাসিক’ অধিবেশনেই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়েছেন পঁয়ষট্টি ছুঁইছুঁই চিনফিং। দেশের সংবিধানে বদল এনে পার্লামেন্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০৩৩-এর পরেও যত দিন খুশি প্রেসিডেন্ট থাকবেন তিনি। কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, আজ সেই ‘সর্বেসর্বা’ মেজাজেই অধিবেশন কাঁপালেন চিনফিং। যদিও মুখে বলেছেন, চিনে এখন কমিউনিস্ট পার্টিই শেষ কথা। নাগরিকদের নৈতিক অধিকার পাইয়ে দিতে দায়বদ্ধ তাঁর দল। প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘এমন কিছু করব না যাতে মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ হয়।’’

Xi Jinping শি চিনফিং চায়না Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy