বছরের এই সময়ে গাছে কচি সবুজ পাতা, হরেক ফুল, ছোট বড় পাখির কোলাহল জানান দেয় বসন্তের আগমনী। এই সময়ে উত্তর জার্মানির হ্যানোভার শহরের বাসিন্দারা বেরিয়ে পড়েন প্রকৃতি উপভোগ করতে। কিন্তু এ বছর করোনার কবলে পড়ে সর্বত্র নিস্তব্ধ ও সুনসান।
জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষে পৌঁছে গেলেও মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজারের একটু বেশি। তার প্রধান কারণ, এ দেশে অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি এবং বিস্তৃত পরীক্ষা। প্রতি সপ্তাহে পাঁচ লক্ষ পরীক্ষা করার ফলে হাসপাতালে চাপ কম। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ইটালি ও ফ্রান্স থেকে গুরুতর রোগীদের এখানে উড়িয়ে আনা হচ্ছে। এখানকার ডাক্তারখানায় স্পষ্ট লেখা রয়েছে, কোনও রকম কাশি, সর্দি বা জ্বর থাকলে যেন কেউ না-আসেন। ফোনে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নেন। একটা হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। কারও যদি সন্দেহ হয় তিনি করোনা-আক্রান্ত, সেই নম্বরে ফোন করলে চিকিৎসাকর্মীরা বাড়িতে এসে পরীক্ষা করে যাবেন।
এখানে ঠিক ভারতের মতো লকডাউন হয়নি। শুধু জমায়েত নিষিদ্ধ হয়েছিল। দোকান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একই সঙ্গে সরকার থেকে বলা হয়েছিল, সুস্থ থাকতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁটুন বা দৌড়ন। তবে এক জায়গায় তিন জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল প্রথম থেকেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য খোলা সুপার মার্কেটগুলোয় দশ জন করে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। দোকানের ভিতরে কখনওই ৪০ জনের বেশি থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। বাইরে কোনও দাগ না-থাকলেও সবাই কিন্তু দু’মিটার দূরত্বে দাঁড়িয়ে শান্ত হয়ে অপেক্ষা করেন। দোকানের ভিতরে ট্রলির হাতল স্প্রে দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে সমানে। ক্যাশিয়ার একটি প্লাস্টিকের খাঁচার মধ্যে বসে সব হিসেব সামলাচ্ছেন। কিছু রেস্তরাঁ শুধুমাত্র খাবার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে একটা ছোট্ট কাচের জানলার মাধ্যমে। বাস-ট্রাম চলছে, কিন্তু অনেক কম।