চিনে এ বার বিউবোনিক প্লেগের আতঙ্ক— ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রেশ কাটার আগেই চিনের উত্তরাংশের দু’টি এলাকায় বিউবোনিক প্লেগ ছড়ানোর খবর মিলল। মঙ্গোলিয়া সীমান্ত ঘেঁষা ইনার মঙ্গোলিয়া স্বশাসিত অঞ্চলের বাওতোউ শহরে প্লেগে এক ব্যক্তির মৃত্যুর কথাও স্থানীয় প্রশাসন স্বীকার করেছে। পরিস্থিতি সামলাতে ইনার মঙ্গোলিয়ার ওই শহরের কিছু এলাকা ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করেছে চিন সরকার। মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা কয়েকজনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
বাওতোউ শহরের একটি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার মৃত এক ব্যক্তির দেহে প্লেগ সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে বলে স্থানীয় পুর-প্রশাসনের স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জারি করা সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ‘শহরে প্লেগ মহামারী হয়ে উঠতে পারে বল ঝুঁকি রয়েছে। জনসাধারণকে তাই স্বাস্থ্যসুরক্ষা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং সজাগ থাকতে হবে। যাঁদের শরীরে প্লেগের লক্ষণ দেখা যাবে, তাঁরা যেন বিন্দুমাত্র দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’’
সরকারি ভাবে অবশ্য ‘মৃত্যুর কারণ’ হিসেবে সংবহনতন্ত্রের বিকল হওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিউবোনিক প্লেগের ক্ষেত্রে যা অন্যতম লক্ষণ। মৃত ব্যক্তির বাড়ি অদূরের সুশি জিংকুন গ্রামে। ওই গ্রাম ও আশপাশের এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে। গোটা ডামও বানার জেলা জুড়ে জারি হয়েছে তৃতীয় স্তরের প্লেগ সতর্কতা। বাওতোউ পুর-প্রশাসন সূত্রের খবর, গোটা ২০২০ সাল জুড়ে এই স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি থাকবে।
আরও পড়ুন: ‘বিডেনের কাছে হারলে খুশি হবে চিন’, তোপ ডোনাল্ড ট্রাম্পের
এর আগে জুলাই মাসে চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া ইনার মঙ্গোলিয়া স্বশাসিত অঞ্চলের খোবদ থেকে দুই সম্ভাব্য গ্লেগ আক্রান্তের খবর প্রচার করেছিল। প্রচারিত খবরে বলা হয়, মারমোটের (পাহাড়ি ইঁদুর জাতীয় প্রাণী) মাংস খাওয়ার পরেই দুই ভাইয়ের দেহে বিউবোনিক প্লেগের লক্ষণ দেখা দেয়। তাঁদের দু’জনের সংষ্পর্শে আসা শতাধিক ব্যাক্তিকে আইসোলেশনের পাঠানোর খবরও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল। জারি হয়েছিল তৃতীয় স্তরের প্লেগ সতর্কতাও। গত বছরেও ইনার মঙ্গোলিয়ায় বিউবোনিক প্লেগ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এক দম্পতির।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মসনদে মাহিন্দাই
মধ্যযুগে ইউরোপে কয়েক দফায় প্লেগ মহামারিতে (ব্ল্যাক ডেথ নামে যা পরিচিত) প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। পরবর্তীকালে অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কার প্লেগে মৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়। তবে বিউবোনিক গ্লেগ নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও প্লেগের প্রত্যাবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ১৯৯৪ সালের অগস্ট থেকে অক্টোবরে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ? এবং কর্নাটকে প্রায় ৭০০ জন প্লেগ মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা গিয়েছিলেন ৫৬ জন। ২০০৯-’১৯ চিনে মোট ৩১ জন বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy