Advertisement
E-Paper

টিভির পর্দা থেকে বাস্তব, আজ ইনি ইউক্রেনের নতুন প্রেসিডেন্ট!

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫১
ইউক্রেনের নতুন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়িলেন্সকি। ছবি এএফপি।

ইউক্রেনের নতুন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়িলেন্সকি। ছবি এএফপি।

একটি টিভি সিরিজ়ে প্রেসিডেন্টের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। ‘সারভেন্ট অব দ্য পিপল’ নামে সেই সিরিজ় গোটা দেশে তুমুল জনপ্রিয়তা দিয়েছিল তাঁকে। দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষ তাঁকেই নেতা হিসেবে বেছে নিলেন। এ বার আর অভিনয় নয়। সত্যিকারের রাষ্ট্রনেতার ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। পেত্রো পোরোশেঙ্কোর জায়গায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের গদিতে বসতে চলেছেন ৪১ বছরের কৌতুকাভিনেতা ভোলোদিমির জ়িলেন্সকি।

গত কয়েক দিন ধরেই নানা সমীক্ষায় ইঙ্গিতটা মিলছিল। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেনে এ বার বদল আসতে চলেছে। সদ্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ তো ছিলই। সেই সঙ্গে দেশের পূর্ব ভাগে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল ভুগছিলেন দেশের সাধারণ মানুষ। তেরো হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই সেই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন। ফলে এ বারের নির্বাচনে পোরোশেঙ্কোর পতন প্রায় নিশ্চিতই ছিল। ভোট পরবর্তী বুথ ফেরত সমীক্ষাগুলোতেও দেখাচ্ছিল, পোরোশেঙ্কোর ফেরা কার্যত অসম্ভব। ফল বেরোনোর পরে দেখা গেল, ঠিক সেটাই হয়েছে। রাজনীতির ময়দানে একেবারে আনকোরা জ়িলেন্সকি-র প্রতিই আস্থা রাখতে চান দেশের মানুষ। বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন তিনি।

ফলপ্রকাশের পরে তাঁর প্রচার কেন্দ্রের সদর দফতরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ভাবী প্রেসিডেন্ট। দেশবাসীকে বললেন, ‘‘আমি আপনাদের নিরাশ করব না।’’ সঙ্গে সঙ্গে হাততালিতে ফেটে পড়ল ভিড়ে ঠাসা ঘরটা। সেই সঙ্গেই সোভিয়েত পরবর্তী দেশগুলির প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘আমাদের দেখুন। সব কিছুই সম্ভব।’’ জ়িলেন্সকি জেতার পর পরই রাষ্ট্রনেতাদের অভিনন্দন বার্তা পৌঁছে গিয়েছে তাঁর কাছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ থেকে শুরু করে পোল্যান্ডের আন্দ্রেই দুদা। ফোনে কথা বলেছেন জ়িলেন্সকির সঙ্গে। ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী জেরেমি হান্ট টুইটারে লিখেছেন, ‘‘এ বার আপনি সত্যিই ‘সারভেন্ট অব দ্য পিপল’-এর ভূমিকা নেবেন।’’ ন্যাটোর জেনারেল সেক্রেটারি জেনস স্টলটেনবার্গ, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ইউক্রেনের নতুন প্রেসিডেন্টের প্রতি সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন। কিয়েভের মার্কিন দূতাবাসও টুইট করে নতুন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছে। তবে সংযত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে পড়শি দেশ রাশিয়া। মস্কোর তরফে শুধু বলা হয়েছে, ‘এই ফলাফলই দেখিয়ে দেয় ইউক্রেনের মানুষ পরিবর্তন চাইছিলেন’।

কিয়েভের রাস্তাতেও তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। ৬৬ বছরের এক বৃদ্ধ পেনশনার যেমন বললেন, ‘‘ইউক্রেন গণতন্ত্রের পরীক্ষায় পাশ করল। আশা করব এতে দেশের অভিজাত শ্রেণি নয়, সাধারণ মানুষ ভাল থাকবে।’’ এক দিকে যেমন দেশের প্রবীণেরা রয়েছেন, উল্টো দিকে নবীন প্রজন্মও ভরসা রাখছে নতুন প্রেসিডেন্টের উপরেই। মার্তা নামে বছর ছাব্বিশের এক তরুণী বললেন, ‘‘মিথ্যে কথা শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম।’’ লারিসা নামে ১৮ বছরের এক ছাত্রী আবার বললেন, ‘‘এর থেকে খারাপ আর কিছু হওয়ার ছিল না। আশা করব উনি (জ়িলেন্সকি) আমাদের হতাশ করবেন না।’’ তবে এর ঠিক বিপরীত ছবিও আছে। এক পোরোশেঙ্কো সমর্থক আবার বললেন, ‘‘মানুষ পাগল হয়ে গিয়েছেন। রূপোলি পর্দা আর বাস্তব একেবারেই এক নয়।’’

বিদায়ী প্রেসিডেন্ট পোরোশেঙ্কোও মুখ খুলেছেন তাঁর ভরাডুবি নিয়ে। জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে বিদায় নিলেও সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে তিনি মোটেও যাচ্ছেন না। সেই সঙ্গেই বলেছেন, ‘‘ক্রেমলিন নিশ্চয়ই এই ফলে খুব খুশি।’’ রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার বার্তা দিয়েছেন জ়িলেন্সকি-ও। যুদ্ধ শেষ করতে পশ্চিমী দেশগুলির সাহায্যে শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Volodymyr Zelensky Ukraine President Comedian
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy